Monday, September 8, 2014

পৃথিবীতে তাশরীফ নিয়েছেন লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, জামিউল আলক্বাব, সাইয়্যিদুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। এজন্য সর্বোচ্চ খুশি প্রকাশ করা ও সর্বাধিক খিদমতে বিলীন হওয়া উম্মতের জন্য ফরয।

আলহামদুলিল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! আল্লাহু আকবার!
সব ছলাত ও সালাম সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি। উনাদের উসীলা মুবারকে ১১ যিলক্বদ ১৪৩৫ হিজরী তারিখে পৃথিবীতে ঘটলো বেমেছাল রহমত, বরকতপূর্ণ, সাকীনা ও ফযীলতযুক্ত আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। কাফিরদের মুখে ছাই দিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বংশ লতিকায় সংযোজিত হলেন আরেকজন বেমেছাল ফযীলতযুক্ত ও বেমেছাল সম্মানিত আওলাদ। লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, উম্মু আবীহা, হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম ও নকশায়ে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম, কুতুবুল আলম, বাবুল ইলম, জামিউল আলক্বাব হাদিউল উমাম হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের কোলজুড়ে পৃথিবীতে রহমতস্বরূপ ১১ যিলক্বদ ১৪৩৫ হিজরী তারিখে রাত ১:২৫ মিনিটে মহিমান্বিত তাশরীফ রাখলেন লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুল উমাম, জামিউল আলক্বাব হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র ‘সূরা মারইয়াম শরীফ’ উনার ১৫ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার শানে ইরশাদ মুবারক ফরমান- “উনার প্রতি শান্তি সালাম অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক যেদিন তিনি দুনিয়ায় আগমন করেন অর্থাৎ পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন ও যেদিন তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন আবার যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
এসব পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানসহ কায়িনাতের সকলের জন্যই উপলব্ধি করা জরুরী যে, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদত শরীফ সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ই উম্মতের তথা কায়িনাতের জন্য বেমেছাল ফযীলত মুবারক, ইতমিনান মুবারক, রহমত মুবারক হাছিল এবং নিয়ামত মুবারক হাছিলের কারণ।
মূলত, এজন্য সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ যেমন ফযীলতযুক্ত তেমনি হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ অবগত হওয়া ও অনুধাবন করা ও প্রত্যেক সালিক-সালিকার জন্য বরকতযুক্ত।
প্রসঙ্গত তা উল্লেখ করা গেল:
 জাহিরী বর্ণনার অবকাশ নেই। বাতিনী বর্ণনা এখানে অনিবার্য। কুল-কায়িনাতের অধীর অপেক্ষা। হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার কোল মুবারক জুড়ে এক্ষণি আসবেন জান্নাতী মেহমান।
 কিন্তু মুরীদের মন। তারা যে জাহিরের সাথে এখনো সম্পর্কচ্যুত হয়নি। ওদিকে সবাই বড় বড় ডাক্তার। মহিলা ডাক্তার নিজেদের দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে রাজারবাগ শরীফ উনার মহান নিয়ামত আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালে ব্যবস্থা করে রেখেছেন সবকিছু। এমনকি অপারেশন থিয়েটার পর্যন্ত রেডি।
 কিন্তু মুজাদ্দিদে আ’যম, মুহইস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সুন্নতী অভিরুচি মুবারক। তিনি চাচ্ছিলেন পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুযায়ী সবকিছু হোক।
 অপরদিকে আকুল সব ডাক্তার-মুরীদের মন। জাহিরী দৃষ্টিতে চরম-পরম ক্ষণ। চূড়ান্ত মুহূর্ত। নইলে .......।
 কিন্তু তার বিপরীতে উম্মুল উমাম, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন, জামিউল আলক্বাব হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম স্বয়ং পাঠ করছেন অভূতপূর্ব মীলাদ শরীফ। সে এক অপূর্ব মুহূর্ত।
শুধু পবিত্র মীলাদ শরীফ নয়, যেন স্বয়ং রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাসহ হাজির। হাজির হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম।
হাজির হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম থেকে হযরত মরিয়ম আলাইহাস সালাম উনারা পর্যন্ত সবাই।
 তা’যীম-তাকরীম উনার সাথে অপেক্ষা করছেন সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা, সব তরীক্বার ইমাম থেকে সমস্ত ফিক্বাহর ইমাম-মুজতাহিদ তথা আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা।
 ওদিকে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার গভীরতায় যেন স্বয়ং দৃষ্টি দিচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
 দৃষ্টি দিচ্ছেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।
 শুভাগমনের জন্য শুভদৃষ্টিতে শুভাগমন হলো শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার।
 কিন্তু স্বাভাবিকভাবে নয়; একবারে অস্বাভাবিক সম্মানের সাথে আগমন করলেন এক মুহূর্তের মধ্য।
 ধীরে ধীরে নয়, প্রচলিত পন্থায় নয়, প্রচলিতভাবে নয়- সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমভাবে। একবারে মুহূর্তের তরে পরিপূর্ণভাবে। তখনো চলছিলো পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মনোমুগ্ধকর অভূতপূর্ব শ্রুতিমালা। এরই মাঝে হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বেহেশতী পবিত্রতায় সসম্মানে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র কোল মুবারক উনার মধ্যে উঠলেন।
 মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-
 ঠিক সেই খুশি,
 ঠিক সেই আবেগ,
 ঠিক সেই মুহব্বত,
 ঠিক সেই সম্মান,
 ঠিক সেই আদর,
 নিয়ে উনাকে কোলে জড়িয়ে নিলেন;
 যেমনটি নিয়েছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি- হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ও হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের।
 নিজে উঠে আযান মুবারক দিলেন। মুবারক আঙ্গুলে মধু খেয়ে অবশিষ্ট মধু উনাকে চুষতে দিলেন। উনি মাদারযাদ ওলী। যেন এক লহমার চোষাতেই হাছিল করে নিলেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার হাদিয়া করা সব পবিত্র ইলমে মা’রিফাত, ইলমে তরীক্বত, ইলমে ফিক্বাহ, ইলমে হাক্বীক্বত। সুবহানাল্লাহ!
 এদিকে সারিবদ্ধভাবে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা উনাকে বলছেন, আহলান সাহলান। কুল-কায়িনাত নতুন রহমতের আভায় সজীব হয়ে খুশি প্রকাশ করছেন। মুরীদ-মুতাকিদগণ খুশির যত ভাষা আছে তা ক্বাছীদা শরীফ উনার মাধ্যমে প্রকাশ করছে। সম্মানের যত বিশেষণ আছে তা যুক্ত করছে। শ্রদ্ধার যত উঁচু আসন আছে তা পেতে দিচ্ছে।
তবে আমভাবে সবাই বলছেন, প্রকাশ করছেন যে, সাইয়্যিদুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার আগমনে আজ আমরা ভীষণ খুশি।
 কিন্তু এ যে আপ্ত কথা। এ তো খুশির শুরু। তিনি সেই মহান সম্মানিতা; যাঁরা ধারণ করবেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বাতিনী নিয়ামত মুবারক।
উনার উসীলায় যমীনে উনাদের বিলাদত শরীফ থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যমীনে আলাদাভাবে বর্ষিত হবে আরো রহমত মুবারক, আরো বরকত মুবারক।
তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র রহমত-বরকত মুবারক ধারণ করতে আলাদা যোগ্যতা মুবারক নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন।
উনার উসীলায় যমীনবাসী পাবে আরো রহমত-বরকত মুবারক। এটা যেন ধরণীর বুকে পবিত্র  মি’রাজ শরীফ উনার ন্যায় আলাদা রহমত মুবারক।
খোশ আমদেদ!
খোশ আমদেদ!!
খোশ আমদেদ!!!
হে সাইয়্যিদুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
হে অব্যক্ত সম্মানিত মেহমান!
আমাদের শুধু হৃদয় নয়;
বরং প্রতিটি লোমকূপ,
প্রতিটি রক্তকণা,
অস্থি-মজ্জা থেকে গ্রহণ করুন-
আমাদের শ্রদ্ধা,
মুহব্বত,
সম্মান,
নিবেদনের
শেষ নিংড়ানো আর্তি।
আমরা অক্ষম, অথর্ব ও অবুঝ হলেও বিন্দু পরিমাণ উপলব্ধি করছি যে- সউদী ইহুদী ওহাবী মুনাফিক শাসক গোষ্ঠী মহাসম্মানিত রওযা শরীফ স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়ে পৃথিবীর ৩৭০ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে যে গভীর আঘাত দিয়েছে তারই বিপরীতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম ও হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলায় মু’মিনদের ঈমান ও জান-মালের তথা দুনিয়া ও আখিরাতের সার্বিক নিরাপত্তা ও রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন আপনাকে। আপনার আগমনের পূর্বেই ঘটলো পবিত্র রওযা শরীফ স্থানান্তরের ঘোষণা এবং সউদী ওহাবী মুনাফিক শাসকদের মুসলমান ছদ্মবেশের উন্মোচন তথা ইহুদী হিসেবে জ্ঞাপন; যেমনটি ঘটেছিল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ মুবারক উনার পূর্বে আবরাহার পতন কাহিনী। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ আপনি পরিপূর্ণভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
আমাদের ক্ষমা করুন, কবুল করুন, মদদ করুন, খাছ ফায়িজে ইত্তেহাদী দান করুন এবং বরদাশত করার তাওফীক দান করুন।

(আমীন, ছুম্মা আমীন)

No comments:

Post a Comment