সেই দিন এক ছোট ভাই এসে বলল: “জানেন ভাইয়া! এক (বিধর্মী) বিজ্ঞানী আবিষ্কার করছে, ‘আল্লাহ’ শব্দটি বার বার উচ্চারণের মাধ্যমে মানুষ অন্তর সবচেয়ে বেশি শান্ত হয়, কারণ এই শব্দটি’র মধ্যে এমন এক শব্দধ্বনি তৈরী হয়, যা আর কোন শব্দের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় না।”
আমি সেই ছোট ভাইয়ের উত্তরে বললাম, দেখো! আমি সেই বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের কথা শুনে মোটেও আশ্চর্য হইনি। কারণ পবিত্র কুরআন পাকের সূরা রাদ’র ২৮ নং আয়াতেই বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ’র জিকির দ্বারা অন্তর প্রশান্ত হয়”। তোমরা সেই কথিত বিজ্ঞানী পবিত্র কুরআনের আয়াত শরীফ নিজের মত করে বলে এখন ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছে, যেমনটা লিও টলস্টয় সারা জীবন বড় বড় কথা বলত, কিন্তু তার পকেটে থাকত ‘দ্য সেইং অফ প্রোফেট মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’।
কিন্তু আমরা মুসলমানরা যেহেতু গাফেল, নিজেরা কুরআন হাদীস পড়ি না, তাই কাফিরদের মুখে সেই সব কথা শুনে আমরা ভাবি, আহারে কাফিররা কত বড় জ্ঞান-বিজ্ঞানী!!
ঠিক একইভাবে ‘১লা মে’ আসলে সবাই বলে থাকে, “১লা মে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, নির্ধারিত হয়েছে ৮ ঘণ্টা ডিউটি”। কিন্তু আমি বলব, ১৮৮৬ সালে মার্কিন শহর শিকাগোতে ৮ ঘণ্টা নির্ধারিত হয়নি। একজন ব্যক্তি যে ৮ ঘণ্টা ডিউটি করবে এটা তো স্বয়ং নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই নিজেই নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে গেছেন, বলে গেছেন।
হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে: রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিনের সময়কে (২৪ ঘণ্টাকে) সমান তিন ভাগে ভাগ (৮ ঘণ্টা করে) করতেন। একভাগ (৮ ঘণ্টা) বাইরের কাজের জন্য, এক ভাগ (৮ ঘণ্টা) ইবাদত বন্দেগীর জন্য এবং একভাগ (৮ ঘণ্টা) পরিবার পরিজনের জন্য।
(সূত্র: উসওয়ায়ে রাসূলে আকরাম:১০৪, শামায়িলে তিরমিযী, পৃ: ২২)
তাহলে আজ থেকে ১৪শ’ বছর আগেই তো এক জন ব্যক্তি সাধারণত ৮ ঘণ্টা কাজ করবে তা নিদ্দির্ষ্ট করা হয়েছে, এখানে আমেরিকার শিকাগোর ঘটনার থেকে শিক্ষা নেয়ার কি গুরুত্ব থাকতে পারে। একজন মুসলমান তো নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে, কাফিরদের থেকে নয়। বরং কাফিররাই তো ইসলাম থেকে মূল কনসেপ্টটা ধার নিয়ে এখন ক্রেডিট নিতে যাচ্ছে।
তাই কোন মুসলমানরা যদি এই পহেলা মে পালন করে তবে তার দ্বারা উল্টো প্রতিয়মান হয়, ইসলাম মনে হয় অপূর্ণ ধর্ম, সেখানে শ্রমিকদের কোন অধিকার বলে কিছু নেই’। (নাউজুবিল্লাহ)
মূলত: একজন মুসলমান কখনই এ মে দিবস পালন করতে পারে না, কারণ মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন, “যে বেক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন (নিয়ম-নীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (সূরা আল ইমরান/৮৫)
No comments:
Post a Comment