সমস্ত মাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
মাস অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম হচ্ছে
মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ। গতকাল ইয়াওমুছ ছুলাছা দিবাগত সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকাসহ
দেশের কক্সবাজার,
খাগড়াছড়ি. চট্টগ্রাম, ফেনী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পটুয়াখালী, রাজশাহী, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, বরিশাল, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, বি-বাড়িয়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, মেহেরপুর, ভোলাহাট এসব
অঞ্চলের প্রতিনিধিরা মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর পরিবেশন
করেছেন। অর্থাৎ আজ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার পহেলা রবীউল আউওয়াল শরীফ। সে অনুযায়ী আগামী
৬ ছামিন ১৩৮২ শামসী (৪ জানুয়ারি ২০১৫ ঈসায়ী), ইয়াওমুল আহাদ বা রোববার পালিত হবে
কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে
ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
উল্লেখ্য, ১৪৩৬ হিজরী
সনের মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে
সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য গতকাল ইয়াওমুছ ছুলাছা দিবাগত সন্ধ্যায় ‘আনজুমানে
আল বাইয়্যিনাত রুইয়াতে হিলাল মজলিস’ উনার এক পর্যালোচনা সভা পবিত্র রাজারবাগ
শরীফ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
তাই আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত
রুইয়াতে হিলাল মজলিস উনার মহাসম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে
আ’যম ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি চাঁদ
দেখার সংবাদ আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে আজ ২৫ সাবি’ ১৩৮২ শামসী (২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ঈসায়ী), ইয়াওমুল আরবিয়া
বা বুধবার ১৪৩৬ হিজরী সনের মহাপবিত্র ও মহা বরকতময় রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার পহেলা
তারিখ মুবারক ঘোষণা করেন।
‘পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ’ উনার ৫৭ ও
৫৮ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
“হে মানুষেরা! অবশ্যই তোমাদের কাছে
মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে এসেছেন উনার প্রিয়তম রাসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যিনি তোমাদের জন্য সুমহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের
ব্যধিসমূহের আরোগ্যদানকারী এবং মু’মিনদের জন্য হিদায়েত ও রহমতদানকারী।
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ
পাক তিনি ফযল-করম এবং রহমত হিসেবে উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে হাদিয়াস্বরূপ দিয়েছেন- সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। নিশ্চয়ই এ খুশি করাটা
তাদের সঞ্চিত সমস্ত নেক আমল হতে উত্তম।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস্ সালামগণ উনাদের মুবারক আগমন ও বিদায় এবং বিশেষ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দিন, তারিখ, বার এবং মাস
উম্মাহর জন্য ঈদ বা খুশি প্রকাশের মহান উপলক্ষের অন্তর্ভুক্ত।
কাজেই মহান আল্লাহ পাক জাল্লা
শানুহু তিনি আমাদের জন্য তথা সারা আলমের জন্য উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘উসীলায়ে কুবরা’ তথা সবচেয়ে
বড় উসীলা বানিয়েছেন। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সারা আলমের জন্য রহমতুল্লিল আলামীন হিসেবে প্রেরণ করেছেন।
মূলত, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিলাদতী শান মুবারক
এবং উনার সুমহান বিছালী শান মুবারকও সারা আলমের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত এবং
ফযল ও করম স্বরূপ। তাই জিন-ইনসানসহ কুল-কায়িনাতের সকলের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে
ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন
করা এবং এ সুমহান উপলক্ষে সাধ্যমতো খরচ করা ফরয।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই মহাপবিত্র
মাসে আরো অনেকগুলো সম্মানিত ও ঐতিহাসিক দিন রয়েছে।
যেমন পহেলা রবীউল আউওয়াল শরীফ
হলো ঐতিহাসিক হিজরত মুবারক দিবস।
পবিত্র ১০ই রবীউল আউওয়াল শরীফ
হলো উম্মু রসূলিনা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র
বিছাল শরীফ দিবস ও ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত
ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতম বিছাল শরীফ দিবস।
পবিত্র ৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ
হলো- সাইয়্যিদাতুন নিসা,
উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম বিলাদত শরীফ দিবস।
পবিত্র ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ
হলো- মুজাদ্দিদে আ’যম, ছহিবে সুলত্বানিন নাছীর, ইমামুল উমাম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার
পবিত্রতম বিলাদত শরীফ দিবস।
পবিত্র ১৩ই রবীউল আউওয়াল শরীফ
হলো- ওলীয়ে মাদারযাদ,
ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত সাইয়্যিদুনা হযরত দাদাজান ক্বিবলা আলাইহিস
সালাম উনার পবিত্রতম বিছাল শরীফ দিবস।
ঐতিহাসিক ও এই মহাসম্মানিত
দিবসসমূহ মহাসমারোহে পালনের জন্য রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার মাঝে ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে।
সমস্ত মুসলিম উম্মাহ’রও দায়িত্ব-কর্তব্য হলো এ সকল গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দিবস সমূহ পালন করা। মহান আল্লাহ
পাক তিনি আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।
---(দৈনিক আল ইহসান হতে
সংকলিত)
No comments:
Post a Comment