Sunday, May 17, 2015

সম্মানিত পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার বিশেষ কিছু ইবরত-নছীহত মুবারক


হালাল উনাকে হারাম আর হারামকে হালালকারীদের প্রতি সতর্কবাণী:
          সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত পবিত্র মিরাজ শরীফ উনার মধ্যে প্রথম আসমানে গিয়ে মহান বারে ইলাহী আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে অসংখ্য অগণিত বিষয় পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে বেশুমার দয়া ইহসানে তিনি মুবারক পরিদর্শনকৃত বিষয়গুলি হতে জরুরী অনেক কিছু উম্মাহকে নছীহতস্বরূপ বর্ণনা করেন।
যেমন-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছুদূর গিয়ে দেখতে পেলেন একটি খাঞ্চা রাখা আছে, তাতে উত্তম সুঘ্রাণময় ভাজা গোশত রয়েছে। আরেকদিকে রয়েছে অন্য একটি খাঞ্চা। তাতে আছে পচা দুর্গন্ধযুক্ত ভাজা গোশত। এমন কতকগুলো লোকদের দেখলেন যারা উত্তম ভালো গোশতের কাছে না যেয়ে ওই পচা দুর্গন্ধময় গোশত খাচ্ছে। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় জানা থাকা সত্ত্বেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে নছীহত করার লক্ষ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, এ লোকগুলো কারা? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে বললেন, এরা হলো মুসলমান নামধারী ওই সব লোক, যারা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করতো এবং হারামের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করতো। নাউযুবিাল্লাহ!
          বর্তমান বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই নামধারী মালানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, হাদী দাবিদার তথা উলামায়ে সূর দল এবং মূর্খ জাহিল শাসকশ্রেণী তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ফরয ও হালাল বিষয়গুলো যেমন- মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ পালন, পবিত্র শবে বরাত, পবিত্র শবে ক্বদর, পবিত্র মিরাজ, পবিত্র মীলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দিচ্ছে। আর খেলাধুলা, গান-বাজনা, ছবি, বেপর্দা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদি হারাম বিষয়গুলোকে হালাল ফতওয়া দিচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!।
          মূলত, এদেরকেই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পচা দুর্গন্ধময় গোশত খেতে দেখেছেন। নাউযুবিল্লাহ!
          তাই আমাদের প্রত্যেককেই হালাল ও হারাম বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। যামানার মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বাইয়াত হয়ে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে হালাল-হারাম শিখতে হবে।
শরয়ী পর্দাহীন ও ব্যভীচারীদের
প্রতি সতর্কবাণী:
          সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো কিছুদূর গিয়ে দেখতে পান, কতগুলো স্ত্রীলোক নিজেদের বুকের দ্বারা লটকানো রয়েছে এবং হায় হায় করছে। কঠিন এক অবস্থা। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় জানা থাকা সত্ত্বেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে নছীহত করার লক্ষ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, এরা কারা? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে বললেন, এরা হচ্ছে মুসলিমা নামধারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিনী স্ত্রীলোক তারা। নাউযুবিল্লাহ।
          তাই প্রত্যেক মহিলা ও পুরুষদের দায়িত্ব-কর্তব্য তথা ফরয হলো- শরয়ী পর্দা করা। ব্যভিচার তো দূরের কথা কারো দ্বারা যেন কোনোক্রমেই পর্দার খিলাফ কোনো কিছু না হয় সে বিষয়ে প্রত্যেককে শক্তভাবে সতর্ক থাকা। যামানার মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বাইয়াত হয়ে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে শরয়ী পর্দা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানার্জন করে আমল করতে হবে।
 সুদ গ্রহণকারীদের প্রতি সতর্কবাণী:
          সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আর একটু অগ্রসর হয়ে দেখেন, কতকগুলো লোকের পেট বড় বড় ঘরের মতো। যখন উঠতে চাচ্ছে তখন পড়ে যাচ্ছে এবং বারবার বলছে, ‘হে আল্লাহ পাক! ক্বিয়ামত যেন সংঘটিত না হয়। কতগুলি জন্তু দ্বারা তারা পদদলিত হচ্ছে। আর তারা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবারে হা-হুঁতাশ করছে। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় জানা থাকা সত্ত্বেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে নছীহত করার লক্ষ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, এরা কারা? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে বললেন, এরা হচ্ছে মুসলমান নামধারী ওইসব লোক, যারা সুদ খেতো। নাউযুবিল্লাহ।
          সুদ মারাত্মক জঘন্য গুনাহ। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা সুদ খায় ক্বিয়ামতের দিন তারা ঠিক সেই ব্যক্তির ন্যায় উঠবে, যাদেরকে শয়তান পাগল করে রেখেছে।
          তাই প্রত্যেক মহিলা ও পুরুষের দায়িত্ব-কর্তব্য তথা ফরয হলো- সুদ থেকে বেঁচে থাকা। যামানার মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বাইয়াত হয়ে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে সুদসহ সকল হারাম বিষয় সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানার্জন করে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
 গীবতকারীদের প্রতি সতর্কবাণী:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো কিছুদূর গিয়ে দেখেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা কতকগুলি লোকের পার্শ্বদেশের গোশত কেটে কেটে তাদেরকে খাওয়াচ্ছেন। আর তাদেরকে উনারা বলছেন, ‘যেমন তোমরা তোমাদের জীবদ্দশায় তোমাদের ভাইদের গোশত খেতে; তেমনই এখনো খেতে থাকো। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় জানা থাকা সত্ত্বেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে নছীহত করার লক্ষ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, হে জিবরীল আলাইহিস সালাম! এরা কারা। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে বললেন, ‘এরা হচ্ছে মুসলমান নামধারী ওইসব লোক, যারা অপরের গীবত করতো অর্থাৎ দোষ অন্বেষণ ও বর্ণনা করে বেড়াতো। নাউযুবিল্লাহ।
          গীবত মারাত্মক জঘন্য গুনাহ। আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতোই অপরাধ গীবত করা।
          তাই প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলার দায়িত্ব-কর্তব্য তথা ফরয হলো- গীবত থেকে বেঁচে থাকা। যামানার মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বাইয়াত হয়ে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে গীবতসহ সকল হারাম বিষয় সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানার্জন করে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
ইয়াতীম উনাদের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাসকারীদের প্রতি সতর্কবাণী:
          সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছুদূর গিয়ে দেখতে পেলেন- কতগুলো লোকের ঠোঁট উটের মতো। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তাদের মুখ ফেঁড়ে ফেঁড়ে ওই গোশত তাদের মুখের মধ্যে ভরে দিচ্ছেন, যা তাদের নিম্ন পথ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তারা ভীষণ চিৎকার করছে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে মিনতি করছে। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল বিষয় জানা থাকা সত্ত্বেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে নছীহত করার লক্ষ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, এরা কারা? হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে বললেন, এরা মুসলমান নামধারী ওইসব লোক, যারা ইয়াতীমদের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাস করে; তারা নিজেদের পেটের মধ্যে আগুন ভরে দিচ্ছে এবং অবশ্য অবশ্যই তারা জাহান্নামের জ্বলন্ত অগ্নির মধ্যে প্রবেশ করবে। নাউযুবিল্লাহ্।

          তাই অন্যায়ভাবে কারো মাল বিশেষ করে ইয়াতীম উনাদের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাস করা থেকে আমাদের প্রত্যেকেরই বিরত থাকতে হবে। তাই প্রত্যেকের দায়িত্ব-কর্তব্য তথা ফরয হলো- যামানার মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে বাইয়াত হয়ে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে অপরের হক্ব সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানার্জন করতে হবে।

No comments:

Post a Comment