(আজ রোববার, সুমহান মহাপবিত্র
১১ জুমাদাল উলা শরীফ;
২১ ফেব্রুয়ারি-২০১৬):
মুসলিম সমাজ এখন রাজকন্যা, মৎস্যকন্যা, সূর্যকন্যা, পুতুলকন্যা, পাহাড়ি কন্যা, অশ্রুকন্যা, স্বর্ণকন্যা
ইত্যাদি অনেক কন্যার কথা শুনছে। মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে। বলাবলি হচ্ছে। এমনকি তাদের
ভক্তও তৈরি হচ্ছে। অনুসরণ-অনুকরণের চেষ্টাও চলছে। বিশেষতঃ মুসলমান শিশুরা শুরুতেই রাজকন্যার
কথা শুনে। রাজকন্যা সর্ম্পকে শ্রদ্ধা ও সম্মান মিশ্রিত একটা ধারণা পায়। কিন্তু মুসলমানদের
পবিত্র ঈমানের যিনি মূল,
যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসলীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিনি সুমহান বানাত (কন্যা) হযরত বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম উনার সর্ম্পকে
সম্পূর্ণই বেখবর! নাউযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি
এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি
বিশ্বাস স্থাপন করা যেভাবে ঈমান অনুররূপভাবে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহমুস সালাম উনাদের
প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারকও হচ্ছে পবিত্র ঈমান। সুতরাং
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও উনাদের মুহব্বত
মুবারক হাছিল করতে না পারলে কোনো মুসলমান ঈমানদার হতে পারে না।
কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ
পাক উনার কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে পবিত্র ঈমান দাখিল হবে
না (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না), যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ
পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর)
তাছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
“(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি জানিয়ে
দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। (আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে
দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়।) তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী
হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে
মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা,
উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মিছাল হচ্ছেন, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিদ‘আতুম মির
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ,
উম্মু আবীহা, আছ ছালিছা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে
কুলছূম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
১১ জুমাদাল ঊলা শরীফ উনার মহিমান্বিত, মহা শান-মান, পবিত্রতাযুক্ত
মহাসম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ কারার সুমহান দিবস। সুবহানাল্লাহ! (যা এবছরের
জন্য আজ রোববার, ২৩ তাসি’-১৩৮৩শামসী, ২১ ফেব্রুয়ারি-২০১৬ঈসায়ী)
মশহূর ও ছহীহ্ মতে, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৪ জন সম্মানিত আবনা ও
৪ জন সম্মানিতা বানাত আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের
মধ্যে তৃতীয়া এবং সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে ষষ্ঠ।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছালিছা
আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের ৫ বছর পূর্বে
১১ জুমাদাল ঊলা শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন দুনিয়াবী
জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩৫ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল
জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানীয়া আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক
প্রকাশের পরে তৃতীয় হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল
মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল
জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম উনার খিদমত মুবারকে সম্পৃক্ত
হন। অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয়।
সাইয়্যিদাতুনা আছ ছালিছা আলাইহাস
সালাম উনাকে স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূর হিসেবে অভিহিত করেছেন। যাঁর শান-মান
ও ব্যাখ্যা বেমেছাল ও বর্ণাতীত। তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত
শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,
বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছা
আলাইহাস সালাম তিনি আসমান-যমীনবাসীদের নিরাপত্তা দানকারী। বিশ্ববাসী মুসলমানরা যদি
উনার শান-মান বর্ণনা করতো,
ছানা-ছিফত করতো, তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার যথাযথ আঞ্জাম
দিতো তাহলে বিশ্বব্যাপী যেসব দুর্যোগ, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, আগুন, ভূমিধস, ইত্যাদি যেসব
আযাব-গযব রয়েছে তা থেকে মুসলমানরা উনার উসীলায় নিরাপত্তা পেতো। সুবহানাল্লাহ!
কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তারকাসমূহ
আসমানবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী আর আমার বংশধর বা আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা
হচ্ছেন যমীনবাসীদের জন্য নিরাপত্তা দানকারী। সুতরাং যখন আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ বা
হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনারা (দুনিয়া থেকে) চলে যাবেন অর্থাৎ বিদায় গ্রহণ
করবেন, তখন দুনিয়াবাসী সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ, হাশিয়ায়ে মিশকাত শরীফ)
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ ও পবিত্র বিছাল শরীফ দিবস এবং উনার বেমেছাল শান-মান মুবারক, মর্যাদা মুবারক, ফাযায়িল-ফযীলত
মুবারক সম্পর্কে মুসলিম উম্মাহ চরম বেখবর। অথচ উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ
করার এবং পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং
উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আখাচ্ছুল
খাছভাবে রহমত মুবারক,
বরকত মুবারক, সাকীনা মুবারক ও ইহসান মুবারক যমীনে
নাযিল করে থাকেন। যা পূর্বের এবং পরের দিনগুলো থেকে লক্ষ-কোটিগুণ বেশি আলাদা। যা মূলত
ভাষায় বর্ণনার অযোগ্য। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, সাইয়্যিদাতু
নিসায়িল আলামীন,
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আছ ছালিছা আলাইহাস সালাম তিনি যেরূপ নিরাপত্তার কারণ অনুরূপ আসমান-যমীনবাসীর প্রতি
অবিরত ধারায় রহমত-বরকত প্রাপ্তিরও কারণ।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ
পাক তিনি আমাদের সবাইকে উনাদের নেক ছোহবত মুবারক, নিয়ামত মুবারক ও নেক সন্তুষ্টি মুবারক
নছীব করুন। (আমীন)
No comments:
Post a Comment