ওহবীরা
ব্রিটিশ গুপ্তচর হেম্পারের ‘ব্রেন চাইল্ড’ বা ‘বশংবদ’ হওয়ায় তারাও ইহুদী-খ্রিস্টান
ও কাফির-মুশরিকদের মতো দ্বীন ইসলাম তথা প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমন। ব্রিটিশ গুপ্তচর হেম্পারের
‘বশংবদ’ ওহবীরা কখনোই প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত, শান-মান, বড়ত্ব
বর্ণনা করা সহ্য করতে পারে না। ওহাবী রাজা-বাদশাহরা ব্রিটিশদের সহায়তায় আরবের
ক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে পবিত্র দ্বীন ইসলামে উনার ছদ্মাবরণে হেম্পারের তথা
কাফিরদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে। সউদী ওহাবীরা হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় স্মৃতির মাঝেও শিরক ও পূজার গন্ধ খুঁজে পায়
এবং সে গন্ধ সবখানে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সউদী ওহাবী শাসক ও
ওহাবী মাওলানারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
বরকতময় স্মৃতিগুলোকে শ্রদ্ধা-সম্মান করাকে শিরক ও পূজার সাথে তুলনা করে সাধারণ মুসলমানদেরক বিভ্রান্ত করছে।
সেজন্য পবিত্র মক্কা শরীফ শহরের মসজিদুল হারাম শরীফ এবং পবিত্র মদিনা শরীফ শহরের মসজিদে নববী শরীফ উনাদের মধ্যে অবস্থিত সম্মানিত ইসলামী ঐতিহ্য ও বরকতময় নির্দশনসমূহ ধ্বংস করার কাজ শুরু করেছে সউদী আরবের গুমরাহ ওহাবী সরকার।
পবিত্র মসজিদ শরীফদ্বয়
এলাকায় কয়েক বিলিয়ন পাউন্ডের
(ব্রিটিশ মুদ্রা) বিতর্কিত সম্প্রসারণের কাজ করতে গিয়ে সম্মানিত ইসলামী ঐতিহ্য ও বরকতময় নিদর্শন ধ্বংস করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পবিত্র মসজিদে হারাম শরীফ হতে প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ রওয়ানা দেয়ার মুবারক স্থানটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে কাট্টা ওহাবী সরকার এবং উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার বরকতময় স্থানটিও নিশ্চিহ্ন করে দিতে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
লন্ডন থেকে প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ইনডিপেনডেন্ট’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী তথ্য এ জানা গেছে। সম্প্রসারণ কাজের ছবি পাওয়ার পর গত ১৫ মারচ ২০১৩ ঈসায়ী, শুক্রবার পত্রিকাটি “দ্য ফটোস সৌদি আরাবিয়া ডাজন’ট, ওয়ান্ট সিন- অ্যান্ড প্রুফ ইসলাম’স মোস্ট হলি রেলিকস আর বিং ডিমলিশড ইন মক্কা” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ইনডিপেনডেন্টের হাতে আসা ছবিতে দেখা গেছে, শ্রমিকরা ড্রিল মেশিন ও যান্ত্রিক খননযন্ত্র দিয়ে কিভাবে পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার পূর্বপাশে উসমানীয় ও আব্বাসীয় শাসক
উনাদের উদ্যোগে ও পৃষ্ঠপোষকতায় সংরক্ষিত সম্মানিত ইসলামী ঐতিহ্য ও বরকতময় নিদর্শন মুবারকসমূহ ধ্বংসের কাজ শুরু করেছে।
মুসলমানদের পবিত্র কাবা শরীফ থাকার কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ হিসেবে (গ্র্যান্ড মসজিদ) পরিচিত পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ ভবনটি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পবিত্রতম ও রহমত-বরকতময় নিদর্শন মুবারক। অনেক সংস্কার কাজের পরও পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ-এ গত কয়েকশ বছরের পুরনো কয়েকটি চিহ্ন বা নিদর্শন অবশিষ্ট থেকে যায়। পবিত্র কাবা শরীফ উনাকে ঘিরে মারবেল পাথরে নির্মিত মেঝের ঠিক পরপরই পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার চত্বরে এসব স্মৃতিচিহ্ন বা নিদর্শনসমূহের অবস্থান। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার এই বরকতময় ঐতিহ্য ও নির্দশন ধ্বংসের ছবিগুলো তোলা হয়।
উসমানীয় ও আব্বাসীয় শাসনামলে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার পবিত্র মসজিদুল হারাম উনার অনেক স্তম্ভে জটিল কিছু আরবীয় ক্যালিওগ্রাফি খোদাই করা হয়েছিল। যাতে রাসুল পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের নাম মুবারক এবং রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার জীবনী মুবারক-এর গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তগুলোর কথা উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে এমন একটি স্তম্ভ এরই মধ্যে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যেখান থেকে বুরাকে চড়ে প্রিয়নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একই রাত মুবারকের মধ্যে বাইতুল মুকাদদাস শরীফ ও আরশে মুয়াল্লা শরীফ গমন করে মহান আল্লাহ পাক উনার আনুষ্ঠানিক দীদার মুবারক-এর পর ফিরে এসেছিলেন।
প্রতিবছর হজে ‘জোড়া পবিত্র নগরী’ পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদিনা শরীফ-এ হাজীদের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব হাজীদের স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা করার অজুহাতে সউদী ওহাবী কর্তৃপক্ষ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন
করতে গিয়ে এসব বরকতময় স্মৃতিচিহ্ন বা নিদর্শন ধ্বংস করছে। মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে ধারণক্ষমতা বাড়ানোর প্রকল্পে শত শত কোটি পাউন্ড ঢালছে দেশটির ওহাবী সরকার। সউদী
ওহাবী বাদশাহ আবদুল্লাহ
এরই মধ্যে এই সম্প্রসারণকাজের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ওহাবী মাওলানা ও মসজিদুল হারামের ইমাম আবদুর রহমান আল-সুদাইসকে নিয়োগ দিয়েছে। আর এ সম্প্রসারণকাজের দায়িত্ব পেয়েছে দেশটির অন্যতম বৃহত্তম
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘বিন লাদেন গ্রুপ’। (বিন লাদেন গ্রুপ হলো- ওহাবী মতবাদ প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক
সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের প্রতিষ্ঠান।)
এই সম্প্রসারণ কাজ করতে গিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পবিত্র-বরকতময় প্রত্নতাত্তি্বক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্বংস সাধন করায় ব্যাপক হারে না হলেও মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। বোদ্ধা ব্যক্তিরা সউদী
ওহাবী শাসকদের ইসলামের পবিত্র
দুটি শহরে ইসলামের প্রত্নতাত্তি্বক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি অনৈতিকভাবে অসম্মান প্রদর্শন
করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এই ওহাবী শাসকরা গত এক দশকে পবিত্র মক্কা শরীফ নগরীকে ইউরোপ-আমেরিকার অনুকরণে একটি আকাশচুম্বি মহানগরে রূপান্তর করেছে। এর মধ্যে পবিত্র নগরটি ইউরোপ-আমেরিকার মডেলের
অসংখ্য শপিং মল, বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ও পাঁচ তারকা হোটেলে ভরে গেছে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক সংস্থা গালফ ইনস্টিটিউট একটি গবেষণায় দেখিয়েছে, আধুনিকায়নের নামে মক্কা শরীফ-এ হাজার বছরের পুরনো ৯৫ শতাংশ ভবন কেবল গত দুই দশকেই ওহাবীরা ধ্বংস করেছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সূচনাকালের নিদর্শনসহ কয়েক ডজন ঐতিহাসিক স্থান এরই মধ্যে মিশিয়ে দিয়েছে ওহাবীরা। ঐতিহাসিক নিদর্শন রক্ষায় কর্তৃপক্ষকে প্রত্নতাত্তি্বক ও পণ্ডিতদের
অব্যাহত তাগাদার মধ্যেই এই ধ্বংসযজ্ঞও বেড়েই চলেছে।
এছাড়া সম্প্রসারণকাজের ধারাবাহিকতায় ‘বাইত-আল-মাউলিদ’ বা প্রিয়নবী নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার
বরকতময় স্থানটিও নিশ্চিহ্ন করে দিতে যাচ্ছে ওহাবীরা। ওহাবী মাওলানারা পবিত্র দ্বীন ইসলামের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণের ঘোর বিরোধী। ওহাবী মাওলানাদের দাবি, প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সম্পর্কিত নিদর্শনগুলো মক্কায় থাকার দরকার নেই। (নাউযুবিল্লাহ!) প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমন, শয়তানের শিং বিন ওহাব
নজদীর বশংবদ, গুমরাহ সউদী ওহাবী সরকারের
দাবি, “তারা বিশ্বনবী নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগের বা
যামানার স্মারক স্থাপনা বা স্মৃতিচিহ্নগুলো ধ্বংস
করে সেগুলোর পূজা বন্ধের চেষ্টা করছে।” (নাউযুবিল্লাহ!)
ইসলামিক হেরিটেজ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ইরফান আল-আলাভি ছবিগুলো
দেখার পর বলেন, সম্মানিত
মসজিদুল হারামের উসমানীয় ও আব্বাসীয়
স্তম্ভগুলো অপসারণের ঘটনাটি ইসলামী ঐতিহ্য সম্পর্কে ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্ম অনীহা প্রদর্শন করতে পারে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কারণ মসজিদটির নির্দিষ্ট কিছু এলাকার স্তম্ভের দারুণ তাৎপর্য রয়েছে, বিশেষ করে যেখানে প্রিয়নবী নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তিনি বসতেন এবং নামায আদায় করতেন। এসব ঐতিহাসিক রেকর্ড মুছে ফেলা হচ্ছে। একজন নতুন মুসলমান কখনই এমন কোনো সূত্র খুঁজে পাবে না, যাতে এসব জায়গা আবার খুঁজে বের করা যায়। তিনি বলেন, পবিত্র
মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদিনা শরীফ সম্প্রসারণ করতে তো অনেক উপায়ই আছে, যাতে ঐতিহাসিক বরকতময় স্থানও রক্ষা পায়।
উল্লেখ্য, বিশ্বনবী নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগে নির্মিত কয়েকটি
বাড়ি ও মসজিদ এরই মধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে। পবিত্র মক্কা শরীফ নগরীতে বাণিজ্য স্থাপনা বাড়তে থাকায় তা এই ধর্মীয় নগরীর পবিত্র পরিচয় নষ্ট করছে বলে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হক্কানী আলিমগণ বলেন, সউদী ওহাবীরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রকৃত বিধান উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ও গোঁড়ামির কারণে এরা সবখানেই মাত্রাতিরিক্তভাবে শিরক বা পূজার গন্ধ খুঁজে পায়। ওহাবীরা এতো গোঁড়া যে, ইসলামের ঐতিহ্যগত বিষয় বা বরকতময় স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাকেও তারা ইসলামবিরোধী বলে মনে করে। (নাউযুবিল্লাহ)
No comments:
Post a Comment