অ্যাটর্নি জেনারেলের ইসলামবিরোধী জঘন্য কথায় দেশের সর্বস্তরের মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা

মুসলিম পারিবারিক আইন সংশোধন করে মেয়ে সন্তানকেও বাবার সম্পত্তির পূর্ণ উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য করার জঘন্য কুপ্রস্তাব উত্থাপন করেছে সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। এর পাশাপাশি মুসলিম পুরুষদের একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখার সুযোগ বন্ধ করার পক্ষেও মত দিয়েছে সে।

গত ২২ জুন ২০১৩ ঈসায়ী শনিবার ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’র সংশোধনী বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় ইসলামবিরোধী এসব কুপ্রস্তাব উত্থাপন করে অ্যাটর্নি জেনারেল। ২৩ জুন ২০১৩ ঈসায়ী দৈনিক আল ইহসানে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সারাদেশ থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ পাঠক দৈনিক আল ইহসানে ফোন করে তাদের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত অব্যাহত রেখেছে।

সারাদেশ ব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। অফিস-আদালতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, মসজিদে-মসজিদে মুসল্লীদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সবারই একই কথা- দেহে একবিন্দু রক্ত থাকতে তারা যালিম তাঁবেদার সরকারের ইসলামবিরোধী এ ধরনের কর্মকা- বরদাশত করবে না।

অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এ সরকার নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো- পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না। কিন্তু নির্বাচিত হয়ে ধর্মদ্রোহী ঘাতক সরকার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের উপর একের পর এক আঘাত করে চলছে।

সরকার সংবিধান থেকে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দিয়েছে। সংবিধান থেকে মুসলিম শব্দটি উঠিয়ে দিয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী নারীনীতি প্রণয়ন করেছে। নাস্তিক শিক্ষামন্ত্রীর নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা দর্শনের সিলেবাস চালু করেছে। বেপর্দা-বেহায়া, গান-বাজনা ও হারাম খেলাধুলার ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এদেশকে ভারতীয় নায়িকা-গায়িকার অভয়ারণ্য বানিয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ব্যক্ত করেন, সরকারের পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা তলানীতে এসে ঠেকেছে। চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটেছে। শেষ সময়ে যদি সরকার আবারে পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী আইন পাস করে তবে আগামীতে সরকার যতই ‘পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না’- প্রতিশ্রুতি দিক জনগণ তা বিশ্বাস করবে না।

অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি এ আঘাতের ফলে ধর্মপ্রাণ মুসলমান সরকার বিদ্বেষী হয়ে উঠবে। সে সুযোগ নেবে ধর্মব্যবসায়ী জামাত। তারা সাধারণকে তাদের পক্ষে টানার সুযোগ পাবে। তারা সাধারণ মানুষকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করার মওকা পাবে।

পর্যবেক্ষক মহল মন্তব্য করেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের এ কুপ্রস্তাবে প্রতিভাত হয়েছে যে, সরকারের ভেতর ইসলামবিদ্বেষী মহল ঘাপটি মেরে আছে। তারা সরকারের কাঁধে ভর করে তাদের মিশন কার্যকর করতে চায়।

 পর্যবেক্ষক মহল আরো মনে করেন, ফের যদি সরকার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস করে তাহলে প্রমাণিত হবে যে, সরকার আসলে দেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের সাথে প্রতারণা করেছে। তাদের ঈমান ও ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।

সরকার ফৌজদারী আইন পরিবর্তন করুক সেটা জনগণ ভালো হলে মানবে। কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের কোনো আইনে যদি সরকার হস্তক্ষেপ করে তবে জনগণ সে হাতকে কালো হাত হিসেবে গণ্য করবে এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তা প্রতিহত করবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের কোনো মুখপাত্র বা জনপ্রতিনিধি নয়। সে শুধু সরকারের আইনবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা। তারপরেও তার মুখে এসব কথাবার্তার প্রতিক্রিয়ায় দেশব্যাপী যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও আলোড়ন দেখা গেছে তাদের সত্যিকার অর্থে এ ধরনের কিছু হলে দেশে গৃহবিবাদ লেগে যেতে পারে। সঙ্গতকারণেই সরকারের নীতিনির্ধারকদের উচিত অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করা। নচেৎ সরকার কেবল জনবিচ্ছিন্নই হবে না, বরং ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।