শেষ
মুহূর্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে আমের রাজা ফজলীর বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে
রমযানেও। এ মৌসুমে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এছাড়া এ ব্যবসার সঙ্গে
সংশ্লিষ্ট লক্ষাধিক লোকের কর্মসংসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জুড়ে
চলছে খুশির আমেজ।
ব্যবসায়ীদের
দেয়া তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কানসাট, ভোলাহাট, রহনপুর থেকে প্রতিদিন প্রায় তিনশ
ট্রাক আম ঢাকা, চট্টগ্রাম, চৌমুহনী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও ফেনীর বড় মোকামগুলোতে
যাচ্ছে। প্রতি ট্রাকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার আমে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে দিনে সরবরাহ
হচ্ছে সাড়ে ২২ কোটি টাকার ফজলি আম।
জেলা কৃষি
সম্প্রসারণ সূত্রমতে, জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আমের গুরুত্ব ও চাষীদের বাগান
পরিচর্যার কারণে চলতি মৌসুমে আমবাগান বেড়ে প্রায় ২৪ হাজার হেক্টরে পৌঁছেছে। মহান
পাক উনার অশেষ রহমতে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ২০১৩ সালে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।চলতি ২০১৩ সালের আম মৌসুমের শুরুতেই গুটি
জাতের আমের দর বেশি পাননি ব্যবসায়ীরা। দেশের অন্যান্য জেলা থেকে বিভিন্ন মোকামে
আমের ব্যাপক আমদানি থাকায় আমের বাজার দর ছিল নিম্নমুখী। শুরুতে অন্যান্য স্থানের
আগাম জাতের আমের আমদানি শেষ হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এবার নাবি জাতের ফজলী আমের
দর বেশ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে খুশি আম ব্যবসায়ী ও চাষীরা।
জেলার
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট, শ্যামপুর, চৌডালা, রহনপুর, মল্লিকপুর, ভোলাহাট আম
ফাউন্ডেশন, শহরের সদরঘাটে আমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফজলী আম ২২০০-২৬০০ টাকা মণ
দরে বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে আশ্বিনা জাতের আম ১৫০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। আমের পুরো মৌসুমে আমবাগান যোগানদার, আমপাড়া, টুকরী তৈরি, ট্রাক বোঝাই থেকে
বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রায় লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এ খাতে
অর্থনৈতিক লেনদেন প্রায় এক হাজার কোটি টাকার। জেলার সর্ববৃহৎ আমবাজার কানসাটের আম
ব্যবসায়ী আনসারুল আলম জানান, আগামী মধ্য ভাদ্র পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন
স্থানের বাজারে আম পাওয়া যাবে। জেলার চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের
আম দেরিতে পাকে এবং দীর্ঘসময় গাছে আম সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন আমচাষীরা। ফলে আমের
চড়া মূল্য পায় ব্যবসায়ীরা।
ভোলাহাট
আম ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন চুটু জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিংহভাগ
আম উৎপাদন হলেও এখানে আমভিত্তিক কোনো প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে না উঠায় প্রতিবছর
বিপুল পরিমাণ আম পচে নষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও চাষীদের দাবি, জেলায় বড় আকারে আম
প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে উঠলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জেলার অর্থনৈতিক অবস্থান
সুদৃঢ় হবে।
No comments:
Post a Comment