ছোটকালের কথা। প্রাইমারি বা হাই স্কুলে পড়ার সময়কার কাহিনী।
স্কুলের শিক্ষকরা বলতো- ‘ইংরেজরা খুব ভদ্র, নম্র ও শিষ্টাচারপূর্ণ সভ্য
জাতি। ইংরেজরা খুব পরোপকারী জাতি।’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
কাফিররা এমন হতে পারে- আমি মন থেকে মেনে নিতে পরতাম না। তবে ছোট মানুষ; কিছু বলতে সাহস পেতাম না।
এমনই হীনম্মন্যতায় আচ্ছন্ন আমাদের দেশের কথিত শিক্ষিত সমাজ। আর এই হীনম্মন্যরাই জাতিকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নীচ ও হীনম্মন্য করে গড়ে তুলছে।
একটিবারও তাদের মনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে না যে- এই ব্রিটিশ ইংরেজরাই আমাদের দেশ প্রায় দুইশ’ বছর লুটেপুটে খেয়ে তাদের ঐশ্বর্য গড়েছে। এই দুইশ’ বছরে আমাদের দেশে কী পরিমাণ যুলুম ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে তারা- এটাও ফিকির করছে না কথিত শিক্ষিত সমাজ। বরং স্বাধীন হয়েও যেন নিজেদেরকে ইংরেজদের গোলাম ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে তারা।
কিন্তু কালের আবর্তে সত্য উন্মোচিত হয়েছে আমার কাছে। প্রকৃত ইতিহাস থেকে জানতে পরলাম- ইংরেজরা আসলে অসভ্য, বর্বর, লুটেরা, তস্কর, নৌদস্যুর জাত। অর্থাৎ ব্রিটিশরা জাতিগতভাবে বর্বর ও দস্যু। সভ্যতা কী জিনিস তা তারা জানে না। জানে শুধু লুটপাট করতে ও আগ্রাসন চালাতে। ইংরেজগুলো কতটা হিংস্র ও বর্ণবিদ্বেষী তার সামান্য উদাহরণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো--
যুক্তরাজ্যে বর্ণবাদী হামলা এবং আতঙ্কিত মুসলিম কমিউনিটি :
যুক্তরাজ্যে বহুজাতির বসবাস হলেও ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের হিংস্র বর্ণবাদী হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মুসলমানেরা। ২০১৩ সালের ২২ মে ব্রিটিশ সেনা সদস্য রাগবি হত্যার সাজানো ঘটনার পর থেকে বর্ণবাদী হামলার পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।
উগ্রবাদী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের প্রধান লক্ষ্য মুসলমান সম্প্রদায়। এতে মুসলিম পরিবারগুলো উদ্বিগ্ন। চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে তারা। দাড়ি, টুপি পরে রাস্তায় বের হওয়ায় যেন দায়, উগ্রপন্থী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে সময় অসময়ে এদেরকে লক্ষ্য করে। এসব হামলা থেকে বাদ পড়ছে না হিজাব পরিহিতা মহিলারাও। এ পরিস্থিতিতে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে খ্রিস্টান বর্ণবাদী সন্ত্রাসী দল ‘ইডিএল’। ইডিএলয়ের আকস্মিক হামলা ঠেকাতে মসজিদ ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এদিকে ব্রিটিশ নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা উগ্রপন্থী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের দ্বারা মুসলমানদের উপর আক্রমণে বিশেষভাবে আতঙ্কিত।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিকমানের টেলিফোন কোম্পানী “সিম্পল কল”-এর হেড অব প্রডাক্ট শারিউল হক বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হলে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে একটা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। “ইউকে বিডি নিউজ”-এর সাথে আক্রমণের ঘটনা ব্যাখ্যা করেছেন শারিউল। পাঠক, আসুন তার মুখ থেকেই শুনি ভয়াল ওই রাতের নিষ্ঠুর আক্রমণের ঘটনা।
“সোডিয়াম বাতির আধো আধো আলোতে আলোকিত মায়াবী রাত। ১০ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী, শনিবার। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১১:৩০। বন্ধুর বাসা থেকে ফিরছি। স্ত্রী তানভীল মারজান, আমার ৭ বছর বয়সের ছেলে সাল হক এবং ৫ বছরের কন্যা সাদীয়ানা হক আমার সাথে। চ্যাডওয়েল হিথ স্টেশন থেকে বের হয়েছি। আমার স্ত্রী ও বাচ্চারা হাটতে হাটতে নিকটতম বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছে, আমিও বাই সাইকেল নিয়ে তাদের সাথে। চ্যাডওয়েল হিথ স্টেশনে আমার সাইকেল রাখা ছিল আগেই। বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসতেই চোখে পড়ল স্ট্যান্ডের পিছনের ২/৩টা বাড়ির একটা দরজা খোলা। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এক মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান। দেখে অরিজিনাল ব্রিটিশ মনে হলো। পরনে শুধু একটা আন্ডারওয়ার। লোকটি আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে কি যেন বলছে। তার বডি ল্যাংগুয়েজ ভীষণ আপত্তিকর ও নোংরা। আমি ভয়ে শেষ। শরীরের সব রক্ত যেন হিম হয়ে গেল। ইতঃপূর্বে বহুদিন গ্রীন স্ট্রিটে থেকেছি। গভীর রাতে কখনো একা, কখনো ফ্যামিলি নিয়ে চলাফেরা করেছি। সমস্যা হয়নি। বিগত দেড় বছর আগে এসেছি এই অঞ্চলে। ইতঃপূর্বে এখানে আরো একবার ‘ইডিএল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি। শুনেছি এই এলাকাতে খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদী দল ‘ইডিএল’-এর অনেক উগ্রকর্মী বসবাস করে।
বাসস্ট্যন্ডে আমরা একা নই। আরো আছে অনেকে। কিন্তু আমি যে মুসলমান। গায়ে পাঞ্জাবী, আমার স্ত্রীর মাথায় হেজাব। কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে তা যে আমাদের উপর দিয়ে শুরু হবে বুঝতে বাকি রইলো না। অবশেষে তাই হলো।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওদেরকে ট্যাক্সি ক্যাবে উঠিয়ে দেয়ার কথা ভাবছি। মোবাইলফোন বেজে উঠল। অপর প্রান্ত থেকে বন্ধু জানতে চাইল আমরা নিরাপদে বাসায় পৌঁছাতে পারলাম কিনা? হঠাৎ আমার মাথার উপর একটা হাত চোখে পড়ল। স্টেশনের পিছনের বাসার দরজায় দাঁড়ানো লোকটি বেরিয়ে এসে হাত উচু করে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করছে আমাকে। আমি টেলিফোনটা এক কান থেকে অন্য কানে নিয়ে বললাম টকিং ওভার টেলিফোন। আমার মুখের কথা শেষ না হতেই লোকটি তার হাতে থাকা বোতল দিয়ে সজোরে আঘাত করলো আমার ডান কানে। প্রচ- ব্যথা অনুভব করলাম ঘাড় ও কানে। কিছু না বুঝেই সোজা দৌড়। পালানোর চেষ্টা করছি। লোকটি আমার পিছে ধাওয়া করলো। অনুভব করলাম কান ফেটে রক্তের বন্যা বইছে। পাঞ্জাবী ও জিনসের প্যান্ট ভিজে শেষ। আমার এ পরিস্থিতি দেখে পথিক কেউ কেউ পুলিশকে কল করছে। আমি ইতোমধ্যে ফোনে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করছি পুলিশকে। সন্ত্রাসী লোকটি আমাকে তাড়া করছে কিনা ঠা-া মাথায় জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ। তাদের মধ্যে আমাকে জরুরীভিত্তিতে উদ্ধারের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা গেল না। দৌড়াতে দৌড়াতে আরো এক বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করেছি। ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীটি এবার তার হাতের বোতলটি আমাকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারলো। এ যাত্রায় দ্বিতীয়বার আঘাতের হাত থেকে আমি রক্ষা পেলাম। আমি ভীত, ভীষণ ক্লান্ত। স্যান্ডেল পরে আর দৌড়াতে পারছি না। মনে হলো এক্ষুণি মাটিতে পড়ে যাবো। ঘটে যাবে অপূরণীয় একটা ক্ষতি। পিছনে তাকিয়ে দেখি ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীটি দ্বিতীয় বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছে। আমি তার দৃষ্টিসীমার বাইরে গিয়ে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করছি। আমার অসহায় অবস্থা দেখে একজন পাকিস্তানী এগিয়ে এলেন। পকেট থেকে টিস্যু বের করে ক্ষতস্থানে সেবা দিচ্ছেন তিনি। নানাভাবে সান্তনার কথাও শোনাচ্ছেন আমাকে। আমি খানিকটা আশ্বস্ত হলাম। মনে হলো আমি এখন আর একা নই। কিন্তু আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা কোথায়? তারাও কি আক্রান্ত হয়ে রাস্থায় পড়ে আছে। আমার সন্তানের রক্তে কি রাঙিয়ে গেছে ব্রিটেনের পীচ ঢালা পথ? ভাবতেই দুঃশ্চিন্তায় আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তখনো পুলিশ আসেনি। এ দৃশ্য ছিল বড়ই মর্মস্পর্শী ও হৃদয় বিদারক।
বিশ মিনিটের ব্যবধানে একটি পুলিশের গাড়ি এলো। পুলিশকে দেখেই সন্ত্রাসী লোকটি প্রথমে বসে পড়লো। পরে গড়িয়ে পড়লো মাটিতে। ইতোমধ্যে একাধিক পুলিশের গাড়ি এসে হাজির। আমার কাছে ঘটনার বিবরণ জেনে বাসায় চলে যেতে বললো পুলিশ। মনে হলো ভদ্রবেশী দুষ্কৃতিকারী লোকটিকে আটক করার কোনো ইচ্ছা নেই পুলিশের। তাদের অন্যান্য ইউনিটগুলো ভদ্রবেশী দুষ্কৃতিকারী লোকটির সেবা যতেœ ব্যস্ত। মনে হলো ভিকটিমের কিছু হয়নি। যত ক্ষতি সবই হয়েছে আক্রমণকারী সন্ত্রাসীটির।
ব্রিটিশ পুলিশের উপর আমার আস্থা বরাবরই কম। তাই আক্রমণকারীকে আটক ও অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে অনুরোধ করলাম আমি। আক্রমণকারীকে পুলিশ আটক করতে নারাজ। তাদের বক্তব্য- সে অসুস্থ তাকে আটক করলে পুলিশের দায়িত্ব বেড়ে যাবে। আমি কোনোভাবেই পুলিশের এসব বক্তব্যের সাথে একমত হতে পারলাম না। অবশেষে আক্রমণকারী আটক হলো। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স এলো না। এমনকি আমার কোনো স্টেটমেন্ট ফাইল করা হলো না। পুলিশের বক্তব্য- অ্যাম্বুলেন্স আসলে আক্রমণকারীকে বহন করা হবে। তোমাকে নয়। কারণ সে অসুস্থ। তোমার রক্তপাত বন্ধ প্রায়। তুমি বাসায় চলে যাও।
পূর্বের বাসসট্যান্ডে আমার স্ত্রী ও বাচ্চাদের করুণ পরিণতি দেখে এক হৃদয়বান বাংলাদেশী তার গাড়িতে করে খুঁজতে খুঁজতে আমার সামনে এসে হাজির। তাদেরকে সুস্থ দেখে আবেগ আর ভালোবাসায় আমি আপ্লুত হয়ে পড়লাম। আর ওই পাকিস্তানী ভদ্রলোক দয়া করে আমাদেরকে বাসায় পৌঁছে দিলেন।
পরদিন সকালে ক্লিনিকে গেলাম। কান ও গলার পরিস্থিতি দেখে খুশি হতে পারলো না ডাক্তার। বোতলের আঘাতে ক্ষতস্থান আর এক মি.মি. বেশি গর্ত হলে আমার শ্রবণ শক্তি হারিয়ে যেত বলে মন্তব্য করলো ডাক্তার।
ইতোমধ্যে টনি বুলি নামের মেট্রোপলিটন এক পুলিশ কর্মকর্তা টেলিফোনে আমার সাথে কথা বলে নিশ্চিত করলো যে আমার কোনো স্টেটমেন্ট যথাযথভাবে ফাইল করা হয়নি। সে এই অসম্পুর্ণ কাজটি সম্পুর্ণ করার জন্য আশ্বাস দিলো। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করলো না। গরজ আমার, আক্রান্ত ও আহত হয়েছি আমি। তাই নিজেই এবার ফোন করে কথা বলতে চাইলাম পুলিশ অফিসার টনি বুলির সাথে। কিন্তু হায় অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যায়। মেট্রোপলিটন পুলিশ স্টেশন থেকে জানানো হলো টনি বুলি ছুটিতে। ফিরবে লম্বা সামার ভ্যাকেশন শেষে।
“ইউকে বিডি নিউজ”-এর পক্ষ থেকে শারিউল হকের কেসের (পুলিশ রেফারেন্স নং ৪৪১৫২৬৯/১৩) অগ্রগতি জানার চেষ্টা করে দেখা গেল- পুলিশ ধরেই নিয়েছে এটি একটি ছিনতাই কেস। কোনো কারণ ছাড়াই শারিউল খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসবাদী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে- এ কথা মানতে নারাজ ব্রিটিশ পুলিশ। অথচ শারিউল পুলিশের বক্তব্যের সাথে আদৌ একমত নন। তার ভাষায় এটা ছিল অ্যাটেম টু মার্ডার।
১০ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী তারিখ দিবাগত রাতের ভয়াবহ ওই সব দৃশ্য শারিউল হক এবং তার পরিবার কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না। এক অজানা আতঙ্কে জড়সড় হয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দু’চোখে ভাসছে সরিষার ফুল। শারিরীক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আবার কাজে মন বসানো কঠিন হবে কিনা ভাবছেন শারিউল। ইতোমধ্যে বাসা পরিবর্তন করে অন্যত্র যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
গত ১২ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী তারিখ দিবাগত রাতে পূর্ব লন্ডনের ল্যানডন পার্ক স্কুলের জিসিএসই পরীক্ষার্থী আজমল (১৬) বর্ণবাদী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশী এলাকা পপলারে। আজমলের সাথে আক্রান্ত হয়েছে আরো এক বাংলাদেশী। বর্তমানে সে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছে। মসজিদ ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানেও অগ্নিসংযোগসহ আক্রমণের ঘটনাও ঘটছে যুক্তরাজ্যে।
সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের নানা জটিল সূত্র বিশ্লেষণ করলে জানা যায়- মানুষের বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ভুল শিক্ষা, মিডিয়ার বাড়াবাড়ি, কিছু গণমাধ্যমের মিথ্যাচার ইত্যাদি কারণে ব্রিটিশ জনগোষ্ঠির সবচেয়ে বিক্ষুব্ধ ও পশ্চাৎপদ অংশের মধ্যে এরকম বিশ্বাস জন্ম নিতে পারে যে, মুসলমান মানেই সন্ত্রাসী। মুসলমান মানেই খারাপ। এরকম ক্রুসেডীয় বর্বর ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসীদের কাছে জিম্মি না হয়ে সতর্কতার সাথে ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী চলতে হবে মুসলিম কমিউনিটিকে। দুর্গন্ধযুক্ত আঞ্চলিকতার গন্ডি পেরিয়ে নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে সমঝোতার দুর্গ। প্রবাসে বসে অবৈধ উপায়ে দেশের নষ্ট রাজনীতির চর্চা পরিহার করে ইসলামী সেবামূলক কাজে বেশি বেশি করে সম্পৃক্ত হতে হবে। পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রকৃত সুগন্ধ বিলিয়ে দিতে হবে অমুসলিমদের মাঝে। তবেই প্রবাসে চুড়ান্ত বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে কমিউনিটি ও কমিউনিটির মুসলমানরা।
(সূত্র-দৈনিক আল ইহসান: ২৬-৮-২০১৩ ঈসায়ী)
কাফিররা এমন হতে পারে- আমি মন থেকে মেনে নিতে পরতাম না। তবে ছোট মানুষ; কিছু বলতে সাহস পেতাম না।
এমনই হীনম্মন্যতায় আচ্ছন্ন আমাদের দেশের কথিত শিক্ষিত সমাজ। আর এই হীনম্মন্যরাই জাতিকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নীচ ও হীনম্মন্য করে গড়ে তুলছে।
একটিবারও তাদের মনে প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে না যে- এই ব্রিটিশ ইংরেজরাই আমাদের দেশ প্রায় দুইশ’ বছর লুটেপুটে খেয়ে তাদের ঐশ্বর্য গড়েছে। এই দুইশ’ বছরে আমাদের দেশে কী পরিমাণ যুলুম ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে তারা- এটাও ফিকির করছে না কথিত শিক্ষিত সমাজ। বরং স্বাধীন হয়েও যেন নিজেদেরকে ইংরেজদের গোলাম ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে তারা।
কিন্তু কালের আবর্তে সত্য উন্মোচিত হয়েছে আমার কাছে। প্রকৃত ইতিহাস থেকে জানতে পরলাম- ইংরেজরা আসলে অসভ্য, বর্বর, লুটেরা, তস্কর, নৌদস্যুর জাত। অর্থাৎ ব্রিটিশরা জাতিগতভাবে বর্বর ও দস্যু। সভ্যতা কী জিনিস তা তারা জানে না। জানে শুধু লুটপাট করতে ও আগ্রাসন চালাতে। ইংরেজগুলো কতটা হিংস্র ও বর্ণবিদ্বেষী তার সামান্য উদাহরণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো--
যুক্তরাজ্যে বর্ণবাদী হামলা এবং আতঙ্কিত মুসলিম কমিউনিটি :
যুক্তরাজ্যে বহুজাতির বসবাস হলেও ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের হিংস্র বর্ণবাদী হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মুসলমানেরা। ২০১৩ সালের ২২ মে ব্রিটিশ সেনা সদস্য রাগবি হত্যার সাজানো ঘটনার পর থেকে বর্ণবাদী হামলার পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।
উগ্রবাদী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের প্রধান লক্ষ্য মুসলমান সম্প্রদায়। এতে মুসলিম পরিবারগুলো উদ্বিগ্ন। চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছে তারা। দাড়ি, টুপি পরে রাস্তায় বের হওয়ায় যেন দায়, উগ্রপন্থী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে সময় অসময়ে এদেরকে লক্ষ্য করে। এসব হামলা থেকে বাদ পড়ছে না হিজাব পরিহিতা মহিলারাও। এ পরিস্থিতিতে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে খ্রিস্টান বর্ণবাদী সন্ত্রাসী দল ‘ইডিএল’। ইডিএলয়ের আকস্মিক হামলা ঠেকাতে মসজিদ ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এদিকে ব্রিটিশ নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা উগ্রপন্থী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের দ্বারা মুসলমানদের উপর আক্রমণে বিশেষভাবে আতঙ্কিত।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিকমানের টেলিফোন কোম্পানী “সিম্পল কল”-এর হেড অব প্রডাক্ট শারিউল হক বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হলে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে একটা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। “ইউকে বিডি নিউজ”-এর সাথে আক্রমণের ঘটনা ব্যাখ্যা করেছেন শারিউল। পাঠক, আসুন তার মুখ থেকেই শুনি ভয়াল ওই রাতের নিষ্ঠুর আক্রমণের ঘটনা।
“সোডিয়াম বাতির আধো আধো আলোতে আলোকিত মায়াবী রাত। ১০ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী, শনিবার। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১১:৩০। বন্ধুর বাসা থেকে ফিরছি। স্ত্রী তানভীল মারজান, আমার ৭ বছর বয়সের ছেলে সাল হক এবং ৫ বছরের কন্যা সাদীয়ানা হক আমার সাথে। চ্যাডওয়েল হিথ স্টেশন থেকে বের হয়েছি। আমার স্ত্রী ও বাচ্চারা হাটতে হাটতে নিকটতম বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছে, আমিও বাই সাইকেল নিয়ে তাদের সাথে। চ্যাডওয়েল হিথ স্টেশনে আমার সাইকেল রাখা ছিল আগেই। বাসস্ট্যান্ডের কাছে আসতেই চোখে পড়ল স্ট্যান্ডের পিছনের ২/৩টা বাড়ির একটা দরজা খোলা। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এক মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান। দেখে অরিজিনাল ব্রিটিশ মনে হলো। পরনে শুধু একটা আন্ডারওয়ার। লোকটি আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে কি যেন বলছে। তার বডি ল্যাংগুয়েজ ভীষণ আপত্তিকর ও নোংরা। আমি ভয়ে শেষ। শরীরের সব রক্ত যেন হিম হয়ে গেল। ইতঃপূর্বে বহুদিন গ্রীন স্ট্রিটে থেকেছি। গভীর রাতে কখনো একা, কখনো ফ্যামিলি নিয়ে চলাফেরা করেছি। সমস্যা হয়নি। বিগত দেড় বছর আগে এসেছি এই অঞ্চলে। ইতঃপূর্বে এখানে আরো একবার ‘ইডিএল’ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি। শুনেছি এই এলাকাতে খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদী দল ‘ইডিএল’-এর অনেক উগ্রকর্মী বসবাস করে।
বাসস্ট্যন্ডে আমরা একা নই। আরো আছে অনেকে। কিন্তু আমি যে মুসলমান। গায়ে পাঞ্জাবী, আমার স্ত্রীর মাথায় হেজাব। কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে তা যে আমাদের উপর দিয়ে শুরু হবে বুঝতে বাকি রইলো না। অবশেষে তাই হলো।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওদেরকে ট্যাক্সি ক্যাবে উঠিয়ে দেয়ার কথা ভাবছি। মোবাইলফোন বেজে উঠল। অপর প্রান্ত থেকে বন্ধু জানতে চাইল আমরা নিরাপদে বাসায় পৌঁছাতে পারলাম কিনা? হঠাৎ আমার মাথার উপর একটা হাত চোখে পড়ল। স্টেশনের পিছনের বাসার দরজায় দাঁড়ানো লোকটি বেরিয়ে এসে হাত উচু করে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করছে আমাকে। আমি টেলিফোনটা এক কান থেকে অন্য কানে নিয়ে বললাম টকিং ওভার টেলিফোন। আমার মুখের কথা শেষ না হতেই লোকটি তার হাতে থাকা বোতল দিয়ে সজোরে আঘাত করলো আমার ডান কানে। প্রচ- ব্যথা অনুভব করলাম ঘাড় ও কানে। কিছু না বুঝেই সোজা দৌড়। পালানোর চেষ্টা করছি। লোকটি আমার পিছে ধাওয়া করলো। অনুভব করলাম কান ফেটে রক্তের বন্যা বইছে। পাঞ্জাবী ও জিনসের প্যান্ট ভিজে শেষ। আমার এ পরিস্থিতি দেখে পথিক কেউ কেউ পুলিশকে কল করছে। আমি ইতোমধ্যে ফোনে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করছি পুলিশকে। সন্ত্রাসী লোকটি আমাকে তাড়া করছে কিনা ঠা-া মাথায় জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ। তাদের মধ্যে আমাকে জরুরীভিত্তিতে উদ্ধারের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা গেল না। দৌড়াতে দৌড়াতে আরো এক বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করেছি। ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীটি এবার তার হাতের বোতলটি আমাকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারলো। এ যাত্রায় দ্বিতীয়বার আঘাতের হাত থেকে আমি রক্ষা পেলাম। আমি ভীত, ভীষণ ক্লান্ত। স্যান্ডেল পরে আর দৌড়াতে পারছি না। মনে হলো এক্ষুণি মাটিতে পড়ে যাবো। ঘটে যাবে অপূরণীয় একটা ক্ষতি। পিছনে তাকিয়ে দেখি ভদ্রবেশী উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীটি দ্বিতীয় বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছে। আমি তার দৃষ্টিসীমার বাইরে গিয়ে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করছি। আমার অসহায় অবস্থা দেখে একজন পাকিস্তানী এগিয়ে এলেন। পকেট থেকে টিস্যু বের করে ক্ষতস্থানে সেবা দিচ্ছেন তিনি। নানাভাবে সান্তনার কথাও শোনাচ্ছেন আমাকে। আমি খানিকটা আশ্বস্ত হলাম। মনে হলো আমি এখন আর একা নই। কিন্তু আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা কোথায়? তারাও কি আক্রান্ত হয়ে রাস্থায় পড়ে আছে। আমার সন্তানের রক্তে কি রাঙিয়ে গেছে ব্রিটেনের পীচ ঢালা পথ? ভাবতেই দুঃশ্চিন্তায় আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তখনো পুলিশ আসেনি। এ দৃশ্য ছিল বড়ই মর্মস্পর্শী ও হৃদয় বিদারক।
বিশ মিনিটের ব্যবধানে একটি পুলিশের গাড়ি এলো। পুলিশকে দেখেই সন্ত্রাসী লোকটি প্রথমে বসে পড়লো। পরে গড়িয়ে পড়লো মাটিতে। ইতোমধ্যে একাধিক পুলিশের গাড়ি এসে হাজির। আমার কাছে ঘটনার বিবরণ জেনে বাসায় চলে যেতে বললো পুলিশ। মনে হলো ভদ্রবেশী দুষ্কৃতিকারী লোকটিকে আটক করার কোনো ইচ্ছা নেই পুলিশের। তাদের অন্যান্য ইউনিটগুলো ভদ্রবেশী দুষ্কৃতিকারী লোকটির সেবা যতেœ ব্যস্ত। মনে হলো ভিকটিমের কিছু হয়নি। যত ক্ষতি সবই হয়েছে আক্রমণকারী সন্ত্রাসীটির।
ব্রিটিশ পুলিশের উপর আমার আস্থা বরাবরই কম। তাই আক্রমণকারীকে আটক ও অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে অনুরোধ করলাম আমি। আক্রমণকারীকে পুলিশ আটক করতে নারাজ। তাদের বক্তব্য- সে অসুস্থ তাকে আটক করলে পুলিশের দায়িত্ব বেড়ে যাবে। আমি কোনোভাবেই পুলিশের এসব বক্তব্যের সাথে একমত হতে পারলাম না। অবশেষে আক্রমণকারী আটক হলো। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স এলো না। এমনকি আমার কোনো স্টেটমেন্ট ফাইল করা হলো না। পুলিশের বক্তব্য- অ্যাম্বুলেন্স আসলে আক্রমণকারীকে বহন করা হবে। তোমাকে নয়। কারণ সে অসুস্থ। তোমার রক্তপাত বন্ধ প্রায়। তুমি বাসায় চলে যাও।
পূর্বের বাসসট্যান্ডে আমার স্ত্রী ও বাচ্চাদের করুণ পরিণতি দেখে এক হৃদয়বান বাংলাদেশী তার গাড়িতে করে খুঁজতে খুঁজতে আমার সামনে এসে হাজির। তাদেরকে সুস্থ দেখে আবেগ আর ভালোবাসায় আমি আপ্লুত হয়ে পড়লাম। আর ওই পাকিস্তানী ভদ্রলোক দয়া করে আমাদেরকে বাসায় পৌঁছে দিলেন।
পরদিন সকালে ক্লিনিকে গেলাম। কান ও গলার পরিস্থিতি দেখে খুশি হতে পারলো না ডাক্তার। বোতলের আঘাতে ক্ষতস্থান আর এক মি.মি. বেশি গর্ত হলে আমার শ্রবণ শক্তি হারিয়ে যেত বলে মন্তব্য করলো ডাক্তার।
ইতোমধ্যে টনি বুলি নামের মেট্রোপলিটন এক পুলিশ কর্মকর্তা টেলিফোনে আমার সাথে কথা বলে নিশ্চিত করলো যে আমার কোনো স্টেটমেন্ট যথাযথভাবে ফাইল করা হয়নি। সে এই অসম্পুর্ণ কাজটি সম্পুর্ণ করার জন্য আশ্বাস দিলো। কিন্তু বাস্তবে কিছুই করলো না। গরজ আমার, আক্রান্ত ও আহত হয়েছি আমি। তাই নিজেই এবার ফোন করে কথা বলতে চাইলাম পুলিশ অফিসার টনি বুলির সাথে। কিন্তু হায় অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যায়। মেট্রোপলিটন পুলিশ স্টেশন থেকে জানানো হলো টনি বুলি ছুটিতে। ফিরবে লম্বা সামার ভ্যাকেশন শেষে।
“ইউকে বিডি নিউজ”-এর পক্ষ থেকে শারিউল হকের কেসের (পুলিশ রেফারেন্স নং ৪৪১৫২৬৯/১৩) অগ্রগতি জানার চেষ্টা করে দেখা গেল- পুলিশ ধরেই নিয়েছে এটি একটি ছিনতাই কেস। কোনো কারণ ছাড়াই শারিউল খ্রিস্টান শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসবাদী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে- এ কথা মানতে নারাজ ব্রিটিশ পুলিশ। অথচ শারিউল পুলিশের বক্তব্যের সাথে আদৌ একমত নন। তার ভাষায় এটা ছিল অ্যাটেম টু মার্ডার।
১০ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী তারিখ দিবাগত রাতের ভয়াবহ ওই সব দৃশ্য শারিউল হক এবং তার পরিবার কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না। এক অজানা আতঙ্কে জড়সড় হয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দু’চোখে ভাসছে সরিষার ফুল। শারিরীক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আবার কাজে মন বসানো কঠিন হবে কিনা ভাবছেন শারিউল। ইতোমধ্যে বাসা পরিবর্তন করে অন্যত্র যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
গত ১২ আগস্ট ২০১৩ ঈসায়ী তারিখ দিবাগত রাতে পূর্ব লন্ডনের ল্যানডন পার্ক স্কুলের জিসিএসই পরীক্ষার্থী আজমল (১৬) বর্ণবাদী খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশী এলাকা পপলারে। আজমলের সাথে আক্রান্ত হয়েছে আরো এক বাংলাদেশী। বর্তমানে সে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছে। মসজিদ ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানেও অগ্নিসংযোগসহ আক্রমণের ঘটনাও ঘটছে যুক্তরাজ্যে।
সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের নানা জটিল সূত্র বিশ্লেষণ করলে জানা যায়- মানুষের বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ভুল শিক্ষা, মিডিয়ার বাড়াবাড়ি, কিছু গণমাধ্যমের মিথ্যাচার ইত্যাদি কারণে ব্রিটিশ জনগোষ্ঠির সবচেয়ে বিক্ষুব্ধ ও পশ্চাৎপদ অংশের মধ্যে এরকম বিশ্বাস জন্ম নিতে পারে যে, মুসলমান মানেই সন্ত্রাসী। মুসলমান মানেই খারাপ। এরকম ক্রুসেডীয় বর্বর ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসীদের কাছে জিম্মি না হয়ে সতর্কতার সাথে ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী চলতে হবে মুসলিম কমিউনিটিকে। দুর্গন্ধযুক্ত আঞ্চলিকতার গন্ডি পেরিয়ে নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে সমঝোতার দুর্গ। প্রবাসে বসে অবৈধ উপায়ে দেশের নষ্ট রাজনীতির চর্চা পরিহার করে ইসলামী সেবামূলক কাজে বেশি বেশি করে সম্পৃক্ত হতে হবে। পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রকৃত সুগন্ধ বিলিয়ে দিতে হবে অমুসলিমদের মাঝে। তবেই প্রবাসে চুড়ান্ত বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে কমিউনিটি ও কমিউনিটির মুসলমানরা।
(সূত্র-দৈনিক আল ইহসান: ২৬-৮-২০১৩ ঈসায়ী)
No comments:
Post a Comment