হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “বান্দা যত ইবাদত করে থাকে তন্মধ্যে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনের ইবাদত মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয়। প্রতিদিনের রোযা- এক বৎসর রোযার সমান; প্রতি রাত্রের ইবাদত- পবিত্র ক্বদর উনার রাতের ইবাদতের সমান ফযীলতপূর্ণ।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “বান্দা যে সমস্ত নেক আমল করে তন্মধ্যে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনের আমল মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক পছন্দনীয়।” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র আরাফা উনার (পবিত্র ৯ই যিলহজ্জ শরীফ উনার) রোযা বান্দার এক বৎসর পূর্বের ও এক বৎসর পরের গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেয়।” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পাঁচ রাত্রে নিশ্চিত দোয়া কবুল হয়। পবিত্র রজব মাস উনার পহেলা রাত্র, পবিত্র বরাত উনার রাত্র, পবিত্র ক্বদর উনার রাত্র, পবিত্র দুই ঈদ উনার দুই রাত্র।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত আবু উমামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র ঈদ উনার রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাবে; যখন সমস্ত অন্তরগুলো মৃত থাকবে তখন তার অন্তর জীবিত থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আদম সন্তান উনারা ইয়াওমুন নহর বা পবিত্র কুরবানী উনার দিন যা আমল করে তন্মধ্যে রক্ত প্রবাহিত করা বা পবিত্র কুরবানী করা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক প্রিয়।” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে, “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই পবিত্র কুরবানী কী? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের দ্বীনী পিতা হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম উনার সুন্নত মুবারক। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বলেন, এর মধ্যে আমাদের জন্য কি ফযীলত রয়েছে? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, দুম্বা ও ভেড়া অর্থাৎ পশমওয়ালা পশু সম্পর্কে আপনি কী বলেন? আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুম্বার ও ভেড়ার অর্থাৎ পশমওয়ালা পশুর প্রত্যেক পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার হক্ব আদায় করা। অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনের দিনে রোযা রাখা, রাতে ইবাদত-বন্দেগী করা, দোয়া করা আর খাছ করে পবিত্র ঈদ উনার রাতে দোয়া করা, পবিত্র ঈদ উনার দিন প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরবানী করা। কারণ, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আপনার রব তায়ালা উনার উদ্দেশ্যে (পবিত্র ঈদ উনার) নামায আদায় করুন এবং পবিত্র কুরবানী করুন।” আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “পবিত্র কুরবানী করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি পবিত্র কুরবানী করবে না সে যেনো আমাদের ঈদগাহে না আসে।”
তাই প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার প্রথম দশ দিনেরদিনে রোযা রেখে ও রাতে ইবাদত-বন্দেগী, তওবা-ইস্তিগফার ও দোয়া-মুনাজাত করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের খাছ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা।
No comments:
Post a Comment