Tuesday, February 11, 2014

জ্ঞান-বিজ্ঞান রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা/উদ্ভাবক মুসলমানঃ মুসলমান উনারাই বিজ্ঞানের মূল বা জনক বা আবিষ্কারক-০২(দ্বিতীয় পর্ব)



চিকিৎসাবিজ্ঞানে মুসলমান উনাদের শুধুমাত্র অবদান নয়, উনারাই সৃষ্টিকরক/উদ্ভাবক-০১:

বিজ্ঞানের দৃশ্যপটে মুসলমানেরা আবির্ভূত হওয়ার আগ্মূহুর্ত পর্যন্ত প্রাচীন বিজ্ঞানের ইতিহাস নামে মাত্র ছিলো। ঐ সময়ে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যত কাজই হোক না কেন বা হিংসাবশত: দাবি করুক না কেন, তা তখন পর্যন্ত প্রাথমিক দরজার চৌকাঠ অতিক্রম করতে পারে নি। এক কথায় তাদেরকে কেউ চিনতোই না।



বলাবাহুল্য, হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং ইসমাঈল আলাইহস সালাম উনাদের কর্তৃক মক্কায় কাবা শরীফ পুনর্নির্মানের পর আরবভূমি একটি ধর্মীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়। এছাড়া, প্রাচ্য, পাশ্চাত্য এবং আফ্রিকা মহাদেশের মিলনস্থানে এবং বিশ্বের প্রধান বানিজ্য পথের উপরে অবস্থিত হওয়ায় এখানে কিছু ব্যবসায়ী দলের আনাগোনা পাওয়া যায়। সন্দেহ নেই, কাব্যক্ষেত্রে ভাষাগত বুৎপত্তিতে আরবীয়রা অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আগে থেকেই। সেই সময়ের ইমরুল কায়েস(امرؤ القيس بن حجر بن الحارث الكندي) কিংবা খানসার(تماضر بنت عمرو بن الحرث بن الشريد السُلمية) মত কবিদের কবিতা আজো বিশ্বসাহিত্যের অমর সম্পদ। কিন্তু, আরব এর বাইরে পুরো জাতিই জ্ঞান-বিজ্ঞান আর সভ্যতা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছিল। পূর্বে পারস্যের শাসানীয় কিস্রা সম্রাট আর পশ্চিমে রোমান কাইজার সম্রাটেরা সেসময় জানা পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে নিজেদের দখলদারি প্রতিষ্ঠার জন্য একে অন্যের দিকে শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। সে লোভী চোখগুলোও একপ্রকার অবজ্ঞায়-অবহেলায় আরবকে এড়িয়ে চলতো। এমন একটা অবস্থায় আরবকে অনেকে অন্ধকার হিসেবেও ভাবতো।

ঠিক সেই সময়ে, ৫৭০ খৃষ্টাব্দে যিনি কুলকায়িনাতের নবী ও জ্ঞানের মূল হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মক্কা শরীফে তাশরীফ নিলেন। ৪০ বছর বয়স মুবারকে তিনি জ্ঞানবিজ্ঞান ও শান্তির দ্বীন ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে ব্রতী হন এবং পরবর্তী ২৩ বছরে অবিশ্রান্ত পরিশ্রমে সমগ্র আরব উপদ্বীপকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসেন। নুরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জাহিরী অবর্তমানে চারজন বিশিষ্ট ছাহাবী উনাদের পর্যায়ক্রমিক খিলাফতী শাসনকালে(৬৩২-৬৬১ খৃষ্টাব্দ) মিশর, সিরিয়া ও পারস্য ইসলামের শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। এরপর উমাইয়া শাসনামলে (৬৬১-৭৫০ খৃষ্টাব্দ) উত্তর আফ্রিকা, স্পেন, তুর্কিস্থান এবং ভারতবর্ষের সিন্ধু মুসলমানদের সরাসরি কর্তৃত্বাধীনে চলে আসে। এরপরে শুরু হয় প্রায় সাড়ে সাতশ’ বছরের আব্বাসীয় শাসনামল(৭৫০-১৫১৭ খৃষ্টাব্দ)। বিজ্ঞানের জগতে মুসলমানদের একচ্ছত্র সদর্প পদচারনা আমরা এ সময়েই দেখতে পাই। তবে নুরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবস্থানকালের বিভিন্ন চিকিৎসাবিদ্যায় পরবর্তীতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেন।

বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় মুসলমানদের সদম্ভ পদচারনা একটি ঐতিহাসিক সত্য । বিজ্ঞানের সৃষ্টিকারক হিসেবে চিকিৎসাবিজ্ঞান(Medicine), রসায়ন(Chemistry), জ্যোতির্বিদ্যা(Astronomy), গণিত(Mathematics), পদার্থবিজ্ঞান(Physics), দর্শন(Philosophy), ভূগোল(Geography), স্থাপত্যবিদ্যা(Architecture) এবং হস্তলিখনবিদ্যায়(Calligraphy) মুসলমান উনাদের একক আবিষ্কার ও অবদানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনই অবকাশ নেই। এর বাইরেও আইনশাস্ত্র(Law), ইতিহাস(History), সমাজবিজ্ঞান(Sociology), সমরবিজ্ঞান(Military Science) এবং প্রত্নতত্ত্বে(Archeology) মুসলমানদের মৌলিক বেমেছাল আবিষ্কার রয়েছে। যা অন্যকোনও অমুসলিম দ্বারা আজও সম্ভব হয়নি। এখানে, সংক্ষিপ্তাকারে কেবলমাত্র বিষয়ভিত্তিক মূল আবিষ্কারগুলো তৎসংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের কাজ সহকারে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু কিছু কিছু বিজ্ঞানীর আবিষ্কার এত বহুমুখী, এত বেশী ক্ষেত্রে উনাদের মৌলিক কাজসমূহ বিস্তৃত যে, বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় বারবার চলে আসাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

No comments:

Post a Comment