বিজ্ঞানে মুসলমান উনাদের শুধুমাত্র অবদান নয়, উনারাই সৃষ্টিকরক/উদ্ভাবক:
মুসলমান সভ্যতা বিশ্বের উন্নতির সর্ব বিভাগে এমন সৃজনশীলতা ও আবিষ্কারের জনক হয়ে আছে যা ঐতিহাসিক সত্য । শুধুমাত্র হিংসা ও শক্রুতাবশত: এগুলোতে মুসলমান বিজ্ঞানীদের নাম না দিয়ে কাফির মুশরিকদের নাম জুড়ে
দেয়া হয়েছে ও হচ্ছে। যা তাদের জন্য বড়ই লজ্জাকর বিষয়। কিস্তু আমরা আশা করি এর হাক্বিকত খুব শিগগির প্রকাশ হয়ে যাবে। পৃথিবীর মানুষ তখন চিনবে না কোনও কাফির, মুশরিক বিজ্ঞানীর নাম। কারণ তাদের নিজস্ব তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার নেই, সবগুলোই মুসলিম উনাদের থেকে চুরি করা মাত্র।
বিজ্ঞান বিভাগে দৃষ্টি দিলেই দেখা যায়, সমস্ত বিজ্ঞানের জন্মদাতা মুসলমানগণ । চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান , গনিতবিজ্ঞান ,আলোকবিজ্ঞান, মহাকাশবিজ্ঞান,দর্শনসহ সাহিত্য ও কাব্যচর্চাতে পৃথিবীতে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়, লাইব্রেরী ও গবেষনাগার প্রথম উপহার দিয়েছিলেন মুসলমান উনারা। যা পরবর্তী সংখ্যা গুলোতে মুসলমানবিজ্ঞানী উনাদের নাম ও এককভাবে উনাদের প্রথম আবিষ্কৃত বিষয়সহ ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া ছোটখাট জিনিস ধরলে তো ফিরিস্তি অনেক লম্বা হয়ে যাবে । বন্দুক, বারুদ, কামান, প্রস্তর নিক্ষেপ যন্ত্রের আবিষ্কারেও মুসলমান রসায়নবিদদের রয়েছে একক অবদান । আজকের যে রকেট, সেটাও প্রথম আবিষ্কার করেন হযরত টিপু সুলতান রহমতুল্লাহি আলাইহি। প্লেন এবং ট্রেনও সর্বপ্রথম খলিফা মামুনুর রশিদ ও খলিফা হারুনুর রশিদ উনাদের সময়ে মুসলমান উনারা তৈরি করেছেন।
ভূগোলেও মুসলমান উনাদের অবদান এত বেশি যা জানলে অবাক হতে হয় । ৬৯ মুসলিম ভুগোলবিদ পৃথিবীর প্রথম যে মানচিত্র এঁকেছিলেন তা আজও বিশ্বের বিস্ময় । তার আরবী নাম হচ্ছে 'সূরাতুল আরদ' , যার অর্থ হচ্ছে বিশ্বের আকৃতি । জনাব ইবনে ইউনূছের অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা মন্ডল নিয়ে গবেষণার ফল ইউরোপ মাথা পেতে নিয়েছিল । জনাব ফারগানি, জনাব বাত্তানি ও আল-খাওয়ারিজমি প্রমুখের ভৌগলিক অবদান স্বর্ণমন্ডিত বলা যায় । কম্পাস যন্ত্রের আবিষ্কারকও মুসলমান । উনার নাম ইবনে আহমাদ ।
বিজ্ঞানের উপর মুসলমান উনাদের যেসব মূল্যবান প্রাচীন গ্রন্হ পাওয়া যায় আজও যা বিজ্ঞান জগতের পুজিঁর মতো ব্যবহৃত হচ্ছে । ২৭৫টি গবেষণামূলক পুস্তক যিনি একাই লিখেছেন তিনি হচ্ছেন জনাব আলকিন্দি । প্রাচীন বিজ্ঞানী জনাব হাসান, জনাব আহমাদ ও মুহম্মদ সম্মিলিতভাবে ৮৬০ সালে বিজ্ঞানের একশ রকমের যন্ত্র তৈরীর নিয়ম ও ব্যবহার প্রণালী এবং তার প্রয়োজন নিয়ে গ্রন্হ রচনা করে গেছেন ।
মুসলমান উনারাই পৃথিবীতে প্রথম চিনি তৈরী করেন । এছাড়া ভূতত্ব সম্বন্ধে বিখ্যাত গ্রন্হ 'মুজাম আল-উবাদা'র লেখক হচ্ছেন ইয়াকুব ইবনে আবদুল্লাহ ।
আরো মনে রাখা দরকার, অঙ্ক বিভাগের শূন্যের মূল্য অমূল্য এবং অপরিসীম । এই শূন্যের [০] জন্মদাতা মুহম্মদ ইবনে মূসা আল খাওয়ারিজমি । 'হিসাব আল জাবার ওয়াল মুকাবেলা' গ্রন্হ উনার বিরাট অবদান । গণিতশাস্ত্রের মৌলিক অংশ বীজগণিত আল জাবার বা Algebra উনার একক সৃষ্টি। তিনি বিখ্যাত জোর্তিবিদও ছিলেন । খলীফার অনুরোধে তিনি আকাশের একটি মানচিত্র আঁকেন এবং একটি পন্জিকা তৈরি করেন। তাকে সরকারি উপাধি দেওয়া হয়েছিল 'সাহিব আলজিজ' বলে ।
৭০২ খ্রিষ্টাব্দে তুলো থেকে তুলট কাগজ প্রথম সৃষ্টি করেন ইউসুফ ইবনে উমার । তার দু'বছর পর বাগদাদে কাগজের কারখানা তৈরী হয় । জাবীর ইবনে হাইয়ান - ইস্পাত তৈরী, ধাতুর শোধন, তরল বাস্পীকরণ, কাপড় ও চামড়া রঙ করা, ওয়াটার প্রুফ তৈরী করা, লোহার মরিচা প্রতিরোধক বার্নিস, চুলের কলপ ও লেখার পাকা কালি কলম সৃষ্টিতে স্মরনীয় হয়ে রয়েছেন ।
ম্যাঙ্গানিজ ডাই অক্সাইড থেকে কাচ তৈরীর প্রথম চিন্তাবিদ মুসলিম বিজ্ঞানী আররাজীও স্মরণীয় হয়ে আছেন । ইংরেজদের ইংরেজী শব্দে ঐ বিজ্ঞানীর নাম Razes লেখা আছে । একদিকে তিনি ধর্মীয় পন্ডিত অপরদিকে গণিতজ্ঞ ও চিকিৎসা বিশারদ ছিলেন । সোহাগা, লবণ, পারদ, গন্ধক, আর্সেনিক ও সালমিয়াক নিয়ে উনার লেখা ও গবেষণা উল্লেখযোগ্য । আরও মজার কথা , পৃথিবীতে প্রথম পানি জমিয়ে বরফ তৈরী করাও তার অক্ষয় কীর্তি। ইউরোপ পরে নিজের দেশে বরফ প্রস্তুত কারখানা চালু করে ।
No comments:
Post a Comment