Friday, February 14, 2014

একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক তাশরীফ কুল-কায়িনাতের জন্য সত্যিই এক মহা নিয়ামত

তামাম আলম যখন অশান্তির চরম দুঃসময় অতিক্রম করছিল, জিন-ইনসান অধীর আগ্রহে চাতকের মতো অপেক্ষমাণ ছিল একজন মুক্তিকামী আলোর দিশারীর জন্য। যিনি পৃথিবীর অবয়বটা পাল্টে দিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজাবেন। অফুরন্ত আলোর ছটায় উদ্ভাসিত করে দিবেন বিশ্বের প্রতিটি জনপদ। জিন-ইনসানের ব্যাকুলতার অবসান ঘটলো। মানবতার সামগ্রিক জীবনে শান্তির সৌরভ ছড়িয়ে দিতে, মুক্তির চিরন্তন সওগাত, অফুরন্ত রহমতের প্রদীপ্ত প্রতিশ্রুতি নিয়ে পৃথিবীতে তাশরীফ নিলেন, রহমতুল্লিল আলামীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। (সুবহানাল্লাহ)

উনি ছিলেন কুল-কায়িনাতের জন্য একমাত্র উত্তম অনুসরণীয় আদর্শ। জিন-ইনসানের জন্য তিনিই একমাত্র অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। জিন-ইনসান উনাকেই অনুসরণ করবে। বলাবাহুল্য, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সংস্পর্শে আসার কারণে, উনার সাথে নিছবত থাকার কারণে হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারও পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। (সুবহানাল্লাহ) শুধু কি তাই? এমনকি উনারও কায়িনাতের সকল মহিলাদের জন্য অনুসরণীয়-অনুকরণীয়, গ্রহণীয় আদর্শ হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন। পুরুষরা যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করবে ঠিক তেমনি মহিলারা হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে অনুসরণ করবে। কেননা মহিলাদের ইবাদত-বন্দিগী, মুয়ামালাত-মুয়াশারাত, উঠা-বসা, পোশাক-পরিচ্ছদ পুরুষদের সম্পূর্ণ বিপরীত। পুরুষরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করবে।
আর মহিলারা উনাকে অনুসরণ করার সাথে সাথে উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম তথা হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নবাস সালাম উনাদেরকেও অনুসরণ করবে। এখন কথা হলো- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা তো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সরাসরি দেখে দেখে আমল করেছেন। আর বর্তমান বিশ্বের জিন-ইনসান তো উনাদেরকে দেখতে পান না। কেননা উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাতে চলে গিয়েছেন। তাহলে বর্তমান বিশ্বের জিন-ইনসান কাকে দেখে আমল করবেন? ইবাদত-বন্দেগী, মুয়ামালাত, মুয়াশারাত, তাছাউফ ইত্যাদি কোথা থেকে শিখবেন?
এর জাওয়াবে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উলিল-আমর তথা হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহ উনাদের কর। এখানে হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহগণ উনাদেরকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহ উনাদের পরিচয় হচ্ছে উনারা সর্বক্ষেত্রে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক মতে-মত এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক পথে-পথ থাকবেন।  পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিভাষায় উনাদেরকেই বলা হয় নায়েবে নবী। উনাদের সম্পর্কেই পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ইরশাদ মুবারক হয়েছে. “তোমরা ওই ব্যক্তির অনুসরণ কর যিনি আমার দিকে রুজু হয়েছেন।” (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ১৫) উনাদের সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “শায়েখ বা মুর্শিদ তিনি মুরীদের মাঝে সেরূপ সম্মানিত মর্যাদাবান; যেরূপ উম্মতের মাঝে নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত মর্যাদাবান।” (সুবহানাল্লাহ)
অত্যন্ত খুশি আনন্দের বিষয় হচ্ছে- কায়িনাত যখন পথভ্রষ্টতার অন্ধকারে আচ্ছন্ন, যুলুম-অত্যাচার, চুরি-ডাকাতি, অবিচার-অনাচার, গান-বাদ্য করা শুনা, টিভি, সিনেমা, ডিস দেখা, ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, নগ্নতা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার; কলহ-দ্বন্দ্ব, হত্যাকা- মানুষের সাথী; মানবতা ভূলুণ্ঠিত; যালিমের দৌরাত্ম্য সর্বত্র; মজলুমের ফরিয়াদ শ্রবণের ব্যক্তির অভাব; সংস্কৃতির মাঝে অপসংস্কৃতির সয়লাব; নামে-বেনামে উলামায়েসূতথা ধর্মব্যবসায়ীদের রমরমা ব্যবসা; অলিগলিতে প্রবাহমান --ফকির পীরদের কারিশমা; পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে বাদ দিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে বেনামে ইহুদী-নাছারা কর্তৃক উদ্ভাবিত গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র বিশ্বময় ছড়ানো; ছহীহ আক্বীদার বিপরীতে কুফরী আক্বীদায় ভরপুর মানুষের মন-মগজ হতে শুরু করে বই-পুস্তক, পত্রিকাসহ গোটা কায়িনাত; হক্ব-নাহক বলার মহান ব্যক্তিত্বের চরম সঙ্কট।
ঠিক সেই মুহূর্তে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়া-মায়া করে এবং উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইহসান করে কুল-কায়িনাতকে হাদিয়া প্রদান করেছেন- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে যম, হাবীবে যম, গাউছুল যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে। (আলহামদুলিল্লাহ) যিনি কায়িনাতকে দিচ্ছেন কল্যাণময় পথের সুদিক নির্দেশনা, তাওহীদ রিসালাতের শিক্ষা, সত্য-মিথ্যা-পার্থক্য নিরূপণের ক্ষমতা, মানবতার আকাশচুম্বী উৎকর্ষ মর্যাদাবোধের চেতনা, যিনি দিচ্ছেন ব্যক্তিত্বের অনুভূতি, সচ্চরিত্র, মাধুর্যতা, সততা, ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ কর্মপন্থা, উত্তম আদর্শ; খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি পরম আস্থা নির্ভরতার যোগ্যতা, মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা মমত্ববোধ, সুদৃঢ় মনোবল ইত্যাদি। অর্থাৎ তিনিই হচ্ছেন নায়েবী নবী। ইতঃপূর্বে আলোচিত পবিত্র আয়াত শরীফ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী মিছদাক হচ্ছেন তিনি। আর উনার সাথে গভীর নিছবত থাকার কারণে, উনার সম্মানিতা আহলিয়া হওয়ার কারণে, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আলীমাহ, ফক্বীহাহ, ফাছীহাহ, বালীগাহ, তাযকীয়্যাহ, তাওসীয়াহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম হওয়ার মর্যাদা লাভ করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
পুরুষরা যেভাবে যামানার ইমাম মুজাদ্দিদ ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছিরত, ছুরত, মুবারক আমল আখলাক দেখে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছিরত-ছুরত, আমল-আখলাক শিখবেন। ঠিক তেমনিই সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন আফযালুন নিসা, ফযিলাতুন নিসা, ছহীবাতু মুজাদ্দিদে যম, ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে দেখে দেখে কায়িনাতের মহিলাগণ হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক ছিরত ছুরত, মুবারক আমল-আখলাক মুবারক শিখবেন। (সুবহানাল্লাহ) ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যেমন ২৪ ঘণ্টা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের দীদার মুবারক- মশগুল থাকেন। ঠিক তেমনি হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও ২৪ ঘণ্টা উনাদের দীদার মুবারক- মশগুল থাকেন। (সুবহানাল্লাহ)
যার কারণে উনাদের মুবারক আমল, মুবারক আখলাক, মুবারক ছিরত-ছূরত, মুবারক মুয়ামালাত-মুয়াশারাত, তাছাউফ সবই হচ্ছে পবিত্র সুন্নত মুবারক মুতাবিক। আর ওই পবিত্র সুন্নত মুবারক দেখে দেখে আজ কোটি কোটি পুরুষ-মহিলা হাক্বীক্বী সুন্নত শিখছেন। পথহারা, দিশেহারা পুরুষের সাথে সাথে মহিলারাও পথের দিশা পাচ্ছেন। বেপর্দা পুরুষ মহিলারা আজ পর্দা করা শিখছেন। ঈমানহারা পুরুষ-মহিলা আজ পবিত্র ঈমান পাচ্ছেন। কুফরী, শিরক, বিদয়াত-বেশরায় নিমজ্জিত, জিন-ইনসান আজ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করে সমস্ত অনৈসলামিক কার্যক্রম পরিত্যাগ করছেন। মোটকথা হচ্ছে ইতঃপূর্বে পুরুষ কোনো ওলীআল্লাহ উনার সাথে সাথে মহিলা ওলীআল্লাহ তাশরীফ নেননি। তাশরীফ নিলেও উনাদের তাজদীদী কাজ তেমন ব্যাপক ছিল না। কিন্তু রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি ধরার মাঝে এক বেমেছাল বিরল মহিলা ওলীআল্লাহ। (সুবহানাল্লাহ) একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে পৃথিবীতে উনার তাশরীফ সত্যিই বিস্ময়কর। হাক্বীক্বতে তিনি জিন-ইনসানের জন্য নিয়ামাতুল কুবরা তথা মহান নিয়ামত। যার শুকরিয়া জিন-ইনসান অনন্তকাল ধরে করেও শেষ করতে পারবে না।         

No comments:

Post a Comment