Sunday, February 23, 2014

শাহিদা, মুবাশশিরা, আশশাবীহাতু বিল মুজাদ্দিদে আ’যম, আযযাহরা, মালিকায়ে নিয়াম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সুমহান শান সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত

পবিত্র ছলাত ও সালাম মুবারক
অনন্তকাল শোকরগুজার যিনি সমস্ত ছানা-ছিফত এবং অবারিত প্রশংসার একচ্ছত্র অধিকারী, মহাপরাক্রমশালী, খলিক, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক ‍উনার প্রতি। আর অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক উনার প্রতি যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবীয়্যিন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুছ ছাক্বালাইন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।


অবতরনিকা

নাহমাদুহু ওয়ানু ছল্লিায়ালা রসূলিহিল কারীম ওয়ালা শায়িখিনা মুর্শিদিনা মুজাদ্দিদিনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম ওয়া আহলু বাইতিহিল কারীম আলাইহিমুস সালাম।
আল্লাহুম্মা ছল্লিয়ালা ছাইয়্যিদিনা শায়িখিনা মুর্শিদিনা মুজাদ্দিদিনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম ওয়া আহলু বাইতিহিল কারীম আলাইহিমুস সালাম আজমাঈন।
যামানার ইমাম, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম, গাউছুল আযম, ইমামে আযম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত দয়া ইহসান করে আমার মতো এক অধম, নালায়েক, গুণাহগারকে সুমহান ১৯ রবীউছ ছানী শরীফ উপলক্ষে মহা সম্মানিত আহলুবাইত শরীফ আলাইহমুস সালাম উনাদের মধ্যমণি সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিববারসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বরকতময় বিলাদত শরীফ দিবস উনার সম্মানার্থে, উনার সুমহান শান মুবারকে রচনা শরীফ লেখার জন্য কোশেশ করার তওফিক দান করেছেন। এ জন্য সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং সস্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পুত পবিত্র ক¦দম মুবারকে লুটিয়ে পড়ে ক্বদম মুবারকে পড়ে শুকরিয়া আদায় করি।
যদিও সম্মানিত এ বিষয় সম্পর্কে লিখার কোশেশ করারও নূন্যতম যোগ্যতা আমার নেই। প্রকৃতপক্ষে সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করারও যোগ্যতা আমার নাই। শুধুমাত্র সেই বুড়ির এক গাছি সূতা নিয়ে খিদমতে হাজির হওয়ার মতোই আমার ক্ষুদ্র এ কোশেশ। মামদূহ হযরত মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম এবং মহা সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কদম মুবারকে তওফিক ভিক্ষা চেয়ে, ফায়েজ ও রুহানী সংযোগ আরজু করে শুরু করছি।

ঙঙতগগ

১. হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদের ফাদ্বায়িল ফযিলত মুবারক
হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি চান হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ এ কথার অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি। প্রথমটি হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কিতাব। যার মধ্যে রয়েছে হিদায়েত মুবারক ও নূর মুবারক। তোমরা কিতাবুল্লাহ উনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধর। তিনি পবিত্র কিতাবুল্লাহ উনার প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন। অতঃপর বললেন, “দ্বিতীয়টি হলো, আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম বা (আওলাদগণ) বংশধরগণ। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি।’ (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা শূরা শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন -  
হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া। অর্থাৎ যারা উনাদের তাযীম-তাকরীম করবেন, সম্মান করবেন তারা নাজাত পাবেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো মুসলমান ব্যক্তি হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার বংশধর হওয়ার কারণে কুরাঈশ উনাদেরকে মুহব্বত না করবে। (তাফসীরে আহমদ, তাফসীরে ইবনে কাছির)  অর্থাৎ আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বতই ঈমান উনার অঙ্গ। সুবহানাল্লাহ!
বলাবাহুল্য, উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পূর্ণ মিছদাক হলেন নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

২.সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার আগমনের প্রেক্ষাপট:

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি (উনার খাছ ওলী হিসেবে) যাঁকে ইচ্ছা উনাকেই মনোনীত করেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
বলাবাহুল্য, আজ পৃথিবীতে সর্বোচ্চ ভয়ঙ্কর ফিতনা নারী ঘটিতফিতনা। সম্মানিত ইসলামিক আদর্শ উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই বর্তমান নারী সমাজে। চারদিকে বাতিলের জয়জয়কার আর নারী নিয়ে নোংরামী উল্লাস। নারী স্বাধীনতার আপ্ত শ্লোগানের আড়ালে নারীরা ভোগ্যপণ্যের নিম্নস্তরে পদার্পণ করেছে। আজ নারী সমাজ বাতিলের খপ্পরে পড়ে ভোগবাদী নেশায় বুদ হয়ে বহুরূপী দুনিয়ার কঠিন আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। তারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সুমহান আদর্শকে ছেড়ে কথিত স্বাধীনতাঅর্জনের দিবাস্বপ্নে বিভোর হয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে তাদের ইজ্জত-আবরুকে। ফলতঃ নিষিদ্ধপল্লীর মেয়ে আর ভদ্র পরিবারের মেয়ে পার্থক্য করা বড়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম নারী জাতিকে যে সীমাহীন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দিয়েছে, তারা সেই মর্যাদাকে ধরে রাখতে পারছে না। বরং তারা সেখানে কুঠারাঘাত করছে নিজের অজান্তেই।
শুধু কি অমুসলিম নারীদের এই করুণ পরিণতি? না; খোদ মুসলিম নারীরাও পর্দাহীনতা, নগ্নতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা, হারাম খেলাধুলা, গান-বাজনা, নাচ-অভিনয়, বিজ্ঞাপনী মডেল, অবৈধ ভালোবাসা, উল্কি আঁকা, নষ্টামী, বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে বিবিধ শরীয়তবিরোধী কাজে নিজেকে নোংরামীর শেষস্তরে পৌঁছে দিয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনে চরম হীনম্মন্যতা দেখিয়ে নিশ্চুপ থাকলেও দেহপ্রদর্শনীতে ক্ষুধার্ত বাঘের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ মুবারক তাদের মাঝে খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার। আজকের নারীরা এভাবেই তাদের মান-সম্মান-ইজ্জত-আবরুকে নাক ছিটকানী দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে আইয়ামে জাহিলায়াতের ন্যায় আচরণ জারি রাখায় তারা ইহজগতে বর্ণনাতীত লাঞ্ছিত, পদদলিত হচ্ছে এবং হতেই থাকবে। আর তাই সমাজে নারীমানেই ভোগ্যপণ্যহিসেবে তাদের নোংরা পরিচিতির বিস্তার ঘটছে। লানতের অগ্নি ছেয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। আর পরকালে জাহান্নামের ভয়ানক আযাব-গযবে পাকড়াও হওয়া ছাড়া বাঁচার উপায় থাকছে না কারোই।
মূলত, এই বেহায়া, পথহারা, নারী জাতিকে সঠিক সম্মানিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে, কায়িনাত মাঝে নারী জাতির সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে, লানত ও অশান্তির করুণ পরিণতি থেকে হিফাযত করতে এবং দুনো-জাহানে তাদেরকে মুক্তি দান করতে ধরার বুকে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বিশেষ নিয়ামত হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
শামসী চৌদ্দ শতাব্দীর নারী জাতির মুক্তির সেই আরশী নূর মুবারক হচ্ছেন- বেমেছাল মহিমান্বিত নিয়ামত, রহমত, বরকত, ফযীলতপূর্ণ, সাকীনাযুক্ত এবং লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আযম, ক্বায়িম-মাক্বামে যাহরা আলাইহাস সালাম, ত্বহিরা, ত্বইয়িবা, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল হযরত শাহযাদী ছানী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। যিনি কুল-কায়িনাতে নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম মুবারক লক্ববে মশহুর। সুবহানাল্লাহ!
যিনি উম্মুল মুমিমীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম। সুন্নতের রঙে বেমেছাল সৌরভী ফুল। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটা শাখায় ব্যাপক ব্যুৎপত্তির অধিকারিণী। ইলম, আমল, ইখলাছ এবং কামালতে প্রস্ফুটিত কুদরতী ফোয়ারা। মহান আল্লাহ পাক ও উনার পেয়ারা হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সর্বশ্রেষ্ঠা মুরাদ ত্ববকার হাবীবা। জাহিরী-বাতিনী, জিসমানী-রূহানী সর্বদিক থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার ও হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে রয়েছে উনার বেমেছাল নিগূঢ় তায়াল্লুক-নিছবত। উনার চলাফেরা উঠাবসা উনাদের দেখে দেখেই হয়। সুবহানাল্লাহ!
সেই কামিলা, আরিফা, আলিমা, হাবীবা উনার তাছিরে পাথরসম কুফরী হৃদয় বিগলিত হয়। থরথর করে কেঁপে উঠে যালিম শক্তি। মাথা নুয়াতে বাধ্য হয় সমস্ত জাহিলিয়াতের দেহপ্রদর্শনীর নোংরামী অপশক্তি। লজ্জায় মস্তক অবনত করে বেহায়া নারী সমাজ। উনার মুবারক ছোহবত পথহারা নারীদেরকে পৌঁছে দেন এক মাশুকা বন্ধনে ইলাহী এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইশকী নহরধারায়। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৩. মুবারক নছবনামা

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদেরকে গোত্রে গোত্রে, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা একে অপরের পরিচয় লাভ করতে পার।
হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক বংশ হচ্ছেন- সাইয়্যিদ। উনার মুবারক ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছেন নববী রক্ত মুবারক উনার ঝর্ণাধারা। মুবারক নছবনামা পরম্পরায় সম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম উনাদের দিক থেকে তিনি হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। নববী রক্ত মুবারক উনার ধারাবাহিকতায় সঙ্গতকারণেই তিনি আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাঈশী। অর্থাৎ তিনি সাইয়্যিদ
এক কথায় তিনি আওলাদে রসূল তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা নাতনী। পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, গরীবে নেওয়াজ হযরত সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সনজরী (খাজা ছাহেব) রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একান্ত মাহবুব ছফরসঙ্গী হিসেবে ওলীয়ে মাদারজাদ সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবূ বকর মুজাদ্দিদী বরকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আজমীর শরীফ আগমন করেন। দ্বীনি হিদায়েত খিদমতের আনজাম দিয়ে তিনি সেখানেই শায়িত রয়েছেন। উনার অধস্তন সম্মানিত সন্তান হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দিন আলাইহিস সালাম তিনি মানুষদেরকে হিদায়েতের নিমিত্তে বাংলাদেশে আসেন। উনার সম্মানিত ছাহেবযাদা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মালাউদ্দিন আলাইহিস সালাম। উনার সম্মানিত ছাহেবযাদা হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ ইলাহী বখ্শ আলাইহিস সালাম। উনার সম্মানিত ছাহেবযাদা ওলীয়ে মাদারযাদ, কুতুবুল আলম, ছুফীয়ে বাতিন হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম। উনার নূরী শাহযাদা ওলীয়ে মাদারযাদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম- যিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মক্বাম, বর্তমান পনের হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। আর উনারই পূত-পবিত্রা সম্মানিতা দ্বিতীয়া আওলাদ হচ্ছেন নিবরাসাতুল উমাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৪. ওলীয়ে মাদারযাদ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম
উনার শ্রেষ্ঠত্ব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি (উনার খাছ ওলী হিসেবে) যাঁকে ইচ্ছা উনাকেই মনোনীত করেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
মুজাদ্দিদে আযম, গাউছূল আযম, দস্তগীর, কুতুবুল আলম, কাইয়্যিমুয যামান, আওলাদে রসূল মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত পিতা হিসেবে উনার সাথে রয়েছে বেমেছাল জাতী তায়াল্লুক-নিছবত। সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক কোলে লালিত-পালিত হওয়ার পাশাপাশি হযরত উম্মুল ওয়ারা, উম্মুল খায়ের, নক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা আলাইহাস সালাম উনার স্নেহ-মমতায় গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। দায়িমী সুন্নতের ইত্তেবা, যিকির-ফিকির, রিয়াজত-মুশাক্কাত, ইলমের প্রখরতা, ইবাদতে একাগ্রতা এবং তাক্বওয়া-পরহেজগারীতে ফারীহা, নূরে হাবীবা, হাদীয়াতুল মাদানী, হাদীয়ে মাদারযাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সুমহান ব্যক্তিত্বা হিসেবে ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত (সুবহানাল্লাহ!)।
জাহিরী-বাতিনীভাবে খুব কম সময়ে ইলমে শরীয়ত, মারিফাত, হাক্বীক্বত উনার স্বর্ণশিখরে পদাচরণ ঘটে উনার। কামালতের শ্রেষ্ঠস্তরে নিরবছিন্ন বিচরণ উনার। দুনিয়াবী বয়স মুবারক যখন অল্প তখন থেকেই ফরয, ওয়াজীব, সুন্নতে মুয়াক্বাদা, সুন্নতে যায়িদা এমনকি মুস্তাহাব বিষয়গুলোও গুরুত্বসহকারে পালন করেন। ফলে কুল-কায়িনাতে মহান আল্লাহ পাক উনার বেমেছাল আল্লাহওয়ালী হিসেবে উনার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটে যায়। যদিও তিনি আগমনগত দিক থেকেই বেমেছাল আল্লাহওয়ালী। এজন্য উনার মুবারক শানে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, ‘ওলী তো ওলী, যদিও তিনি শিশু হন না কেন। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে সৃষ্টিগতভাবেই উনার বেমেছাল জাহিরী-বাতিনী তায়াল্লুক-নিছবত। এজন্য তিনি সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, রোগ-শোক, আহার-অনাহার, আমল-আখলাক, রীতি-নীতি, নিদ্রা-জাগরণ, শয়নে-স্বপনে সর্ব অবস্থায় দায়িমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধ্যানে-খেয়ালে মশগুল থাকেন। মুবারক এই ধ্যান-খেয়ালের নিবিষ্টতা এত গভীর যে, মুবারক দীদারের জন্য নিদ্রার প্রয়োজন হয় না। নিদ্রা ও জাগরণ উভয় অবস্থায় অনুক্ষণ দীদার মবারক সংঘটিত হয়। প্রতিনিয়ত খোদায়ী মদদ, ইলহাম-ইলকা আর মিল্লাদুনকা ইলমা উনার জন্য অত্যন্ত সহজাত বিষয় হয়ে যায়। এককথায় হুবহু নকশা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার। উপরন্তু উনার মুবারক ধমনীতে প্রবাহমান নববী রক্তের নহরধারা। তাইতো মুবারক আচরণ, নূরানী ব্যক্তিত্ব মুবারক, প্রজ্ঞাপূর্ণ নছীহত মুবারক, ইলমে জাহির-বাতিনের তালীম-তালক্বীনে নববী ধারার আরশী নূর মুবারক প্রকাশ পেয়ে যায়। কুল-কায়িনাতের সর্বত্র প্রতিধ্বনি হতে থাকে শ্রেষ্ঠা আল্লাহওয়ালী ফারীহা, নূরে হাবীবা, হাদীয়াতুল মাদানী, হাদীয়ে মাদারযাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম হিসেবে। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৫. মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার মুজিযা শরীফ উনাদের বহিঃপ্রকাশ:
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বেমেছাল কুদরত মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছোল মুজিযা শরীফ উনাদের অনুপম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ক্বায়িম-মক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদাতুন নিসা ফিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে। উনার ছিরত মুবারক, ছূরত মুবারক, চলাফেরা মুবারক, কথাবার্তা মুবারক, জ্ঞান-গরীমা মুবারক, সুন্নত মুবারক পালনের দৃঢ়তা ইত্যাদির ন্যূনতম আলোচনা করলেই তা বুঝা যাবে। সাধারণ কোনোও ব্যক্তিত্বের দ্বারা এভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। একমাত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক জাহিরী উপস্থিতে হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেভাবে জীবনযাপন করেন; তিনিও সেভাবে জীবনযাপন করেন। তাহলে এখন মহান আল্লাহ পাক উনার বেমেছাল কুদরত মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছোল মুজিযা ব্যতীত কী করে সম্ভব!
কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একমুদ বা অর্ধমুদ দান করে যে ফযীলত-বরকত পেয়েছেন; এখন উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করলেও তেমন ফযীলত-বরকত হাছিল করতে পারবে না। মূলত, হযরত উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ক্বায়িম-মাক্বাম তথা হুবহু নকশা হওয়া মহান আল্লাহ পাক উনার বেমেছাল কুদরত মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছোল মুজিযা শরীফ উনাদের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া সম্ভব নয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কুদরতী অবস্থান বিষয়ে পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই হযরত আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা আমার কুদরতী জুব্বা মুবারক-এ আবৃত।অর্থাৎ কুদরত মুবারকেই উনারা (নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম) সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার পথহারা বান্দীদেরকে হিদায়েতের লক্ষ্যে কায়িনাতে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য ক্বায়িম-মাক্বামে ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদাতুন নিসা ফিল জান্নাহ, বাশীরা, নাজীরা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ামতস্বরূপ পাঠিয়েছেন মাত্র। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৬. কুদরতি বেমেছাল ইলম মুবারক :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আয় আল্লাহ পাক! আপনি আমাদের ইলম বৃদ্ধি করে দিন।
অর্থাৎ যারা সাধারণ উম্মত তাদেরকে বারবার আরজি করতে বলা হয়েছে। বান্দারা উম্মতরা ঠিকমতো আরজি করলে এবং ইলম হাছিলের কোশেশ করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা বান্দাকে কিছু ইলম দান করেন। মূলত, ইলম মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনাদের তরফ থেকে বিশেষ নিয়ামত। ইচ্ছা করলেই বান্দা ছহীহ ইলম হাছিল করতে পারবে না। ইলম হাছিল করতে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনাদের রহমত, বরকত, দয়া-দান, ইহসান লাগবে।
 পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যার ভালাই চান তাকে দ্বীনের ছহীহ সমঝ হাদিয়া করেন। অর্থাৎ যিনি খাছ ব্যক্তিত্ব হন উনাকে যিনি মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা বেমেছাল কুদরতীভাবে ইলম হাদিয়া করে থাকেন।
আলিমা, জামিলা, কামিলা, আরিফা, আবিদা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা জাহিরী-বাতিনীভাবে বেমেছাল ইলম হাদিয়া করেছেন। পবিত্র ইলম মুবারক উনার যতগুলো শাখা-প্রশাখা রয়েছে- প্রতিটা শাখাতেই উনার রয়েছে পূর্ণ বিচরণ ও কামালিয়ত। তিনি জাহিরী ও বাতিনীভাবে কুদরতী ইলম মুবারক দ্বারা খাছভাবে পরিপূর্ণ। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র তাফসীর, পবিত্র শরাহ, ফিক্বাহ, মানতিক ও হিকমত, বালাগাত, কালাম শাস্ত্র, বিভিন্ন ভাষার ব্যাকরণ ও সাহিত্য, মুনাজারা, দর্শন, ফারায়িজ, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সমাজকল্যাণ, ভূগোল, মহাকাশ শাস্ত্র, গণিত, চিকিৎসা শাস্ত্র, ইসলামী আইন, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, পোশাক বিজ্ঞান, বিভিন্ন ধর্মের আইন ইত্যাদিসহ সমস্ত বিষয়ের অগাধ ইলম ও প্রজ্ঞার অধিকারিণী তিনি। পবিত্র ইলম উনার প্রতিটি স্তরে আওলাদে রাসূল, সাইয়্যিদাতুন নিসা, ছাহিবাতুল কুরআন হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার রয়েছে ব্যাপক দক্ষতা ও পা-িত্য। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৭. তিনি সাধারণ কোনোও মহিলাদের মতো নন; সাধারণ কোনো পুরুষও উনার সমকক্ষ নয় :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “হে উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা অন্য কোনো মহিলাদের মতো নন।সুবহানাল্লাহ!
আওলাদে রসূল, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকিয়্যাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হযরত উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম হওয়ার কারণে তিনিও অন্য কোনোও মহিলাদের মতো নন। হযরত উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে কেউ যদি দেখতেন, তাহলে কারও সাধ্য ছিলো না যে- আওলাদে রসূল, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকিয়্যাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার আচার-ব্যবহার, চলাফেরা, কথাবার্তা, উঠাবসা, হাঁটাচলা, আহার-বিহার, শয়ন-স্বপন, ইলম-প্রজ্ঞা, মুয়ামিলাত-মুয়াশিরাত, ইবাদত-বন্দেগী, তাক্বওয়া-পরহেজগারিতা, মানবকল্যাণ, দান-সদকা, কুল-কায়িনাতের প্রতি দয়া-মায়া প্রদর্শন ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে উনাদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারে। সুবহানাল্লাহ
এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার শান মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “উনার সমকক্ষ কোনো পুরুষও নন।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ)
এতো বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, শান-মান মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সৃষ্টিগতভাবেই হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যা কুল-কায়িনাতের পক্ষে চিন্তা করাও যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ব্যাপার। যাঁদের মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে বেমেছাল তায়াল্লুক-নিছবত আছে উনারাই কেবল আওলাদে রসূল, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকিয়্যাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শান কিছুটা উপলব্ধি করতে পারেন। সাধারণ মানুষ বুঝবে কি করে? বুঝার সাধ্যই বা কোথায়?
ঙঙতগগ
৮. মুবারক ছোহবতে বদকার মহিলা নেককারে পরিণত হয় :
হযরত উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক ছোহবতে মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুন্না উনারা দুনিয়াতে থাকতেই মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রেযামন্দি লাভ করেছিলেন। জাহিলীয়াতের সমস্ত বেহায়া, বেশরা সমূলে মূলোৎপাটন হয়েছিলো হযরত উম্মুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক রূহানী তাছির মুবারক-এ।
ঠিক ছামীনাহ, ছাইমাহ, ছালিহাহ, ছুফিয়্যাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক বেলায়েতী নূরানী তাছিরে আজকের পথহারা মহিলারা বদকার থেকে আল্লাহওয়ালীতে পরিণত হচ্ছে।
কিতাবে উল্লেখ করা হয়, “ছোহবত (সঙ্গ) তাছির করে।অর্থাৎ বদকারের ছোহবতে থাকলে বদকার হয় এবং নেককার উনাদের ছোহবতে থাকলে নেককার তথা আল্লাহওয়ালা, আল্লাহওয়ালী হয়। এ কারণেই হযরত শায়েখ সাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “নেক ছোহবত মানুষকে নেককার করে দেয়, আর বদ ছোহবত মানুষকে বদকার বানিয়ে দেয়।
এর বাস্তব মেছাল হিসেবে আমরা প্রত্যক্ষ করছি যে, এ ফেৎনা ফাসাদের যুগে, নারীকুলের মুক্তির পথ দেখাতে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বিপদগ্রস্থ, পথভ্রষ্ট, নারীকুলকে অন্ধকার থেকে তুলে এনে মুক্তির পথ দেখাচ্ছেন, আলোর পথ দেখাচ্ছেন, হেদায়েতের পথে পরিচালিত করছেন। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, পাপ পঙ্কিলতা আর কুফরীতে নিমজ্জিত নারীকুলকে তিনি তাযকিয়া করছেন, তাদের অন্ধকার অন্তরে পবিত্র সুন্নাহর আলো জালাচ্ছেন, তাদের নিফাকিতে ভরপুর অন্তুরগুলো পরিশুদ্ধ করে দিচ্ছেন এবং শুধু তাই নয়, উনার মুবারক ছোহবতে ধন্য যে সকল মহিলা, উনার ফায়েজ তাওয়াজ্জুতে আলোকিত যে সকল মহিলা রয়েছেন, তাদেরকে তিনি সরাসরি! মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে তাওয়াল্লুক, নিছবত এবং রুহানী সংযোগ স্থাপন করে দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
এমন কোন হক্ব তালাশী মহিলা নেই যিনি হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে প্রথমবার দেখার পর অন্তরে প্রশান্তি অনুভব করেনি। এমন কোন মুক্তিকামি মহিলা নেই- যিনি প্রথমবার উনার মুবারক ছোহবতে এসে মুক্তির পথ না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এমন কোন ইলিম অন্বেষণকারী মহিলা নেই যিনি মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করে আলিমা না হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এমন কোন মহিলা নেই যিনি উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করে আল্লাহ ওয়ালী হননি।  এমন কোন মহিলা নেই যিনি কঠিন মুসিবতে পড়ে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে স্বরণ করেছেন অথচ বিপদ থেকে কুদরতিভাবে রক্ষা পায়নি। এমন কোন মহিলা নেই।
এমন শত সহস্র হাজারো, লক্ষ কোটি ঘটনা রয়েছে যা সালিক-সালিকা মুখ ফুটে প্রকাশ করেনি, কাগজে লিখে হয়নি, জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি- এমন লক্ষ কোটি কারামত মুবারক রয়েছে।  শুধু মুহব্বতকারী সালিক সালিকাগণই নন, বরং অন্তরে বিদ্বেষ পোষণকারী অনেক ফাসিক-ফুজ্জার, মুনাফিক, কাফির-মুশরিক রয়েছে যারা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কারামত মুবারক, উনার রোব মুবারক প্রত্যক্ষ করেছে, হারে হারে-অস্থি মজ্জায় টের পেয়েছে। কিন্তু জন সম্মুখে প্রকাশ করেনা। কেননা, এসব কথা একটা কাফিরও যদি প্রকাশ করে তবুও সে কথা শুনে অনেক পথ হারা লোক হেদায়েতের পথ পেয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
ছামীনাহ, ছাইমাহ, ছালিহাহ, ছুফিয়্যাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবতের ফায়েজী রোবে-দাপটে সমস্ত বেহায়াপনা, অশ্লীলতা আজ ভয়ে কেঁপে উঠেছে। উনার নেক ছোহবত মুবারক উনার উসীলায় নিজেকে আল্লাহওয়ালী উনাদের কাতারে সামিল করে নিচ্ছেন অসংখ্য অগণিত পথহারা-বেপর্দা মহিলারা। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

৯. ফারীদাহ, ক্বারীনাহ, ক্বারীবাহ, কাবীরাহ, কাছিত্বাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল হিজাব পালন :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা পর্দা বা হিজাবকে সমস্ত মহিলাদের জন্য ফরয করে দিয়েছেন। আর হিজাব পালনের মধ্যেই নারী জাতির মর্যাদা-শ্রেষ্ঠত্ব তথা ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান নিহিত রয়েছে। মণি-মুক্তা দামি হওয়ার দরুন যেমন খোলা ফেলে রাখলে চোরে নিয়ে পালায়, তেমনি মহিলাদেরকেও হিজাবহীন অবস্থায় রাখলে পরপুরুষে খারাপ ব্যবহার করে থাকে। মণি-মুক্তা রাখার নিরাপদ জায়গা হচ্ছে নিরাপত্তা বেষ্টিত ঘরের সিন্দুক, তেমনি সম্মানিতা নারীদের নিরাপদ অবস্থান হচ্ছে সর্বাবস্থায় হিজাবে থাকা।
ফারীদাহ, ক্বারীনাহ, ক্বারীবাহ, কাবীরাহ, কাছিত্বাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল হিজাব পালন, যা কল্পনা করা কঠিন ব্যাপার। উনার মুবারক ছায়াও কখনো কোনো পরপুরুষ দেখেনি। এমনকি কোনো পর্দাহীন বেহায়া মহিলাও উনাকে দেখতে পায়নি। উনার মুবারক কণ্ঠস্বর কোনো পরপুরুষ কখনো শুনেনি। বলতে গেলে সূর্যের কিরণও উনাকে স্পর্শ করেনি। সুবহানাল্লাহ! এতো বেমেছাল হিজাব মুবারক উনি পালন করেন। ফারীদাহ, ক্বারীনাহ, ক্বারীবাহ, কাবীরাহ, কাছিত্বাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মাঝে এখন আমরা সেই নববী যুগের হিজাব পালনের হুবহু বেমেছাল নকশা মুবারক দেখতে পাচ্ছি। যার কারণে বেহিজাব নারীরা উনার বেমেছাল হিজাব পালনের তাছিরে আপসেআপ পর্দানশীন হয়ে যাচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১০. রফীক্বাহ, রুকাইয়্যা, হাবীবাতুল্লাহ, নূরিয়্যাহ, ফখরিয়্যাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সৃষ্টিগতভাবেই মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীতা হাবীবা :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি (উনার খাছ ওলী হিসেবে) যাঁকে ইচ্ছা উনাকেই মনোনীত করেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন একা ছিলেন। কুল-কায়িনাতের কোনোও অস্তিত্ব ছিলো না। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইচ্ছা করলেন প্রকাশ ঘটবেন। তখনই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মনোনীত করেছিলেন উনার পরে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে। এভাবেই মনোনীত হওয়ার বা করার বিষয়টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং বিশেষ শ্রেণীর হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে মনোনীত করেন।
অর্থাৎ হযরত আউলিয়ায়ে ক্বিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে অনেকে যিকির-ফিকির, রিয়াজত-মাশাক্কাত করার মাধ্যমে ওলীআল্লাহ হন। আবার কেউ আছেন যাঁদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টিগতভাবেই মনোনীত করেন ওলীআল্লাহ হিসেবে। আর যাঁদেরকে মনোনীত করা হয় উনাদের শান-মান, মর্যদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান বেমেছাল থাকে আগমনগতভাবেই। অল্প বয়স মুবারক থেকেই উনাদের মাঝে বেমেছাল ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠে।
রফীক্বাহ, রুকাইয়্যা, হাবীবাহ, নূরিয়্যাহ, ফখরিয়্যাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সৃষ্টিলগ্ন থেকেই মুরাদ ত্ববকার আল্লাহওয়ালী হাবীবা হিসেবে মনোনীত করেন। সুবহানাল্লাহ! এজন্য আগমনগতভাবেই তিনি সর্বগুণে গুণী, সর্বজ্ঞানে জ্ঞানী। ইলমের প্রতিটি শাখায় উনার অবাধ পা-িত্যের সাথে বিচরণ। শিশুকাল থেকেই পূর্ণরূপে দুনিয়া বিরাগী, পরকালের প্রতি অত্যন্ত নিমগ্ন, দায়েমীভাবে সুন্নতে মশগুল, পর্দা পালনে বেমেছাল ও কঠোর, অপছন্দনীয় কাজ সম্পর্কেও সদা সতর্ক, তাক্বওয়া সমৃদ্ধ ইবাদতে বলীয়ান, দুনিয়া ক্ষমতা ও মাল-আসবাবের আকাঙ্খা থেকে পরিপূর্ণরূপে পূতপবিত্র। সুবহানাল্লাহ! ফলে মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল মাহবুবা ওলী হিসেবে উনার মনোনীতা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ ঘটায় কুল-কায়িনাত সুশোভিত হয়ে উঠে।
ঙঙতগগ

১১. ফাক্বীহা, মাশুকাহ, গফীরাহ, নাছিবাহ, রহীমাহ হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার লক্বব মুবারক অসংখ্য-অগণিত :
দযিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা নিজে অসংখ্য লক্বব মুবারক ব্যবহার এবং প্রকাশ করে বান্দা-বান্দী ও উম্মতকে লক্বব মুবারক ব্যবহার এবং প্রকাশ করার আদত শিক্ষা দিয়েছেন। যার জন্য লক্বব ব্যবহার করা খাছ সুন্নাতুল্লাহ এবং সুন্নতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, লক্বব হচ্ছে কোনোও ব্যক্তির মর্যদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, ইজ্জত-সম্মানের বহিঃপ্রকাশ। যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা যাঁকে যে পরিমাণ বিশেষ নিয়ামত হাদিয়া করেন তিনি সে অনুযায়ী মর্যদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত লাভ করে থাকেন বা সে অনুযায়ী উনার লক্বব মুবারক হয়ে থাকে। সেদিক দিয়ে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার লক্বব মুবারক হচ্ছে অসংখ্য, অগণিত। কেননা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে বেমেছাল শান-মান, মর্যদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, ইজ্জত-সম্মান আগমনগতভাবেই হাদিয়া করেছেন। উনার অসংখ্য, অগণিত লক্বব মুবারক-এর মধ্য হতে নিম্নে সামান্য কিছু লক্বব মুবারক মানুষদের বরকত লাভের জন্য উল্লেখ করা হলো:
লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আযম, কুতুবুল আলম, ত্বহিরাহ, ত্বইয়্যিবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুকাহ, গফীরাহ, নাছিবাহ, রহীমাহ, রফীক্বাহ, রুকাইয়্যা, হাবীবাহ, নূরিয়্যাহ, ফখরিয়্যাহ, ফারীদাহ, ক্বারীনাহ, ক্বারীবাহ, কাবীরাহ, কাছিত্বাহ, ছামীনাহ, ছাইমাহ, ছালিহাহ, ছুফিয়্যাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসা, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকিয়্যাহ, জাকিয়্যাহ, নাজিয়াহ, উম্মুল ওয়ারা, আফদ্বালুন নিসা বাদাল উম্মাহাতিল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদা, আলিমা, জামিলা, কামিলা, আরিফা, আবিদা, ফারীহা, নূরে হাবীবা, হাদীয়াতুল মাদানী, হাদীয়ে মাদারযাদ, ওলীয়ে মাদারযাদ, ক্বায়িম-মক্বামে ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদাতুন নিসা ফিল জান্নাহ, বাশীরা, নাজীরা, শাহিদা, মুবাশিশরা, আশশাবীহাতু বিল মুজাদ্দিদে আযম ,আযযাহরা, মালিকায়ে নিয়াম, ছহিবাতুন নিয়াম, মালিকায়ে আযম, মালিকায়ে আলম, ছহিবে গাফফার, হুমায়রা, ছিদ্দীক্বা, হাবীবাতুল্লাহ, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, নাছীরা, মানছুরা, গালিবা, আফীফা, ছহিবে নূর, উম্মুল খইরা, মুনিরা, শরীফা, বাহরুল আলীমা, জামিউল মাক্বাম, হাদীয়ে জাহান, কুররতু আইনি মুর্শিদুনা আলাইহিস সালাম, মুখলিছা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম, ছাহিবাতুল কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছহিবে যিকির, আফযালুন নিসা, মাখযানুল মারিফা, রাহনুমায়ে দ্বীন, মাজীদাতুন নিসা, হামীদাতুন নিসা, বাহরুল উলুম, ছহিবাতুল হিকাম, আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

. হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হুমায়রাছিদ্দীক্বালক্বব মুবারক উনার হুবহু মিছদাক :
হযরত আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণ উনাদের খাছ ও অন্যতমা সদস্য হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তরফ থেকে মনোনীত হয়েই তিনি যমীনে আগমন করেছেন। আমাদের একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, তা হলো- হযরত মুজাদ্দিদে কিরাম (আলাইহিমুর রহমাহ) উনারা যেমনিভাবে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পক্ষ হতে মনোনীত, তদ্রƒপ উনাদের যাঁরা লখতে জিগার পবিত্র আওলাদ উনারাও মনোনীত। এছাড়া যাঁরা আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আরো খাছভাবে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পক্ষ হতে মনোনীত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উনাদের পবিত্রতা, খুছুছিয়ত, ফযীলত, ছানা-ছিফত বর্ণনা করা, উনাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করা, মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম করা ইত্যাদি বিষয়গুলো পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে।
কাজেই উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন- যামানার মহান মুজাদ্দিদ ও ইমাম, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, মুজাদ্দিদে আযম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লখতে জিগার, ছানী আওলাদ, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মুল মুমিনীন হুমায়রা হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি এমনিতেই উম্মুল মুমিনীন হুমায়রা হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার ক্বায়িম-মাক্বাম নন। যে মহান খুছুছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক-এর কারণে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি হুমায়রাছিদ্দীক্বালক্বব মুবারক-এ ভূষিত হয়েছেন, সে একই খুছুছিয়ত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক-এর অধিকারিণী উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন খুব দ্রুত বেড়ে উঠা মেয়েদের একজন। মাত্র নয়-দশ বছর বয়স মুবারক-এ তিনি বেশ বেড়ে উঠেছিলেন এবং অনন্য খুবছূরত ছিলেন। উনার এ পবিত্র খুছুছিয়ত মুবরক-এর কারণে উনাকে হুমায়রাবলা হতো। আর এসব গুণ-বৈশিষ্ট্য মুবরক-এর হুবহু মিছদাক হলেন উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
একইভাবে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি যে পিতার কারণে ছিদ্দীক্বাছিলেন, তা নয়। বরং তিনি নিজ বৈশিষ্ট্য-গুণেই ছিদ্দীক্বালক্বব মুবারক-এ ভূষিত। উনার ছিদ্দীক্বা বা সত্যবাদিনী হওয়ার স্বপক্ষে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআনুল কারীম উনার পবিত্র আয়াত শরীফও নাযিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তদ্রুপ উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি যে ছিদ্দীক্বাসে বিষয়ে অনেক বাস্তব ঘটনাই রয়েছে। তার মধ্যে একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করা হলো। ঘটনাটি হলো, এক পীরবোন যিনি অবিবাহিতা থাকাকালে উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম এবং পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কিছু খিদমত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। খাদিমা হওয়ার সুবাদে উনাদের সাথে ওই পীরবোন কুড়িগ্রাম জেলা শহরে এক বিশেষ সফরেযান। সেখানে স্মৃতি হোটেলে সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক তালীমী মজলিসের ব্যবস্থা করা হয়। সেই তালীম ও ছোহবত মুবারক গ্রহণের জন্য অনেকের মতো স্থানীয় এক পীরবোন গিয়েছিলেন, যাঁর বড়ভাই খোদ দরবার শরীফ-এ খিদমতে নিয়োজিত। ছোহবত ও তালীম শেষে স্থানীয় ওই পীরবোন ছফরসঙ্গী খাদিমা পীরবোনের সাথে কথা বলছিলেন। সেটা প্রত্যক্ষ করে উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি তখন খাদিমা পীরবোনকে বলেছিলেন, “বেশি খাতির জমায়ে কথা বলিও না, পরে আবার ভাইয়ের বউ করিয়ে নিবে।উনার এ কথা মুবারক তিনি অনেক পূর্বে বলেছিলেন। কিন্তু অনেক বছর পর সে কথা মুবারক বাস্তবে পরিণত হয়ে যায়। যাঁরা ছিদ্দীক্বাত্ববকার অধিকারী উনাদের সমস্ত কথা মুবারক-ই অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে পারণত হয়ে যায়, এটা তার ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত মাত্র। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১৩. মোহতাজ পুরো কায়িনাত :
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উনার পদাঙ্ক অনুসরণ কর, যিনি আমার দিকে রুজু হয়েছেন।অর্থাৎ হে কায়িনাতবাসী! তোমরা উম্মুল ওয়ারা, নাজিয়াহ, আফদ্বালুন নিসা বাদাল উম্মাহাতিল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবতের মোহতাজ হয়ে যাও, উনাকে পদেপদে অনুসরণ-অনুকরণ কর, কেননা তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে আখাছ্ছুল খাছভাবে রুজু হয়েছেন তথা বেমেছাল আল্লাহওয়ালী তিনি। আর উনার কাছেই রয়েছে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মারিফাত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক।
মৌমাছি ফুলের খোঁজে হন্য হয়ে ঘুরে মধু আহরণ করার জন্য। শিশু মাকে খোঁজে একান্ত কাছে রেখে স্নেহের পরশ পাওয়ার জন্য। পশু-পাখি সকালে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে খাবারের জন্য। মানুষ কাজ শেষে ঘরে ফিরে ছেলে-মেয়ে-আহলিয়া বা মা-বাবার জন্য। ছাত্ররা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা বা শিক্ষক-উস্তাদের কাছে ছোটে পড়ালেখার জন্য বা ইলম অর্জনের জন্য। অর্থাৎ কায়িনাতের সবাই কোনোও না কোনো নির্দিষ্ট দিকে মোহতাজ হয়ে আছে। কিন্তু যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মারিফাত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হিস্যা লাভ করে নেককার-আল্লাহওয়ালা বান্দা-বান্দী হওয়ার জন্য উনার মোহতাজ পুরো কায়িনাতবাসী। সৃষ্টিজগতের সমস্ত চাহিদা পুরণ করার অপরিসীম জাহিরী-বাতিনী, জিসমানী, রূহানী, দুনিয়াবী নিয়ামত সম্ভার রয়েছে উনার মুবারক ক্বদম তলে। উনার সাথে রূহানী নিছবত বা সম্পর্ক তৈরি হলে সেই জান্নাতী নিয়ামত মুবারক-এর হিস্যা পাওয়া যায়। এছাড়া সম্ভব নয়। তাই ইচ্ছা হোক আর অনিচ্ছা হোক উনাদের কাছে যেতে বাধ্য সমস্ত মাখলুকাত।
উম্মুল ওয়ারা, নাজিয়াহ, আফদ্বালুন নিসা বাদাল উম্মাহাতিল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এতো বেমেছাল খুছূছিয়ত-বৈশিষ্ট্য, ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যদা-মর্তবা দান করেছেন, যা কুল-কায়িনাত কল্পনা করে শেষ করতে পারবে না। উনার নিয়ামত সম্ভারের শুরু আছে কিন্তু শেষ কোথায় তা কেউ জানে না। সবাই নিয়ামত মুবারক-এর হিস্যা পেতে উনার প্রতি মুহতাজ রয়েছে। এজন্য এরূপ প্রসঙ্গেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক উনার হয়ে যান, কায়িনাতবাসীও উনার হয়ে যায়। অর্থাৎ কুল-কায়িনাতের সবাই হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার গোলাম, আর তিনি মালিকা। উনার মুহতাজ সারা কায়িনাতবাসী।
আর উনার প্রতি খালিছভাবে মুহতাজ থেকে যে যা আরজু করবে সে ওই নিয়ামত পাবেই পাবে (ইনশাআল্লাহ!)। এখানে দুটি বাস্তব ঘটনা উল্লেখ করা হলো:-
ক). আমাদের এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। কি সন্তান জন্মগ্রহণ করবে- তা সাধারণভাবে কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয়। তা মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ব্যতীত এবং উনারা দয়া-ইহসান করে যাঁদেরকে অবহিত করেন অর্থাৎ ওলীআল্লাহগণ উনারা ব্যতীত কারো পক্ষে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বইয়িবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি তো ছহিবায়ে ইলমে গাইবছিদ্দীক্বা। তিনি যা বলবেন তা-ই ঘটতে বাধ্য। আর তিনি ওই পীরবোনকে পূর্বেই বলেছিলেন যে, তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিবে। সত্যি! যথাসময়ে দেখা গেল পীরবোন একটি কন্যা সন্তানই প্রসব করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
খ). এক পীরবোন সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। বাচ্চা হওয়ার পূর্বে তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন। মনে মনে খুব চাচ্ছিলেন- যেন দ্বিতীয় বাচ্চাটি অপেক্ষাকৃত অধিক সুন্দর হয়। অবস্থা দর্শনে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ত্বহিরা, ত্বইয়িবা, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পীরবোনের দিকে খুব দয়া-ইহসানের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলেন, “চিন্তা করো না। এবারের বাচ্চাটি আরো অধিক সুন্দর হবে।পরবর্তীতে তাই হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই আমরা যে যা নিয়ামত চাই, মারিফত-মুহব্বত চাই- তা যেন খালিছভাবে উনার পাক ক্বদম মুবারক-এ মুহতাজ থেকে আরজু করি।
ঙঙতগগ

১৪. নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, ছিদ্দীক্বা, হাবীবাতুল্লাহ, নাছীরা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি পাক পাঞ্জাতন শরীফবাগিচার অন্যতমা একটি ফুল :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কুল-কায়িনাতকে যমীনে কিয়ামত পর্যন্ত বহাল রাখতে যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিশেষভাবে হাদিয়া করেছিলেন অত্যন্ত শান-শওকতপূর্ণ, কায়িনাত শ্রেষ্ঠ, অফুরন্ত নিয়ামত ভা-ার সমৃদ্ধ, বেমেছাল পবিত্রতা সম্পন্ন, অপরিমেয় সৌন্দর্যম-িত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের একটি পাক-পাঞ্জাতন শরীফবাগিচা। যাঁদের সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নিশ্চয় আমার আওলাদগণ উনারা হচ্ছেন হযরত নুহ আলাইহিস সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে তাতে প্রবেশ করবে সেই নাজাত পেয়ে যাবে।সেই নহরধারার মূল হচ্ছেন যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং বাগিচার দ্বিতীয়া উৎসমূল হলেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম। এরপর সেই বাগিচার তৃতীয় উৎসমূল হলেন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। চতুর্থ উৎসমূল হলেন হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং পঞ্চম উৎসমূল হলেন হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম। এই পাঁচ মহান ব্যক্তিত্ব উনাদেরকেই ইতিহাসে হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পাক পাঞ্জাতন শরীফনামে অভিহিত করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
উহার হুবহু নকশা হিসেবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বায়িম-মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, হাবীবুল্লাহ লি ইত্তিবায়ি সুন্নাতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আওলাদুর রসূল, ইমাম ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনাকেও সেই অত্যন্ত শান-শওকতপূর্ণ, কায়িনাত শ্রেষ্ঠ, অফুরন্ত নিয়ামত ভা-ার সমৃদ্ধ, বেমেছাল পবিত্রতা সম্পন্ন, অপরিমেয় সোন্দর্যম-িত হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদের একটি পাক পাঞ্জাতন শরীফবাগিচা হাদিয়া করেছেন। মামদূহী কাননে সেই আরশী বাগিচার তৃতীয়া নূরী ফুল হচ্ছেন নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, ছিদ্দীক্বা, হাবীবাতুল্লাহ, নাছীরা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, ছিদ্দীক্বা, হাবীবাতুল্লাহ, নাছীরা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি যাহরায়ী রঙে ও গুণে অতুলনীয়ভাবে সমৃদ্ধ। যাঁর হিদায়েতী নূরে সারা জাহান আজ আলোকিত। কায়িনাতে অনবরত বিচ্ছুরিত হচ্ছে সেই মুবারক নূরের দীপ্ত রশ্মি। যা বেহেস্তী সৌরভের সুবাসে জাহানকে মোহিত করছে। অসংখ্য, অগণিত মারিফাত পিপাসু পথিক সেই নূরের ছটায় এবং মুগ্ধকর সুবাসে আকৃষ্ট না হয়ে পারছে না। ফলে সেই নূরী ফোয়ারার রহমত, বরকত, সাকীনা লাভে নিজেদের ধন্য করে দুজগতের রাস্তা আলোকিত করছেন কতো অজানা আশিকা। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১৫. বাহরুল আলীমা, জামিউল মাক্বাম, হাদীয়ে জাহান, কুররতু আইনি মুর্শিদুনা আলাইহিস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি পোশাকের বিলুপ্ত সুন্নত মুবারক জারি করেছেন :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা আমার রঙে রঞ্জিত হও।অর্থাৎ পুরুষরা যিনি নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রঙে রঞ্জিত হও এবং মহিলারা হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম ও হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার রঙে রঞ্জিত হও। তাহলে যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক উনার রঙে রঙিন হওয়া হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
বাহরুল আলীমা, জামিউল মাক্বাম, হাদীয়ে জাহান, কুররতু আইনি মুর্শিদুনা আলাইহিস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম ও হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাদের পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম। উনারা যে লেবাস মুবারক ব্যবহার করেছেন ঠিক অনুরূপ লেবাস মুবারক তিনিও ব্যবহার করেন। এবং মহিলাদের মাঝে এ সুন্নতী লেবাস মুবারক জারি করেন। কতিপয় সুন্নতী লেবাস মুবারক উনার বর্ননা দেয়া হলো:
হাদীয়ে জাহান, বাহরুল আলীমা, জামিউল মাক্বাম, কুররতু আইনি মুর্শিদুনা আলাইহিস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার ব্যবহৃত ও জারিকৃত সুন্নতী লেবাস মুবারক হচ্ছে, কামীছ (গুটলীযুক্ত, কল্লিদার, নিছফুসাক, গোল বা কোণাবন্ধ সুতি কাপড়ের) মুবারক, সালোয়ার (কল্লিদার, যা নিচের দিকে পাজামার মতো বেঢপ ঢোলা না, বরং বর্ডারযুক্ত চিপা, যা আবার চোস্ত না) মুবারক, ওড়না (চাদর জাতীয়, মাপ: দুই হাত ও সাড়ে চার হাত, আড়াই হাত ও সাড়ে চার হাত, আড়াই হাত ও চার হাত) মুবারক।
বোরকা (কালো রঙ এবং ঢোলা, নেকাব- জালিযুক্ত) মুবারক, স্যান্ডেল বা পাদুকা (চামড়ার ক্রস দুই ফিতা বিশিষ্ট এবং প্রতিটি ফিতা আবার দ্বিস্তর বিশিষ্ট) মুবারক, মোজা (চামড়ার ও খয়েরী রঙের) মুবারক।
যখন পাশ্চাত্য এবং মুম্বাই ফ্যাশনের অশালীন পোশাকে দিশেহারা পুরো কায়িনাতবাসী; বোরকার নাম নিতে নাক ছিটকানী দিচ্ছে; ঢোলা ও লম্বা পোশাকের নাম শুনলে আঁতকে উঠছে মহিলারা; সেই কঠিন সঙ্কটময় মুহূর্তে মুবারক সুন্নতী লেবাসে বাহরুল আলীমা, জামিউল মাক্বাম, হাদীয়ে জাহান, কুররতু আইনি মুর্শিদুনা আলাইহিস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি নববী যুগের প্রতিচ্ছবি। একি! কানে কি ঠিক শুনছি। বেহায়া মেয়েরা তা ভাবতেই পারে না। বর্তমান আধুনিক জাহিলিয়াতের যুগে তিনি হচ্ছেন ইলাহী কুদরত এবং রাসূলী মুজিযা শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। যেন আসমান থেকে উনাকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমান আধুনিক জাহিলিয়াতের ফিতনার সাগরে হাবডুবু খেতে থাকা নারীদের বিস্ময়- তা না হলে এরকম লেবাস মুবারক পরিধান করা কি করে এখন সম্ভবপর হয়! সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১৬. মানছুরা, গালিবা, আফীফা, ছহিবে নূর, উম্মুল খইরা, মুনিরা, হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি নারী জাতির মুক্তির আরশী দিশারী :
শামসী চৌদ্দ শতাব্দী। পুরো মহিলা জাতিটাই যেন এখন ভোগবাদী একটা গোষ্ঠীর চাতুর্যের ফাঁদে আটকা পড়েছে। চারদিকে পুঁজিবাদী ও ভোগবাদী গোষ্ঠীর অর্থ কামায় ও সম্ভোগের ঘুঁটি নারী সমাজ। পুঁজিবাদী ও ভোগবাদী গোষ্ঠীর কথিত নারী স্বাধীনতানারী উন্নয়ন’-এর আপ্ত বুলি বুর্যোয়া-ভাড়াটে মিডিয়ার মাধ্যমে দশদিগন্তে ছড়িয়ে দিয়ে নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতায় ভাসিয়ে দিয়েছে। নারী স্বাধীনতার নামে বৈষয়িক উন্নতির অলীক স্বপ্নে বিভোর করেছে নারীদেরকে। আর দিবাস্বপ্ন দেখতে দেখতে নারীরা তার ব্যক্তিত্ব, সম্ভ্রম, সম্মান সবকিছু বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করছে না। ফলে নারীদের ঘিরে পুঁজিবাদী ও ভোগবাদী গোষ্ঠীর ব্যবসা জমজমাট।
আর স্বাধীনাতা অর্জনের বাসনায় নারীদের নিত্যদিনের আচরণ হচ্ছে বেপর্দা হওয়া, মান-সম্ভ্রম বিলানো, পরকীয়া করা, অবৈধ প্রেম করা, নাচ-গান করা শুনা, মদ পানে বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকা, টিভি, নাটক, সিনেমায় মত্ত থেকে ভোগবাদীদের তুষ্ট করা, রাজনীতির নামে বেহায়াপনা, বেলেল্লাপনায় মত্ত থেকে নিজস্ব স্বকীয়তাকে বিসর্জন দেয়া এবং রাজপথে মিছিল মিটিং করে নিজেদের মান-সম্মান হারানো, নির্যাতিতা হওয়া, বেশরা-বিদয়াতে লিপ্ত থাকা, বাজারে বাজারে ঘুরা, নষ্টামীতে ও লোকপ্রদর্শনীতে মত্ত থাকা, অফিসে পুরুষ সহকর্মীর ছলনার পুতুল হওয়া। অর্থাৎ যত বদ এবং নিকৃষ্ট কাজের আড্ডার মাধ্যম এখন নারী।
দেহপ্রদর্শনীতে ক্ষুধার্ত বাঘের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ তাদের মাঝে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। হারাম কাজে গর্জন করছে সিংহের ন্যায়। নারীরা যদি এভাবেই তাদের মান-সম্মান-ইজ্জত-আবরুকে নাক ছিটকানী দিয়ে আইয়ামে জাহিলায়াতের ন্যায় আচরণ জারি রাখায় তারা ইহজগতে বর্ণনাতীত লাঞ্ছিত, পদদলিত হচ্ছে। তবুও তাদের হুঁশ ফিরছে না পুঁজিবাদী ও ভোগবাদীদের রঙ মাখানো চাতুর্যপূর্ণ প্রলোভনের কারণে। পুঁজিবাদী ও ভোগবাদীদের রঙ মাখানো চাতুর্যপূর্ণ প্রচারণার ফলে সমাজে নারী মানেই ভোগ্যপণ্যহিসেবে তাদের নোংরা পরিচিতি প্রতিষ্ঠিত। তবুও ক্ষণিকের দুনিয়ার অর্থ-সম্পদের মোহে আচ্ছন্ন হয়ে থাকায় নারীরা তা বুঝতে পারে না। তাই লানতের অগ্নি ছেয়ে গেছে সর্বত্র।
অথচ পবিত্র দ্বীন ইসলাম নারী জাতিকে যে সীমাহীন শ্রেষ্ঠত্ব-মর্যাদা দিয়েছে তা কল্পনাতীত ব্যাপার। মূলত এই বেহায়া, পথহারা নারী জাতিকে সঠিক সম্মানিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে কায়িনাত মাঝে নারী জাতির সম্মান শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে, লানত ও অশান্তির করুণ পরিণতি থেকে হিফাযত করতে এবং দুনোজাহানে তাদেরকে মুক্তি দান করতে ধরার বুকে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা বিশেষ নিয়ামত হিসেবে মানছুরা, গালিবা, আফীফা, ছহিবে নূর, উম্মুল খইরা, মুনিরা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ ফিতনা-ফাসাদের যামানায় হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি নারীকুলকে সঠিক পথ দেখানেওয়ালী এবং নারী জাতির মুক্তির আরশী দিশারী। উনার মুবারক ছোহবতেই সর্বপ্রকার রহমত, বরকত, সাকীনাসহ নারীদের প্রকৃত মর্যদা লাভ করা সম্ভব, যেমন হতো হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ও উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মুবারক ছোহবতে। হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সারা জাহান থেকে কুফরী-শিরকী, বিদয়াত, বেশরার মূল উৎপাটন করে নববী যুগের পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পথহারা নারীদের মাঝে বেগবান করে তুলছেন। যুলুম-নির্যাতন, বেপর্দা, বেহায়াপনাসহ নারী জাতির সমস্ত দুর্দিন উনার নূরী পরশে বিদূরিত হচ্ছে। উনার ফায়েজ ও রোবে দিন দিন নারী জগৎ সুদৃঢ় ও মজবুত হচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে রাব্বী হুকুম এই বসুধায়।
ঙঙতগগ


১৭. মহান আল্লাহ পাক রব্বুল ইজ্জত উনার একজন খাছ লক্ষ্যস্থল হাদী :
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “প্রত্যেক ক্বওম বা সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছেন একজন হাদী বা হিদায়েতকারী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁদেরকে খাছ লক্ষ্যস্থল হাদীরূপে প্রেরণ করেন, উনাদের প্রতি পদেই মানুষ হিদায়েত লাভ করে। উনাদের একটি নজরেই যে কেউ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত, হিদায়েত ও সন্তুষ্টির প্রাপ্তিতে উচ্চতম সোপানে আরোহণ করতে সক্ষম। এমনকি কেউ যদি যোজন যোজন দূর থেকে অন্তরের গহীনে একটি বারের তরেও উনাদের মুহব্বতের শিহরণে আলোড়িত হয়, তবে আপসে আপই সে হিদায়েত লাভ করে। যদিও সে বিধর্মী হোক না কেন। উনাদের আলোচনা যেখানে করা হয়, সেখানে অঝোর ধারায় বর্ষিত হয় রহমত ও হিদায়েতী নূর। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিনউনাদের নিকটে।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই ছালেহীনউনাদের আলোচনা, ছানা-ছিফত রহমত প্রাপ্তির মাধ্যম।
বলাবাহুল্য, মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত হলো হিদায়েত প্রাপ্তির পূর্বশর্ত। আর তাই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছ বান্দা, হাদী, ছালিহীন ও মুহসিন বান্দা উনাদের শানে আলোচনা, ছানা-ছিফত, প্রশংসা, ক্বাছীদা এসব কিছুর মাধ্যমে স্বভাবতই মানুষ হিদায়েত লাভ করে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আফদ্বালুন নিসা, নূরে মুবিনা, গুলে মদীনা হযরত শাহযাদী ছানী হাদীয়ায়ে মাদানী আলাইহাস সালাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক রব্বুল ইজ্জত উনার একজন খাছ লক্ষ্যস্থল হাদী।
উনার শানে আলোচনা, ছানা-ছিফতের মাধ্যমেও অগণিত মানুষ হিদায়েত লাভ করেছেন, করছেন করবেন। সরাসরি তো দূরের কথা, উনার মবারক শানে রচিত বাংলা ক্বাছীদা শরীফ শুনে মুসলমান হয়েছে নাইজেরিয়ান খ্রিস্টান। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই স্বয়ং গুলে মদীনা হযরত শাহযাদী ছানী আলাইহাস সালাম উনার মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, ফায়দা ফিকির করে কূল-কিণারা উদ্ধার করা তো দূরের কথা, উনার মবারক শানে রচিত ক্বাছীদ শরীফ যে কতোটুকু মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত ফায়দা তা উপলব্ধির জন্য এই একটি মাত্র মুবারক ঘটনা ফিকির করতেই মারিফত প্রত্যাশীদের বিস্ময়ে বিমূঢ় হতে হয়। আর তিনি স্বয়ং কতো মর্যাদাসম্পন্না হাদী সেটা এর দ্বারা উপলব্ধি করা যায়। সুবহানাল্লাহ!
বলাবাহুল্য, এ ঘটনাটি উনার বেমেছাল মুবারক কারামতের মহাসমুদ্র থেকে প্রকাশিত একটি কণা মাত্র। এর প্রেক্ষাপটটি ছিলো- মাহে ছফর ১৪৩১ হিজরী (২০১০ ঈসায়ী) সনের কোনো এক স্নিগ্ধ মধ্যরাত (বাংলাদেশ-এর স্থানীয় সময়)। হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার খাছ তাজদীদী মাধ্যম, আন্তর্জাতিক Voice Room, Noorun Alaa Noor-এর নৈশ অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হচ্ছিলো ক্বাছীদা শরীফ। যথারীতি নূরুন আলা নূরভয়েস রুমে ছিলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অতিথি বা গেস্টদের আনাগোনা। সুদূর আফ্রিকা মহাদেশের নাইজেরিয়া থেকে আইবাফ বহি নামে খ্রিস্টান ব্যক্তি নূরুন আলা নূরভয়েস রুমে প্রচারিত ক্বাছীদা শরীফসমূহ খুবই উপভোগ করছিলেন। (বলাবাহুল্য, তাঁর যোগাযোগের ভাষা ছিলো ইংরেজি। তিনি বাংলা ভাষা জানেন না।)
এদিকে সেই সময় ক্বছীদা শরীফ প্রচারের ধারাবাহিকতায় তখন প্রচারিত হচ্ছিলো হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শানে ক্বাছীদা শরীফ। কহি শাহযাদী ছানীর শানশিরোনামের ক্বছীদা শরীফখানা ওই নাইজেরিয়ান খ্রিস্টানের অন্তর প্রকম্পিত করলো। তিনি নূরুন আলা নূরভয়েস রুমের অ্যাডমিনদের সাথে যোগাযোগ করে এবং উনার মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, ফায়দা সম্পর্কে জেনে তৎক্ষণাত মুসলমান হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং মুসলমান হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১৮. মোবারক হো ঈদে বিলাদতে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আর আপনি তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিনসমূহ সম্পর্কে জানিয়ে দিন।
কাজেই মহান ১৯শে রবউছ ছানী ঈদে আযম। আরশে আযীমে ঘোষণা হয়েছে বেমেছাল মনোনীতা হাবীবা উনার যমীনে তাশরীফের দিন পবিত্র ১৯শে রবউছ ছানী শরীফ। তাইতো যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এদিন কায়িনাতকে নতুনভাবে সজ্জিত করেছেন। আরশে নূরী ফোয়ারা পুরো আকাশে স্নিগ্ধ সুবাসের রশ্মি ছড়িয়ে দিয়েছেন। এতোটুকু খালি নেই সেই নূরের ছটা। জিন-ইনসান, ফেরেশতাসহ কুল-কায়িনাতের সবকিছু আন্দোলিত হচ্ছে অনবরত। তারকা, গ্রহ-নক্ষত্র কাছীদা শরীফ উনার ধ্বনিতে মুখরিত ও খুশি হয়ে দুলে দুলে ঘুরছে। আসমান যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে যেন কুদরতী ফুলের শামিয়ানা বিছানো হয়েছে। স্লোগান হচ্ছে সেখানে আহলান-সাহলান জানিয়ে। জোৎস্নাময় নূরী হাদী উনার প্রকাশ ক্ষণে জিন-ইনসান, ফেরেশতাসহ কুল-কায়িনাতের সবকিছু উচ্ছ্বসিত।
যমীনও কি পিছিয়ে আছে? না। গাছে গাছে হঠাৎ ব্যাতীক্রমী সৌরভ-সুবাসে ভরা নতুন ফুল ফুটেছে। পাখিদের কণ্ঠে সুমধুর স্বরে ক্বাছীদার বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে। বনের পশুগুলোও দাঁড়িয়ে দিনভর ছলাত-সালাম জানাতে আজ ক্লান্তি বোধ করছে না। সমুদ্রের মহাগর্জন মুবারক হো! মুবারক হো! ধ্বনিতে পরিণত হয়েছে। বসন্তের সমারোহে চারদিক ঝলমল করছে। ঐশী জান্নাত থেকে ভেসে আসা মৃদু মৃদু হিম শীতল হাওয়া বইছে ধরা পৃষ্ঠে। গোটা সৃষ্টির মাঝে ঈদের খুশির ঢেউ ছড়াছড়ি। কি যেন এক আরশী নিয়ামত উনার প্রাপ্তিতে যমীনে বেশুমার খুশির আমেজ। কেন জানি সারা কায়িনাতে রহমত, বরকত, নাজাতের ঐশী বার্তা ছড়াছড়ির ধুম পড়েছে।
কি হয়েছে কুল-কায়িনাতে? কিসের এত বেশুমার আনন্দ আকাশ-বাতাস ত্রিভূবন মিলিয়ে? সূর্যের কেন এত উজ্জ্বল ও দীপ্ত আলোকচ্ছটা? কিসের আনন্দে চাঁদের উজ্জ্বল ও স্নিগ্ধ আলোকরশ্মি গোটা পৃথিবীকে মুহূর্তে আলোকিত করে দিয়েছে? তবে কি চাঁদ-সুরুজ যমীনে নেমে এসেছে? না! তা কি করে হয়। এমনি সময় আওয়াজ এলো আজ ছহিবে চাঁদতিনি যমীনে তাশরীফ আনবেন। সুবহানাল্লাহ!
এদিকে অলীআল্লাহ, গাউছ-কুতুব, মুমিন-মুত্তাক্বী ও আশিক-আশিকা, আসমানবাসী-যমীনবাসী সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষিত। আকাশে-বাতাসে, পাখ-পাখালির মুখে মুখে, পাহাড়-পর্বতে, সমস্ত সৃষ্টির মাঝে বইছে ঈদের খুশি। সবারই মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক ধ্বনি। মাখলুকাতের অপেক্ষিত অন্তর হাহাকার করছে। কখন উঠবেন জোছার সেই চাঁদ। কখন প্রকাশ পাবেন মুক্তির আরশী দিশারী।
রওজা শরীফে বিশেষ ছানা-ছিফতের আয়োজন বসানো হয়েছে। সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা আলাপ-আলোচনা করছেন- নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সাইয়্যিদবংশে উনার আওলাদ হিসেবে দুনিয়ায় তাশরীফ নিবেন নারীকুল শিরোমণি। তাইতো আরশে আযীম থেকে রওজা শরীফ পর্যন্ত আলাদা ইন্তেজাম। জান্নাতকে নব উদ্যোমে সাজানো হয়েছে। ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা আসমান-যমীনে বিশেষ নিরাপত্তায় ইস্তেকবাল জানাতে ছড়িয়ে পড়েছেন। হুর গেলমান বেমেছাল জান্নাতী সাজে সারিবদ্ধ। হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা আজ রাজারবাগ শরীফ তাশরীফ নিয়েছেন।
আজ সারা আলমে নূরের সর্বত্রই যেন ছড়াছড়ি। সেই নূরের হিস্যা সমস্ত কায়িনাতবাসী উপভোগ করছেন। মুমিন মুমিনাদের অন্তরে ঈমানী জজবার ফোয়ারায় হৃদয় আন্দোলিত হচ্ছে। এমনি এক সময় আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পছন্দনীয় সময়ে, পবিত্র ও সম্মানিত মাসে কুল-কায়িনাতের সম্মানিত আম্মাজী ক্বিবলা উনার কোল মুবারক আলোকিত করে যমীনে তাশরীফ নিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ হাবীবা মুখলিছা, ছাহিবাতুল কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছহিবে যিকির, আফযালুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
ঙঙতগগ

১৯. মুবারক শান প্রকাশে আমার অপারগতা অক্ষমতা দুর্বলতা প্রকাশ:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,  ‘হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, আমার রব মহান আল্লাহ পাক উনার শান-মান লিখার জন্য যদি সমুদ্রের পানিকে কালি বানানো হয় তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার শান মান, ফাযায়িল-ফযীলত শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে। অনুরূপ আরো যোগ করা হলেও।’ (সূরা কাহাফ-আয়াত শরীফ ১০৯)
            বলাবাহুল্য, এটা যেমন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে তেমনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানেও এবং সাথে সাথে উনাদের রঙে রঞ্জিত লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আযম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার শানেও যথাযোগ্যভাবে প্রযোজ্য। আমার খাতা-কলম সমঝ শেষ হবে, তবুও সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত বুযূর্গীর বর্ণনা শেষ হবে না এতটুকুও। সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত বুযূর্গীর বর্ণনা তো স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনারা নিজে করেছেন। সেখানে সাধারন বান্দা উম্মতের সাধ্য কোথায়।
সঙ্গতকারণেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার এবং উনার সুমহান বিলাদত শরীফ উনার তাৎপর্য, গুরুত্ব, মহত্ত্ব, শান-শওকত লিখার জন্য কোনো ভাষার শুরু এবং শেষ নেই। সমস্ত সমুদ্রের পানিকে যদি কালি বানানো হয়, গাছগুলোকে যদি কলম বানানো হয় এবং সমস্ত মানবজাতি যদি লিখা আরম্ভ করে, তবে লিখা শুধু শুরুই হবে কিন্তু কখনই শেষের মুখ দেখা যাবেনা।  তাইতো অপারগতা দুর্বলতার ভরে আমার হৃদয় প্রকম্পিত হচ্ছে। দয়া এবং ক্ষমা ভিক্ষা ছাড়া কোন পথও খোলা নেই অধম গোলামের। শুধুই প্রতিধ্বনি হচ্ছে অনুক্ষণ হৃদয়ে কিছু আরজি।
হে হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম, হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম, হযরত নক্বিবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম, হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম, হযরত খলিফাতুল উমাম আলাইহস সালামহযরত শাফিউল উমাম আলাইহিস সালাম, হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম, হযরত সাইয়্যিদাতাল উমাম আলাইহিমাস সালাম-
শুধুই আপনাদের মুবারক খেদমতে শরীক থাকার জন্য আমার এ লিখা। আমার নূন্যতম যোগ্যতা নাই। আদব-শরাফতও নেই। নেই এতটুকু ইলম-কালাম-ইখলাছ। সবকিছুই এখানে ব্যর্থ আমার। সস্পৃক্ততা শুধুই অক্ষমতা প্রকাশ। অনিবার্য এখানে হাজারো ক্ষমা প্রার্থনা করা।
তাই আমার এবং আমার পিতা-মাতা ও ভাই-বোনদের জীবনের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, জানা-অজানা, জাহিরী-বাতিনী সমস্ত ভূল-ত্রুটি, বেয়াদবী-গোস্তাখী সহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শানে এ লিখার  সমস্ত ভূল-ত্রুটির ক্ষমা ভিক্ষা চাচ্ছি। দয়াকরে আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে ফয়েজে ইত্তেহাদী দান করুন। আজীবন আপনাদের গোলামীতে আদব ও ইখলাছের সহিত ইস্তিকামাত রাখুন। আবাদুল আবাদ আপনাদের ছানা-ছিফতে প্রকৃত হুসনে যনের সহিত মশগুল রাখুন।আমীন। ছুম্মা আমীন।
ঙঙতগগ




সবশেষে একখানি স্বরচিত কবিতা দিয়ে যবনিকা টানছি-

Avikx b~i kvnhv`x Qvbx

b~ix kvnhv`x Qvbx
Bjvnx-im~‡j Mbx
gvwjKv d‡q‡R B‡Ënv`xi
Pvwn Bjvnxi exi \

kvnhv`xi Hkx mgS
Aaxb jvI‡n gvndzR
Bjvnx-im~j nvexev
Pvwn gvg`~n Kvev \

Bjvnx-im~jx gyneŸ‡Z
D¤§yj gyÕwgbxb‡`i †Qvne‡Z
kvnhv`x b~ix mvBwq¨`v
Pvwn Bw¯ÍKvgvZ m`v \

Avikx b~i kvnhv`x
D¤§vni ü`‡qi †R¨vwZ
nvwhi-bvwhiv kvnhv`x
Pvwn ü`‡q evwZ \

kvnhv`xi mybœZx mvR
†`L gvneyevi ivR
†e‡gQvj mybœx nv`x
Pvwn d‡q‡R B‡Ënv`x \
ঙঙতগগ

-সমাপ্ত-

No comments:

Post a Comment