“১৯৭১
এ জামাত স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধিতা করায় রাজাকার হলে,
১৯০৫ সালে
পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরোধিতা করায় রবীন্দ্রনাথ কেন রাজাকার হবে না??
আর একটা
রাজাকারের রচিত গান কিভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে??
তাই অবিলম্বে
রবীন্দ্রনাথ রচিত কথিত ‘জাতীয় সঙ্গীত’ বাতিল করে
উম্মু
রসুলিল্লাহ ত্বহিরা তইয়িবা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার রচিত সুমহান নাত শরীফ উনাকে
জাতীয়ভাবে পাঠ করা হোক।”
নতুন জাতীয় সঙ্গীত খুঁজছে সুইজারল্যান্ড। এর জন্য প্রতিযোগিতার
আয়োজন করছে তারা। ১৮৪১ সালে তৈরিকৃত গানটি ১৯৮১ সালে জাতীয় সঙ্গীত উপাধি পায়, যা বর্তমানে
অনেক সুইস গ্রহণ করতে চাচ্ছে না।
এর কারণ: ওই গানটিতে ‘গড’-এর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সুইস
খ্রিস্টানদের মধ্যে অনেকে যেহেতু খ্রিস্টধর্ম বাদ দিয়ে নাস্তিকতা গ্রহণ করেছে, তাই
তারা গানটি পরিবর্তনের পক্ষপাতি। সবকিছু ঠিকভাবে এগোলে ২০১৫ সাল থেকে নতুন জাতীয় সঙ্গীত
গাইবে সুইসরা। প্রতিযোগিতায় সঙ্গীতের নতুন কথার উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। চলতি ২০১৪
সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত চলবে এ প্রতিযোগিতা। বিজয়ীকে দেয়া হবে ১০ হাজার সুইস
ফ্রাঙ্ক (১০ হাজার ৭৪৫ মার্কিন ডলার) পুরস্কার। প্রথম রানার-আপ পাবেন ৫ হাজার সুইস
ফ্রাঙ্ক, দ্বিতীয় রানার-আপ পাবেন ৩ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক এবং তৃতীয় রানার-আপ পাবে ১ হাজার
সুইস ফ্রাঙ্ক। নির্বাচিত সঙ্গীতটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে অনুমোদন দেবে সরকারের ফেডারেল
কাউন্সিল।
সুইস জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন হওয়ার কারণ দেশটির মানুষের ধর্মীয়
মানসিকতা পরিবর্তন হওয়া। এবং অনেকেই যেহেতু চাচ্ছে তাই সরকারও সেই দিকে হাঁটতে বাধ্য।
আমার মনে হয়, সুইজারল্যান্ড যদি এরকম একটি কারণে তার জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে পারে,
তবে বাংলাদেশে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করা তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব রাখে। আসুন দেখি
কি কারণে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করা জরুরী।
১) গানটির তৈরির পটভূমি বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী:
রবীন্দ্রনাথের মতো ব্রিটিশ তাবেদার হিন্দু জমিদাররা বাংলাদেশের
নিরীহ কৃষকদের রক্ত চুষে খেতো। কিন্তু ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হওয়ায় তাদের পেটে টান পড়ার
সম্ভবনা দেখা দেয়। এতে কলকাতার উগ্র হিন্দুরা স্বদেশী আন্দোলনের নামে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায়
নামে। আর তাদের নেতৃত্ব দেয় হিন্দু জমিদাররা। সেই জমিদার হিসেবে ১৯০৬ সালে অতিনিকৃষ্ট
হীনউদ্দেশ্যে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে ‘আমার সোনার বাংলা’ নামক গান লিখে ফেলে রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথের মতো চক্রান্তশীল উগ্র হিন্দুদের সন্ত্রাসীপনার কারণে ১৯১১ বঙ্গভঙ্গ বাতিল
হয়ে যায়। সফল হয় হিন্দু শোষক শ্রেণী এবং পিছিয়ে পড়ে পূর্ববঙ্গ অধিবাসী অর্থাৎ বর্তমান
বাংলাদেশীরা।
তাই যে গান তৈরির পটভূমিই বাংলাদেশীদের স্বার্থ বিরোধী,
তা কি করে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে?
২) লেখক রবীন্দ্রনাথ নিজেই বাংলাদেশ বিরোধী:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশ বিরোধী। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপনের বিরোধিতা করেছিলো। বাংলাদেশ বিরোধী কোনো ব্যক্তির লেখা গান বাংলাদেশের জাতীয়
সঙ্গীত হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
৩) এটা একটা নকল করা গান:
‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি রচনা হয়েছিলো শিলাইদহের ডাক-পিয়ন
‘গগন হরকরা’ রচিত ‘আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে’ গানটির অনুকরণে।
৪) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানটির কথাগুলো ধর্মনিরপেক্ষতার
আড়ালে হিন্দুয়ানী, যা ১৯৭২ সালে গৃহীত হয়, তখন আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ছিলো না। কিন্তু
১৯৮৮ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করা হয়, যা বহাল আছে। তাই সংবিধানের
২ (ক) হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং ৪ (১) হিসেবে হিন্দুয়ানী গোছের জাতীয় সঙ্গীত পরস্পর
সাংঘর্ষিক। সুইজারল্যান্ড যেহেতু খ্রিস্টান থেকে নাস্তিক হলে তার জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন
করতে পারে, সেহেতু আমরা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলে কেন হিন্দুয়ানী জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন
করতে পারবো না?
৫) ৪নং বক্তব্য দ্বারা জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ‘আমার সোনার
বাংলা’ গানটি যে সাংবিধানিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, তা ২০১২ সালের ১৮ই নভেম্বর হাইকোর্টের
জ্যেষ্ঠ বিচারক শরিফ উদ্দিন চাকলাদার কর্তৃক একটি রায় দ্বারা খোলসা হয়ে যায় এবং এবং
রবীন্দ্রনাথ জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা হিসেবে যোগ্যতা হারায়।
জ্যেষ্ঠ বিচারক শরিফ উদ্দিন চাকলাদার ঐ রায়ে অর্ডার কপিতে
লিখেন:
ক) “জমিদারদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের পরিচিত। একজন
ব্যক্তিকে চেনা যায় যখন তার স্বার্থে আঘাত পড়ে তখন তার প্রতিক্রিয়ায়। সে তার মুসলমান
রায়তদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ে নিপীড়নের জন্য বাংলায় প্রথম ‘বিহারীদের’ আনে।”
খ) “রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জোর বিরোধিতা
করে যাতে তার প্রজা, মুসলমানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়।”
গ) রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বের কারণে বঙ্গভঙ্গ বাতিল হয়। ভারতের
রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাভাষা সে নাকচ করে হিন্দির পক্ষে মত দেয়।
ঘ) রবীন্দ্রনাথ এমন চরিত্রের লোক যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপনের বিরোধিতা করেছে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিক ডিগ্রি গ্রহণ করেছে। পতিসরে
স্কুল করেছে, কিন্তু কলকাতার বাবুদের পরামর্শে তা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলো। একজন চাষী
তার বিরোধিতা করে, খাজনা দিতে অস্বীকার করায় স্কুলটি বন্ধ করা হয়নি।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়, অনেকে মিথ্যা দাবি করে থাকে,
“রবীন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতার কারণ, সে মনে করতো বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ব্রিটিশরা
বাংলাকে ভাগ করে দুর্বল করে দিতে চেয়েছিলো, এবং বাংলাকে নিয়ে চিন্তা করেই তার এ বিরোধিতা।”
এর উত্তরে বলতে হয়, ১৯৭১ সালে মওদুদীবাদী জামাত বাংলাদেশের
স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলো। এর কারণ হিসেবে অনেক জামাত-শিবিরের লোকজন এখনও যুক্তি
দিয়ে থাকে, “ভারত পাকিস্তানকে দুইভাগ করে দুর্বল করে দিতে চেয়েছিলো এবং মুসলমানরা যেন
বিভক্ত না হয় সে জন্যই জামাত স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো।”
এবার আপনারাই বলুন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ’র (যার মাধ্যমে
আমাদের স্বার্থ রক্ষা হয়) বিরোধিতা করলে যদি জামাতকে রাজাকার বলতে হয় তবে ১৯০৫ সালে
বঙ্গভঙ্গ’র (যারা মাধ্যমে পূর্ববঙ্গ বা বর্তমান বাংলাদেশ অনেক উন্নত হতে পারতো) বিরোধিতার
কারণে কেন রবীন্দ্রনাথকে রাজাকার বলা হবে না???
আর একটা রাজাকারের গান কখনই জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার যোগ্যতা
রাখে না। তাই বিতর্কিত ‘রবী ঠগ’-এর ‘আমার বাংলা সোনার বাংলা’ নামক গানটি অবিলম্বে প্রত্যাহার
করা হোক।
এবং একই সাথে ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশ হিসেবে সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আল্লাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আম্মাজান ত্বহিরা, তইয়িবা, উম্মুল খায়ের হযরত আমিনা আলাইহাস
সালাম উনার রচিত সুমহান না’ত শরীফ উনাকে জাতীয়ভাবে পাঠ করা হোক। তবেই বাংলাদেশের উপর
মহান আল্লাহ পাক উনার খাস-খায়ের বরকত নাযিল হবে। সুবহানাল্লাহ!
-( দৈনিক আল ইহসান হতে সঙ্কলিত)
No comments:
Post a Comment