সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র
বিলাদত শরীফ তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পালন করা জিন-ইনসানসহ
গোটা কুল-কায়িনাতের জন্য ফরয তো বটেই; নাজাতেরও কারণ। কিন্তু আজকের তথাকথিত মালানা, মুফতী, মুহাদ্দিস, শাইখুল হাদীছরা ফতওয়া দেয় যে, “ঈদে মীলানদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদায়াত এবং শরীয়তে
দুই ঈদের বাইরে তৃতীয় কোনো ঈদ নেই। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।”
যারা এই সব কফুরী ফতওয়া দেয় তারা দেওবন্দী, তাবলীগী, জামাতী, মওদুদী, সালাফী, আহলে হাদীস, লা-মাযহাবী ইত্যাদি দলের অনুসারী। এই সমস্ত দল ওহাবী মতবাদ থেকে সৃষ্টি হয়ে সর্বত্র
বিস্তার লাভ করেছে। সেই নিকৃষ্ট ওহাবী মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল ওহাব নজদী তার রচিত
‘মুক্তাছার
সীরাতুর রসূল’ বইতে লিখেছে, “হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে স্বপ্নে দেখি
যে, সে অত্যন্ত
(কঠিন) দুরবস্থায় রয়েছে। সে বললো, (হে ভাই হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম!) আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি কোনো
শান্তির মুখ দেখিনি। তবে হ্যাঁ, প্রতি ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ যখন আগমন করে তখন আমার থেকে সমস্ত
আযাব লাঘব করা হয়, আমি শান্তিতে থাকি। হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আবু লাহাবের এ আযাব লাঘব হয়ে শান্তিতে থাকার কারণ
হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ
উনার দিন ছিলো ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ। সেই ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা
সোমবার শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ
উনার সুসংবাদ নিয়ে আবু লাহাবের বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি আবু লাহাবকে
জানালেন তখন আবু লাহাব উক্ত পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার খুশির সংবাদ শুনে খুশিতে আত্মহারা
হয়ে হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে তৎক্ষণাৎ আযাদ করে দেয়। হযরত ইবনে জাযরী রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি বলেন, “আবু লাহাবের ন্যায় কাফির যার ধ্বংসের উল্লেখ করে ‘পবিত্র সুরা লাহাব শরীফ’ নাযিল হলো; সেই আবু লাহাব যদি সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে নিয়ামত পেতে পারে- তাহলে একজন মুসলমান পালন
করলে কি পুরস্কার পাবে তা চিন্তা করার অবকাশ নেই।
ওহাবীদের আরেক গুরু ইবনে তাইমিয়া ‘ইকতিদাউস সীরাতুল মুস্তাকীম’ বইয়ের ২৯৪ পৃষ্ঠায় লিখেছে, “যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ পালন করবে
মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে উত্তম বিনিময় দিবেন।”
নজদী ও তাইমিয়ার চ্যালা হাফিয সালাউদ্দীন ইউসুফ তার রচিত ‘মীলাদুন নবী’ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বইতে লিখেছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে মিসকীনদের সাহায্য করা কিংবা মসজিদ নির্মাণ
করা উচিত। আমরা এ ধরনের কাজকে সমর্থন করি।”
দেওবন্দীদের সর্বজনমান্য পীর হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি নিজেই উনার সুবিখ্যাত কিতাব ‘ফয়সালা হাফত মাসআলা’ কিতাবে পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ
উনাদের অনুষ্ঠান করা এবং পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করার মধ্যে আনন্দ লাভ করার কথা লিখেছেন।
দেওবন্দী, ওহাবী, তাবলীগীদের পরম পূজনীয় মালানা রফীউদ্দীন তার ‘তারিখে হেরামাইন’ কিতাবে লিখেছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ বা পবিত্র বিলাদাত শরীফ বর্ণনার মুহূর্তে পবিত্র ক্বিয়াম
শরীফ করা ঐ সমস্ত আলেম মুসতাহসান বা উত্তম আমল বলেছেন যারা হলেন যুগের মুহাদ্দিস ও
ফকীহ।”
তাহলে দেওবন্দী, তাবলীগী, জামাতী, মওদুদী, সালাফী, আহলে হাদীস, লা-মাযহাবী ইত্যাদি দলের অনুসারী তারা কি পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলানদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সালাম পালন করে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি অর্জন করবে না?
No comments:
Post a Comment