Wednesday, January 14, 2015

হিন্দুরা জাতিগতভাবে জালিয়াত, উগ্র, সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক



কেহ চিৎকার করিতে লাগিল, “মার, মার নেড়ে মার।কেহ গাহিল, “হরে মুরারে মধুকৈটভারে!কেহ গাহিল, “বন্দে মাতরম।কেহ বলে, “ভাই, এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধামাধবের মন্দির গড়িব?” (আনন্দমঠ, তৃতীয় খ-, অষ্টম পরিচ্ছেদ)
আনন্দমঠকে বলা হয় হিন্দুদের পলিটিক্যাল ডকট্রিন। আজকের ভারতে যে উগ্র হিন্দুত্ববাদ, তার শেকড় নিহিত রয়েছে চরম মুসলিমবিদ্বেষী বঙ্কিমচন্দ্রের রচিত আনন্দমঠে। সুতরাং এর মধ্যে যেই মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধামাধবের মন্দিরবানানোর উল্লেখ রয়েছে, তা মূলত গোটা হিন্দু সম্প্রদায়েরই জাতিগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এর ধারাবাহিকতাতেই বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে রামমন্দির তৈরি করার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বর্তমানে বিজেপির উগ্র হিন্দুরা।


কবরস্থানের উপর তৈরি করা হয়েছিল হিন্দুদের প্রধান কালীমন্দির দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির’:
ব্রিটিশআমলের পর যখন এ অঞ্চলের মুসলমান শাসনের অবসান হয়, তখন ব্রিটিশরা মুসলমানদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তিগুলো আত্মসাৎ করে তা তাদের অনুগত হিন্দুদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে শুরু করে। এখন আমরা জানি যে, ওয়াকফকৃত জমির মধ্যে মসজিদ, কবরস্থান, মাদরাসা প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়ে থাকে। ফলশ্রুতিতে সেসব মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান প্রভৃতি ব্রিটিশদের দালাল হিন্দুদের দ্বারা অপমানিত, অপবিত্র ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং সেগুলো ধ্বংস করে মন্দির নির্মাণ করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলী নদীর তীরে অবস্থিত দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির হিন্দুদের প্রধান কালীমন্দিরগুলোর একটি। রামকৃষ্ণ মিশনযার নামে নামকরণ হয়েছে, সেই রামকৃষ্ণ পরমহংস ছিল এই মন্দিরের পুরোহিত। উইকিপিডিয়াতে এই মন্দির নির্মাণের ইতিহাস সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে যে-
মন্দিরের ২০ একরের প্লটটি জন হেস্টি নামে এক ইংরেজের কাছ থেকে কেনা হয়। লোকমুখে জায়গাটি পরিচিত ছিল সাহেবান বাগিচা নামে। এর একটি অংশ ছিল কচ্ছপাকার মুসলমান গোরস্থান। তাই তন্ত্রমতে স্থানটি শক্তি উপাসনার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। আট বছরে নয় লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই মন্দির নির্মিত হয়।
অর্থাৎ পাঠকেরা বুঝতেই পারছেন যে, দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির তৈরী করা হয়েছিল যে জায়গাটিতে, তা ছিল সাহেবান বাগিচানামে মুসলমানদের ওয়াকফকৃত সম্পত্তি, যা ব্রিটিশরা দখল করে নিয়েছিল। উক্ত ওয়াকফকৃত জায়গায় একটি কচ্ছপ আকৃতির কবরস্থান ছিল।
হিন্দুরা তাদের কালীমন্দিরগুলো নির্মাণ করে মূলত শশ্মানের পাশে, কারণ কালীপূজা ও তন্ত্রসাধনার সাথে মৃত মানুষের লাশের বিষয়টি জড়িত। শশ্মানে হিন্দুদের লাশকে কেন্দ্র করেই কালীমন্দির নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখানে হিন্দুরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মুসলমান মুর্দাদের অপমান করতে, মুসলমানদের কবরস্থানকে অপবিত্র করতে তাকে কেন্দ্র করে কালীমন্দির নির্মাণ করেছে। মুসলমানদের পবিত্র লাশকে তারা নাপাক পূজা ও বিকৃত তন্ত্রসাধনার উপলক্ষ করেছে। নাউযুবিল্লাহ!
শুধু তাই নয়, কবরস্থানকে কেন্দ্র করে তৈরি করা মন্দিরকে হিন্দুরা ঘোষণা করেছে তাদের প্রধান মন্দির হিসেবে। অর্থাৎ এই মন্দির প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হিন্দুরা শুধু মুসলমানদের লাশকেই অপমানিত করেনি, তার সাথে সাথে গোটা মুসলিম জাতিকেই হিন্দুরা চরমভাবে হেয় করেছে, অপমানিত করেছে।

ঐতিহাসিক আদিনা মসজিদের উপর আক্রমণ ও বর্তমানে ভারতের মসজিদসমূহের উপর হামলা:
১৩৭৩ ঈসায়ীতে ইলিয়াস শাহী বংশের অন্তর্গত বাংলার স্বাধীন সুলতানী আমলের অন্যতম শাসক সুলতান সিকান্দার শাহ নির্মাণ করেন আদিনা মসজিদ। এই মসজিদটি তৎকালীন সময়ে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ ছিল।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মালদহে অবস্থিত এই মসজিদে ১৯৩২ ঈসায়ীতে হামলা চালিয়েছিল উগ্র হিন্দু সাঁওতালেরা। তৎকালীন সময়ে নিচুশ্রেণীর হিন্দুরা মসজিদসমূহে হামলার মাধ্যমে তাদের নিজেদেরকে উগ্র হিন্দু রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছিল। এ প্রসঙ্গে জয়া চ্যাটার্জি রচিত বাঙলা ভাগ হলো: হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ও দেশ বিভাগগ্রন্থের ২৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে-
ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে নিম্ন শ্রেণীর লোকদের মূলধারার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আনার এসব আন্দোলন তাদেরকে বাহ্যিকভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রতি আরো বেশি করে আকৃষ্ট করে। জিতু সাঁওতালের সর্বশেষ আক্রমণটি হয় ঐতিহাসিক আদিনা মসজিদকে ঘিরে, ১৯৩২ সালে। জিতু ও তার অনুসারী একদল সাঁওতাল লোক এই পরিত্যক্ত মসজিদে আক্রমণ চালায় এবং ধ্বংসাশেষের উপর অশাস্ত্রসম্মতভাবেকালী উপাসনার ব্যবস্থা করে। এ সময় পুলিশের গুলিতে জিতু নিহত হয়। চল্লিশের দশকের প্রথম দিকে নিম্ন শ্রেণীর হিন্দুদেরকে হিন্দু রাজনীতিতে আনার প্রয়াস যখন চরম আকার ধারণ করে, তখন নিম্ন শ্রেণীর হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে অনেক আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
জিতু সান্যালের নেতৃত্বে আদিনা মসজিদ দখল করে সেখানে কালীপূজা করার কথা বর্ণিত রয়েছে ইতিহাসে, ঠিক সেভাবেই ভারতের প্রত্যেকটি দাঙ্গাতেই মুসলমানদের মসজিদ ভেঙে সেখানে মন্দির তৈরি করা হয় এবং রীতিমতো পূজা-অর্চনা শুরু করে দেয়া হয়। গুজরাট দাঙ্গায় গুজরাটের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মসজিদ, মাদরাসা ও মাযার শরীফসমূহ ধ্বংস করা ও সেগুলোতে মন্দির তৈরি করা প্রসঙ্গে ভারতীয় ইতিহাসবিদ গোলাম আহমদ মোর্তজা তার রচিত ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়গ্রন্থের ৬১-৬২ পৃষ্ঠাতে উল্লেখ করেছেন-
মুসলমানদের ধনসম্পত্তি এবং নারী-শিশুদের শুধু প্রাণনাশ করার উদ্দেশ্য ছিল একথা মেনে নেয়া যায় না। কেননা তাদের মসজিদ-মাদরাসা ও দরগাহগুলো নিশ্চয়ই ঘাতকদের রুটি-রুজিতে হাত দেয়নি, তবুও সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে নিষ্ঠুরভাবে। মসজিদগুলো নামায পড়া ছাড়া আর কোনো কাজেই লাগান না মুসলমানরা। তবুও রেহাই পেলো না সেগুলো। ভাঙা হয়েছে ডান্ডিয়াবাজারের রাওপুরার মীর বাকার আলী মসজিদ। ভাঙা হয়েছে সালাতওয়াদা মসজিদ, ছিপওয়াদের হাজী হামজা মসজিদ। সেইসঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো নাভাবাজারের বেগম সাহেবার মসজিদ। কারেলীবাগ রোডে তাজগিরা কবরস্থানে অবস্থিত মদিনা মসজিদও ভাঙা হয়েছে। বারানপুরা মসজিদের দশাও হয় একই। প্রতাপনগরের ওভারব্রিজের নিচের মসজিদটিও ধ্বংস করেছে উগ্র রামভক্তের দল। তারসালি মসজিদ, মাকারপুরা মসজিদ এবং কিসানওয়াদির একটি মসজিদও ধুলিসাৎ করা হয়েছে ধর্মীয় উল্লাসে। ছানি রোডে মাদ্রাসা ও তৎসংলগ্ন মসজিদটিও আক্রান্ত হলো। এইভাবে চল্লিশটি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে। এই চল্লিশটি ছাড়াও ভাঙা হয়েছে আরো অনেক মসজিদ।
অতীব দুঃখ ও ক্ষোভের কথা এই যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মসজিদ ভাঙার পর তার অভ্যন্তরে বসানো হয়েছে হনুমান দেবতার মূর্তি। আর বেশ কয়েকটিতে শুরু করা হয়েছিল পূজা-অর্চনা ও আরতি। পীর-বুযূর্গ ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের কবর ও মাযার শরীফগুলোকেও রেহাই দেয়নি উগ্র রামভক্তেরা। মসজিদ ও মাযার শরীফসমূহের কতগুলো ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে তার উপর পিচঢালা রাস্তা এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে নবাগত কেউ ভাবতেই পারবেন না যে ঐ স্থানে একদিন ছিল স্থাপত্য শিল্পের ঐতিহাসিক কোন নিদর্শন।

হিন্দুরা শক্তের ভক্ত, নরমের যম:
উপরোক্ত আলোচনানুযায়ী, হিন্দুরা ব্রিটিশ আমল পরবর্তী সময়ে অসংখ্য মসজিদ ভেঙে সে স্থানে মন্দির নির্মাণ করেছে, যা ছিল মুসলমানদের দুর্বলতার সুযোগে হিন্দুদের আগ্রাসী মনোবৃত্তিরই বহিঃপ্রকাশ। তবে মুসলিম শাসন চলাকালীন সময়েও যখন মুসলমানদেরকে বহিঃশত্রুর আক্রমণে কিংবা যালিম শাসকের কারণে দুর্বল হয়ে পড়তে হতো, তখনও কিন্তু হিন্দুরা মুসলমানদের দুর্বলতার সুযোগে মসজিদ ভেঙে মন্দির বানাতে ভুল করতো না।
মুসলিম শাসনামলে হিন্দুদের মসজিদ ধ্বংস করা প্রসঙ্গে ভারতীয় ইতিহাসবিদ গোলাম আহমদ মোর্তজা তার রচিত ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন- সূফী ইতিহাসধর্মী লেখা থেকে আহমদ উল্লেখ করেছেন, মহীপালের লাহোর বিজয়ের কাহিনী। বহু মুসলমান শহীদ ও মসজিদ ভেঙে মন্দির বানায় ঐ যালিম হিন্দু রাজা। রানাসঙ্গের সামন্ত রায়সেনের আদেশে চান্দোরি, সারাংপুর, রনথাম্ভোরে মসজিদ ভেঙে সেখানে আস্তাবল তৈরি করা হয়। সেখানে গোবর লেপে দেয়া হয়। অষ্টাদশ শতকে শিখ ও জাঠরাও এ ধরনের কাজ করেছে। যদুনাথ সরকার লিখেছে, বদন সিংহের নেতৃত্বে জাঠরা আগ্রা প্রদেশে অভিযান চালিয়ে বাড়িঘর-বাগান-মসজিদ ভেঙেছে।
যালিম ও গুমরাহ মুঘল শাসক আকবরের সময়ে হিন্দুরা প্রশাসনিক সহায়তা নিয়ে বহু মসজিদ ভেঙে সে জায়গায় মন্দির বানিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. বুরহান ফারুক্বীর রচিত ‘Mujaddid's conception of Tawhid’ গ্রন্থের ২২ পৃষ্ঠায় এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে যে-
Islam was in great distress. Unbelievers could openly ridicule and condemn Islam and the Musalmans. At several places Musalmans had to pay with their lives for sacrificing the cow on Id-al-Adha. A number of mosques were destroyed by hindus and temples erected in their place.
উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে এই ৯৭ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশেও যালিম বাদশাহ আকবরের সময়ের ন্যায় প্রশাসনিক মদদে মুসলমানদের মসজিদের উপর হিন্দুরা হামলা করছে। দৈনিক আল ইহসান শরীফ উনার মধ্যে গত ২রা জুলাই ২০১৪ ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) তারাবীহর নামাযে হিন্দুদের পূজাকে কেন্দ্র করে বাধা, উগ্র হিন্দুদের আক্রমণে ৮-১০ জন মুসল্লী আহতশীর্ষক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল যে-
রাজধানীতে তারাবীর নামাযে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে গেন্ডারিয়ার স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরের রথযাত্রি এবং মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মন্দিরের হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের ইটের আঘাতে ৮ থেকে ১০ জন মুসল্লি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) রাতে তারাবীর নামাযের পর এ ঘটনা ঘটে।
গত ইয়াওমুল আহাদ (রবিবার) রথযাত্রায় অসুবিধা হচ্ছে এমন অজুহাত দাঁড় করিয়ে মন্দিরের পক্ষ থেকে তারাবীর নামায রাত ১০টার মধ্যে শেষ করবার জন্য চাপ দেয়া হয় মসজিদ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তারাবীর নামায রাত ১০টার মধ্যে শেষ না করার কারণে মসজিদের মুসল্লিদের ঢিল ছোড়া শুরু করে মন্দিরের একদল উচ্ছৃঙ্খল উগ্রবাদী হিন্দু। এ সময়ে ঘটনাস্থলে গেন্ডারিয়া থানার এসআই অমল কৃষ্ণ উপস্থিত হয় এবং মসজিদের ইমামকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়। এ সময় উপস্থিত মসজিদের মুসল্লিগণ এবং মসজিদ কমিটির লোকজনের হস্তক্ষেপে ইমামকে ছেড়ে দেয় এসআই অমল কৃষ্ণ।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মুহম্মদ সিরাজ জানান, আগামীকাল থেকে তারাবীর নামায রাত ১০টার মধ্যেই শেষ করতে হবে। অন্যথায় মন্দিরের কার্যক্রমে বাধা দেয়ার কারণে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে।” (নাউযুবিল্লাহ!)

উপসংহার:
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, মুসলমানরা দুর্বল হলেই, নরম হলেই হিন্দুরা তাদের উপর চড়াও হয় এবং তাদের মসজিদ-মাদরাসাসমূহের ক্ষতি করতে উদ্যত হয়। হিন্দুরা শক্তের ভক্ত, নরমের যম। সুতরাং হিন্দুদের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার জন্য মুসলমানদের অবশ্যই হিন্দুদের প্রতি শক্ত ও কঠোর হতে হবে।
বিগত দিনসমূহে হিন্দুরা কিভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের ঐতিহাসিক মসজিদসমূহ ভাঙচুর করেছে, তার বর্ণনা পাঠ্যপুস্তকে থাকতে হবে। হিন্দুদের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে ও বইপুস্তক রচনা করতে হবে। পত্রপত্রিকাতে লেখালেখি করতে হবে।
কিন্তু মুসলমানরা কখনোই হিন্দুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেনি, উল্টো ভাইবলে. বন্ধুবলে বুকে টেনে নিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! যার ফলে হিন্দুরা তাদের মসজিদ আজো তো ভাঙছেই, উল্টো বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দিরনামক কল্পিত মন্দির ছিল বলে মিথ্যা দাবি হিন্দুরা করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ৯ই ডিসেম্বর ২০১৪ ঈসায়ীতে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত হয়েছে যে, “ভারতের উত্তরপ্রদেশের বিজেপি প্রধান লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ি দাবি করেছে যে, পাক-ভারত উপমহাদেশে মুসলমানদের অন্যতম স্থাপত্য কীর্তি তাজমহল হিন্দুদের মন্দিরের অংশ ছিল।নাউযুবিল্লাহ! কতোবড় জালিয়াত হলে এ ধরনের বানোয়াট ও মিথ্যা দাবি করা যেতে পারে?
বাস্তবতা হচ্ছে, মুসলমানদের স্থাপত্যকীর্তিগুলো  দেখিয়েই ভারতের হিন্দু ভিক্ষুকগুলো তাদের পেট চালাচ্ছে। তাজমহল হচ্ছে ভারতের সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জনকারী পর্যটন স্থাপত্য। এর পর রয়েছে যথাক্রমে আগ্রা ফোর্ট, কুতুব মিনার, হুমায়ূনের সমাধি, লাল কেল্লা ও ফতেহপুর সিক্রি। এতগুলো মুসলিম স্থাপত্যের পর একটি হিন্দু স্থাপত্য আয়ের বিচারে তালিকায় স্থান পেয়েছে, আর তা হলো অজন্তা-ইলোরা গুহা। (সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া)
মুসলমানরা সত্য প্রকাশ করছে না, প্রতিবাদ করছে না বলেই আজ মিথ্যা, কুসংস্কার ও অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ হিন্দুধর্মের অনুসারীরা তাদের মিথ্যা নিয়ে এতোটা আস্ফালন দেখাতে পারছে। কিন্তু যদি মুসলমানরা সত্যকে অবলম্বন করে প্রতিবাদ করতো, তাহলে আজকে হিন্দুদের এই আস্ফালন আমাদের দেখতে হতো না।

মুসলমানরা প্রতিবাদ করলে অবশ্যই কামিয়াবী হাছিল করবে, এতে তো কোনো সন্দেহ নেই। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন- সত্য সমাগত মিথ্যা দূরীভূত। নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ার জন্যই পয়দা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment