Monday, January 26, 2015

ক্ষমতার মোহ! ক্ষমতার স্বাদ!!

মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ গযব খালেদার উপর; হাজার হাজার নির্মমতার জন্মদাত্রী খালেদাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বুঝিয়ে দিলেন ছেলেহারা স্বামীহারা স্বজনহারার বেদনা। সুবহানাল্লাহ!
এখন বাকি হাসিনা;
আমরা নিপীড়িতরা দেখতে থাকি।
++++++++++++=======++++++++
কোকোর মৃত্যুতে খালেদা কী কাঁদতে পারেন?
গোটা দেশবাসীকে কাঁদানোর দায়ে তিনি নিজে কী কাঁদার অধিকার রাখেন?
হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হওয়ার আর্তনাদে যিনি কাঁদেননি-
অথচ আজ নিজ ছেলে হারানোর কান্নায় লীন হওয়া কী খালেদার স্বার্থপরের কান্না নয়?
তারপরও কোকোর মৃত্যুতে খালেদা কাঁদছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে-
তিনি কেন কাঁদেন?
তিনি কী কাঁদতে পারেন?
তিনি কী নিথর হতে পারেন?
তিনি কী নির্বাক হতে পারেন?
তিনিও কী ঝরঝর করে কেঁদে দিতে পারেন?
কেঁদে কেঁদে ডুকরে উঠতে পারেন?
ছেলে হারানোর বেদনায় ব্যথাতুর হতে পারেন?
ব্যথা অনুভবের হৃদয় কী তার আছে?
অবরোধের নাশকতায় শিশু অনিক আর হৃদয়ের চোখ হারানো কী তাকে বেদনাহত করেছে?
হাসপাতালে মুমূর্ষু দুই বোন নুসরাত জাহান (১৩) ও ইসরাত জাহান নাদিয়ার মর্মান্তিক ছটফটানি কী তাকে মর্মাহত করেছে?
নাশকতায় করুণ মৃত্যুবরণ করেছে ১৮টি ফুটফুটে শিশু। সে দৃশ্য দেখে খালেদা স্তব্ধ হয়েছেন কী?।
এমন খবর দেশবাসী কোথাও পড়েছেন কী?
পাঁচ বছরের দুটি মেয়ে আদিয়া ও ফারযানার দেহাবয়ব ও সুন্দর মুখশ্রী যে ঝলসে গেছে তাতে তিনি অশ্রুশিক্ত হয়েছেন; এখবর পত্রিকায় পত্রস্থ হয়েছে কী?
হাসপাতালের বেডে টিটেন মিয়া যা কাতরাচ্ছে নিজের জন্য তার চেয়ে বেশি চাপা আর্তনাদে আকুলি-বিকুলি করছে মা ও ৫ বছরের মেয়ে আঁখির জন্য। চিকিৎসক কাছে গেলেই বলছে, ডাক্তার সাহেব আমার কথা শুনে মা যে কষ্ট পাচ্ছে তার চেয়ে বেশি কষ্ট আমাকে দেন। আমার ছোট মেয়ে আঁখি যেন আমার এই চেহারা না দেখে। সে ভয়ে চিৎকার করবে। টিটেন মিয়ার এই কথা শুনে বগুড়া মেডিক্যাল কলেজের নার্স চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
কিন্তু এ মর্মন্তুদ ঘটনায় খালেদার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি বেরিয়েছে- এখবর পত্রিকায় এসেছে কী?
ট্রাকের হেলপার আরমান মিয়া। পেট্রোলবোমার আগুন তাকে জ্বালিয়েছে। হাসপাতাল থেকে বের হতে বিলাপ করছে বারেবারে। কারণ তার ছোট্ট সংসারে কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন অতিথি আসবে। এই সময়টুকুতে স্ত্রী শিল্পী আক্তারের সঙ্গেই থাকার কথা তার। পুড়ে যাওয়া শরীরের সব শক্তি জড়ো করে যখন বলে উঠেন ‘আমাকে যেতে দাও, স্ত্রীর কাছে, আমাদের সন্তান আসবে।’
স্বামীর চোখের কাছে চোখ রেখে কাঁদছে শেফালী আক্তার। ‘একটিবারের জন্য চোখ খোল’ শুধু একটিবার...।
স্বামী মাঈনউদ্দিন চেষ্টা করেও চোখ খুলতে পারেন না। ২০ জানুয়ারি-২০১৫ ফেনীতে পেট্রোলবোমার আঘাতে ঝলসে যায় তার পুরো মুখসহ শরীরের ২৪ শতাংশ।
এই করুণ কাহিনী খালেদার মনে করুণার উদ্রেক করেছে- এমন খবর পত্রিকার পাতায় এসেছে কী?
ট্রাকের ড্রাইভার পিয়ার মিয়া। বয়স ৬৫ ছুঁই ছুঁই। দিন যত যাচ্ছে, ক্ষতগুলো দেবে যাচ্ছে। যন্ত্রণাও বাড়ছে। চামড়া প্রতিস্থাপন জরুরী হয়ে পড়েছে। সাদা দাড়ি, চুলগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নির্বাক তাকিয়ে থাকা ব্যতীত আর যেন কিছুই করার নেই স্ত্রী সামসুন্নাহারের। বললেন, তার স্বামীর কী অপরাধ ছিল? ১০ জানুয়ারি-২০১৫ কুমিল্লায় ট্রাকের দরজা আটকে দিয়ে তার নাতির বয়সী ছেলেরা পেট্রলবোমা মারলো। কি করে সম্ভব হলো...’ বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় সামসুন্নাহার।
কিন্তু সে কান্নায় খালেদা করুণাসিক্ত হয়েছেন- দেশের মানুষ সে খবর পত্রিকার পাতায় দেখেছে কী?
আমি কী নিয়া বাঁচুম? আমি কী দোষ করছিলাম? আমার বাচ্চাটারে ক্যান মাইরা ফালাইলো? আমি এখন যাযাবর। ককটেলের আঘাতে নিহত কলেজ ছাত্র সানজিদ হাসান অভির মা নূরজাহান বেগম রিতা আহাজারি করে এসব কথা বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। তার চিৎকার এবং আহাজারিতে মর্গের বাতাস ভারি হয়ে উঠে। এই করুণ আহাজারি খালেদার হৃদয়কে আবেগতাড়িত করেছে- সে কবর দেশবাসী জেনেছে কী?
‘আমার বাচ্চাটাকে ওরা বাঁচতে দিলো না...।
 আর কখনো ‘মা’ বলে ডাকবে না আমাকে’- এমন আর্তি করেই যাচ্ছিলেন কলেজ ছাত্র সানজিদ হোসেন অভির (১৯) মা নূরজাহান বেগম। চলমান অবরোধের সহিংসতার শিকার হয়ে ঝরে গেল অভির প্রাণ। দুর্বৃত্তদের ছুড়ে দেয়া ককটেলে মারাত্মক আঘাত পেয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলো অভি। বড় হয়ে আইনজীবী হয়ে মানুষের সেবা করবে এমনটাই ছিল অভির স্বপ্ন। কিন্তু মা তার চোখের সামনেই পুত্রের সে স্বপ্নের মৃত্যু হতে দেখলেন। খালি হলো অভাগা এ মায়ের বুক।
এ খবর সব পত্রিকায় এসেছে। কিন্তু খালেদা একটিবারের জন্য চোখের পানি ফেলেছেন- এ কথা দেশবাসী জানতে পেরেছেন কী?
হাজারো নারীর হাজারো মায়ের বুকভারী কান্নার কত ওজন এত্তসব নির্মমতা থেকেও অবরোধ-নাশকতার হুকুমদাত্রী খালেদা বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন ঠিকই বুঝতে পেরেছেন। মিডিয়া চাউর করেছে কোকো রহমানের মৃত্যুর খবর। ............. ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে শুনে তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। একটু পরে বুঝতে পেরে তিনি স্তব্ধ। এরপর নিথর, নির্বাক। এরপর ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠেন তিনি। কিন্তু অবরোধের আগুনে শত শত সন্তানহারা মায়েদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া-
ম্যাডাম এখন কাঁদে কেন? এখন ম্যাডামের চোখে পানি কেন? দেশের ইতিহাসে তিনবারের মতো প্রধানমন্ত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়া তো আপোসহীন নেত্রী! তিনি কী কান্নার কাছে আপোস করতে পারেন? এতদিন তো করেননি। গত পরশু তবে কেন করলেন? কেন কাঁদলেন?
বিভিন্ন মিডিয়ায়-পত্র-পত্রিকায় বিভিন্নভাবে খবরটি এসেছে।
“ছেলের আকস্মিক খবরে খালেদা জিয়া শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।”
“দুই ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে একরকম নির্বাক হয়ে কেঁদে ফেলেন খালেদা জিয়া।”
“কান্নায় তিনি কেনো কথা বলতে পারেননি।”
“শোকে বিহ্বল খালেদা জিয়া।”
“খবর শোনার পর একজন কোমলময়ী মা হিসেবে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।”
এদিকে খালেদার ডাকা অবরোধ-নাশকতার বর্বরতায় সদ্য সন্তানহারা মায়েরা সংক্ষুব্ধ হয়ে আরো জানিয়েছেন- অন্যের সন্তান হারানোর ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া অন্ধ, বধির, বোবা। আজ পর্যন্ত খালেদা জিয়া অবরোধের আগুনে নিহত কারো ক্ষেত্রে ন্যূনতম সমবেদনা জানাননি। সহমর্মী হননি। এতসব বীভৎস এবং করুণ মৃত্যুর পরও খালেদা জিয়ার চোখে অশ্রু ঝরেনি। কিন্তু নিজের অপরাধী ও মদে আসক্ত ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যুতেই খালেদা জিয়া কেঁদে কেঁদে জারেজার হলেন। এই কী তবে দেশনেত্রীর দেশবাসীর প্রতি দরদ? দেশনেত্রীর সে সেøাগান তবে কোথায় গেল? “ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে দেশ বড়।” কিন্তু খালেদার কাছে দেশের চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে ব্যক্তি বা ছেলে কোকো বড়।
বলাবাহুল্য, পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন- কোকোর মৃত্যুতে খালেদার কাঁদার অধিকার নেই। কারণ তার ডাকা অবরোধ-নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হাজার হাজার সন্তানহারা মাকে এখনো কাঁদাচ্ছে। খালেদার অবরোধ-নাশকতাই তাদের কাঁদার কারণ। (নাঊযুবিল্লাহ!) কিন্তু সে কাঁদায়, সে বেদনায় সহমর্মী হয়ে খালেদার চোখে কান্না আসেনি। তারপরেও নিজ ছেলের মৃত্যুতে যদি খালেদার কান্না আসে তবে তা স্বার্থবাদী কান্না। এ কান্না সত্যিকারের কান্না নয়।
মূলত, মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ গযব খালেদার উপর; হাজার হাজার নির্মমতার জন্মদাত্রী খালেদাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বুঝিয়ে দিলেন ছেলেহারা স্বামীহারা স্বজনহারার বেদনা। সুবহানাল্লাহ!
এখন বাকি হাসিনা;
আমরা নিপীড়িতরা দেখতে থাকি।

No comments:

Post a Comment