Sunday, March 15, 2015

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হরতাল-অবরোধ হারাম। হরতাল-অবরোধ শুধু দুনিয়াবী ক্ষতিই নয়; ঈমানী ক্ষতিরও কারণ। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে হরতাল-অবরোধ চলতে পারে না।


দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট আহূত অনির্দিষ্টকালের অবরোধ। প্রতি সপ্তাহে দুই দফায় ৫ দিন করে পালিত হচ্ছে হরতাল। ৫ই জানুয়ারি-২০১৫ শুরু হওয়া এ নাশকতার আন্দোলনে প্রতিদিনই ঘটছে সহিংস ঘটনা। বিরোধী জোটের নাশকতার আন্দোলন কর্মসূচি ও সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে তৈরি হয়েছে এক দমবদ্ধ পরিস্থিতি। জাতীয় জীবনের সর্বত্রই রক্তক্ষরণ। বিপর্যস্ত জনজীবন। প্রতিনিয়তই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। রাজপথে পুড়ে কয়লা হচ্ছে মানুষ। গণতান্ত্রিক দুর্বৃত্তদের পেট্রোলবোমার আঘাতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের। আহত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে অন্তত ১৪০০ জন নিরীহ মানুষ। অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় মারা গেছে হরতাল-অবরোধকারী ৬০ দুর্বৃত্ত। দুই মাসে রাজধানীর সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত অচল অবস্থায় আছে। মহাসড়কে চলন্ত গাড়িতে একের পর এক পেট্রোলবোমা হামলার কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দূরপাল্লার যাত্রীদের মাঝে। অবরোধে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ২২০০ যানবাহন।

এফবিসিসিআইর হিসাব অনুযায়ী, প্রতিদিনের হরতাল-অবরোধে ব্যবসায়ীদের দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা হারে ক্ষতি হচ্ছে। সেই হিসাবে ৫ জানুয়ারি-২০১৫ থেকে শুরু হওয়া অবরোধের ৬১ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ ৬৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির হিসাবে দৈনিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার ৭৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। ওই হিসাবে গত ৭ই মার্চ-২০১৫ পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থাৎ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা গিলে ফেলেছে গত ৬১ দিনের টানা অবরোধ-হরতাল। এই অর্থের পুরোটাই গেছে দেশের জনগণ অথবা ব্যক্তিগত উপার্জন ও প্রাতিষ্ঠানিক সেবা খাত থেকে। এই অভাবিত রাজনৈতিক দুর্যোগ গোটা অর্থনীতিতে সৃষ্টি করেছে এক বিরাট ক্ষত।
জিডিপির মাধ্যমেই নির্ধারিত হয় একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে একটি অর্থবছরে সম্পন্ন হওয়া মোট ১৫টি খাতের উৎপাদনের ভিত্তিতে জিডিপি নিরূপণ করা হয়। কৃষি, শিল্প ও সেবা- এই তিনটি বৃহৎ খাতের আওতাভুক্ত হচ্ছে এসব খাত। কয়েকটি খাত আবার একাধিক উপখাতে বিভক্ত। সার্বিক শিল্প খাতের আওতাধীন খাতগুলো হচ্ছে- খনিজ ও খনন, ম্যানুফ্যাকচারিং, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ এবং নির্মাণ। এছাড়া পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য, হোটেল-রেস্তোরাঁ, পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ, আর্থিক প্রাতিষ্ঠানিক সেবা, রিয়েল এস্টেট, ভাড়া ও অন্যান্য ব্যবসা এবং লোকপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা এবং কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত খাতগুলোর সমন্বিত উৎপাদনই সেবা খাতের মোট উৎপাদন। এগুলোর বাজারমূল্য নির্ণয় করা হয়। এভাবে এক অর্থবছরের তুলনায় আরেক অর্থবছরের উৎপাদন, ভোগ-ব্যয় ও চাহিদার পার্থক্য নির্ণিত হয় জিডিপির মধ্য দিয়ে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এর আগের (২০১২-১৩) অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোট দেশজ উৎপাদন টাকার অংকে বেড়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা, যা ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নানা কারণেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের সার্বিক অর্থনীতির একটি গতিশীল চেহারা লক্ষণীয় হয়ে উঠে। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে শুধু চলতি (২০১৪-১৫) অর্থবছরের হিসাবে। ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন থাকলে এবারও জাতীয় অর্থনীতিতে আরো দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি যোগ হতে পারতো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা, অবরোধ-হরতাল ও সহিংসতা মন্থর করে দিয়েছে গোটা অর্থনীতির চাকা।
ক্ষতিকর জেনেও অতীত সরকারগুলো কখনো হরতাল বন্ধে আইনি পথে যায়নি। দলগুলো কোনো বিষয়ে কখনো একমত হতে না পারলেও হরতাল করার অধিকার (!) রক্ষায় তারা সবসময়ই সোচ্চার ও সহমত। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এই ক্ষতিকর কর্মসূচি বন্ধে আইন করার দাবিতে সোচ্চার হয়। ওই সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে তখনকার শেরাটন হোটেলে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। ওই পার্টিতে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলো। কিন্তু তাদের কাছ থেকে হরতাল না করার অঙ্গীকার আদায়ের বহু চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
বিশ্লেষকরা বলছে, এরশাদবিরোধী আন্দোলনের পর হরতালের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দল দাবি আদায় করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের দাবি উপেক্ষা করে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচন করেছিল। ওই সময় আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন হরতাল করেও নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। একইভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে একের পর এক হরতাল করেছে। তাতে দাবি আদায় তো হয়ইনি, উল্টো জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে।
হরতাল সমর্থকগোষ্ঠীতাদের পক্ষে সংবিধানের ৩৭ (সমাবেশের স্বাধীনতা), ৩৮ (সংগঠনের স্বাধীনতা), ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা) অনুচ্ছেদের দোহাই দেয়। কিন্তু তারা ভুলে যায় ওই অনুচ্ছেদগুলোতে প্রদত্ত অধিকার নিরঙ্কুশ নয়। যেমন ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় প্রত্যেক নাগরিকের সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে। একইভাবে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংগঠনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে প্রয়োগযোগ্য।
সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধসাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সংগঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি- (ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। (খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। (গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকের বিরুদ্ধে কিংবা অন্যকোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়। (ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থী হয়। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তাদান করা হইলো। (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং (খ) সংবাদপত্র ক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হলো।
সংবিধানের উপরোক্ত অনুচ্ছেদগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, হরতাল সমর্থনকারী দুর্বৃত্তরা সংবিধানের এ তিনটি অনুচ্ছেদের দোহাই দিলেও বর্তমানে প্রচলিত জ্বালাও-পোড়াও ধারার হরতাল সংবিধান সমর্থন করে না। বরং জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচির হরতালের কারণে সংবিধানের ৩৬ (চলাফেরার স্বাধীনতা), ৪০ (পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতা, ও ৪২ (সম্পত্তির অধিকার) অনুচ্ছেদ সরাসরি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। হরতালের কারণে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলছে না। দেশের অর্থনীতি হয়ে পড়েছে স্থবির। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইন মানা কর্তব্যবলা হয়েছে। কিন্তু হরতালকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কাজেই গণতন্ত্রের দোহাই দানকারী বাংলাদেশ সরকারেরও উচিত- সংবিধানের আলোকেই হরতালকে আইন করে চিরতরে বন্ধ করা।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, হরতাল অবরোধ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হারাম। কারণ হরতাল হচ্ছে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার রীতিনীতি বহির্ভূত গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি বিজাতীয় ধ্যান-ধারণা ও অপকৌশল। যাতে শান্তি তো না-ই; বরং অশান্তির পথকে প্রশস্ত করে। তাই এটি কোনো মুসলমানের জন্য অনুসরণীয় নয়। মুসলমানের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় হচ্ছেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে মনোনীত ও নাযিলকৃত পবিত্র দ্বীন ইসলাম।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ছাড়া অন্যকোনো দ্বীন (নিয়ম-নীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।(পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
হরতাল হারাম হওয়ার আর একটি কারণ হলো, এটা মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্মকে ব্যাহত করে, জনজীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা যমীনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করো না।(পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “ফিতনা-ফাসাদ ক্বতলের চেয়েও ভয়াবহ।(পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯১)
হরতালের ফলে যারা দিনমজুর, রোজ কামাই করে রোজ খায়, তাদের কষ্ট হয়। মুমিন মুসলমান না নিরাপদ থাকে, না শান্তিতে থাকে। বরং কষ্টে দিনাতিপাত করে, রোগীদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যায়।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “কোনো মুসলমানকে কষ্ট দেয়া কুফরী।
হরতাল এক ধরনের যুলুম, যা শুধু ব্যক্তি পর্যায়েই নয়; বরং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও হয়।
অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিমদেরকে পছন্দ করেন না।(পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা অত্যাচার করো না এবং অত্যাচারিতও হয়ো না।(পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭৯)
যে সমস্ত যালিমরা গুমরাহীর মধ্যে দৃঢ়, তাদের প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিমদেরকে হিদায়েত দেন না।(পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৬)
অর্থাৎ যে সমস্ত যালিম সম্প্রদায় তাদের যুলুমের মধ্যে দৃঢ় থাকে, তারা কখনোই মহান আল্লাহ পাক উনার হিদায়েত লাভ করতে পারবে না।
মূলত, হরতাল-অবরোধ আর যুলুম ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। কাজেই যেখানে হরতাল-অবরোধ হবে, সেখানেই যুলুম হবে। যুলুম ব্যতীত কোনো হরতাল-অবরোধ সংঘটিত হতে পারে না। কাজেই হরতাল-অবরোধ করা জায়িয নেই, বরং তা সম্পূর্ণরূপে হারাম।
হরতাল যে কারণে করা হয়, অর্থাৎ অপরাধীকে শাস্তি দেয়া; তা মোটেই হয় না। বরং অপরাধী অর্থনৈতিক ও মানবিক সব দিক থেকেই বহাল তবিয়তে অবস্থান করে থাকে। কিন্তু শাস্তি ভোগ করে শুধু জনসাধারণ, যারা অপরাধী নয়। অথচ হরতালের ফলে একজনের অপরাধের শাস্তি অন্যজনকে চাপিয়ে দেয়া হয়, এটা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিধান নয়। বরং মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম হলো, “একজনের গুনাহর বোঝা অন্যজন বহন করবে না।(পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৪)

উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বহু দলীল রয়েছে যে, হরতাল করা জায়িয নেই। কিন্তু এদেশের ৯৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমান উনারা খুব কম সংখ্যকই একথা জানে ও মানে। অথচ হরতাল শুধু দুনিয়াবী ক্ষতিই নয়; হরতাল ঈমানী ক্ষতিরও কারণ। কাজেই ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে হারাম হরতাল ও অবরোধ চলতে পারে না।

No comments:

Post a Comment