পঞ্চম শ্রেণীর ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বইয়ের ১১৯ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, “মদীনার সনদ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, কূটনৈতিক
দূরদর্শিতা, ধর্মীয়
সহিষ্ণুতা এবং সুন্দর সমাজ গঠনের এক জ্বলন্ত সাক্ষর বহন করে।”
উক্ত লেখাটি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শান মুবারকের
প্রতি ইহানত হওয়ার কারণে কুফরী হয়েছে।
স্মরণীয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত শ্রেষ্ঠতম রসূল ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অর্থাৎ উনার প্রতিটি
কাজ সম্মানিত ওহী মুবারক দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে; তন্মধ্যে মদীনা সনদও অন্তর্ভুক্ত।
কাজেই মদীনা সনদের দ্বারা উনার
সম্মানিত রিসালতী শান মুবারক প্রকাশিত হয়েছে। অন্য কিছু প্রকাশিত হয়নি। সুতরাং রিসালতী
শান মুবারকের সাথে দুনিয়াবী এবং কাফির-মুশরিক ও ফাসিক-ফুজ্জারদের কথিত বুলি ‘রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, কূটনৈতিক দূরদর্শিতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সুন্দর সমাজগঠনের জ্বলন্ত সাক্ষর’ ইত্যাদি বিষয়গুলির তুলনা দেয়াটা প্রকাশ্য কুফরীর শামিল।
আসলে কাফির, মুশরিক, মুনাফিকদের
আমল বা কর্মের কোনো দলীল নেই। তাই তারা তাদের মনগড়া প্রবৃত্তিপূজারী কর্মগুলি নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা হযরত খুলাফায়ে
রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আমল মুবারকের সাথে তুলনা দিয়ে জায়িয করতে চায়।
কিন্তু তা কস্মিনকালেও সম্ভব
নয়। কেননা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম এক বিষয় আর মানবরচিত ধর্ম-মতবাদ, নিয়ম-নীতি আরেক বিষয়।
মূলত, উক্তরূপ লেখার দ্বারা ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’র নাম দিয়ে মুসলমান শিক্ষার্থীদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কুফরী ধারণা দেয়া হচ্ছে বা
শেখানো হচ্ছে যে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনিও অন্য মানুষের মতো একজন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন, কূটনৈতিক দূরদর্শিতা সম্পন্ন ব্যক্তি। নাউযুবিল্লাহ!
কাফির, মুশরিক, মুনাফিক
এবং তাদের এজেন্ট উলামায়ে সূ’দের চক্রান্তের
বিরুদ্ধে মহান আল্লাহ পাক উনার সুস্পষ্ট ঘোষণা মুবারক হচ্ছে-
وما
محمد
الا
رسول .
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
রসূল ব্যতীত আর কিছু নন।” (পবিত্র
সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৪)
আরো ইরশাদ মুবারক হচ্ছে-
ماكان
محمد
ابا
احد
من
رجالكم
ولكن
رسول
الله
وخاتم
النبيين
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি তোমাদের কোনো (প্রাপ্তবয়স্ক) পুরুষের পিতা নন। বরং তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ
পাক উনার রসূল এবং সর্বশেষ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে
বর্ণিত রয়েছে। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
انا
قائد
المرسلين
انا
سيد
المرسلين
انا
امام
النبيين
انا
خاتم
النبيين
انا
اكرم
الاولين
والاخرين
انا
حبيب
الله
انا
اول
شافع
واول
مشفع
انا
حامل
لواء
الحمد
يوم
القيامة .
অর্থ: “আমি হচ্ছি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ক্বয়িদ (অগ্রগামী), উনাদের সাইয়্যিদ (শ্রেষ্ঠ বা প্রধান), উনাদের ইমাম, উনাদের মধ্যে সর্বশেষ, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের চেয়ে সম্মানিত, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং আমারই সুপারিশ সর্বপ্রথম কবুল করা
হবে এবং ক্বিয়ামতের দিন আমিই হবো প্রশংসার পতাকা বহনকারী বা উত্তোলনকারী।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, দারিমী শরীফ, কানযুল উম্মাল শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী, শরহে নববী, ফতহুল মুলহিম, উরফুশ শাযী, তুহফাতুল আহওয়াজী, মিরকাত, আশয়াতুল
লুময়াত, লুময়াত, ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবী, মুজাহিরে
হক্ব, মাদারিজুন নুবুওওয়াত, খাছায়িছুল কুবরা, কিতাবুল আলক্বাব ইত্যাদি।)
কাজেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ, ধর্মীয় সহিষ্ণুতাবিদ, সমাজবিদ ইত্যাদি বলা প্রত্যেকটি কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী
হওয়ার কারণ।
অতএব, অতিসত্বর উক্ত কুফরী লেখাটি সংশোধন করে ছহীহ শুদ্ধ বিষয় উল্লেখ
করে বইটি ছাপানো কর্তৃপক্ষের জন্য ঈমানী দায়িত্ব।
No comments:
Post a Comment