Wednesday, January 27, 2016

পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র অধীন হতে পারে না।


পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তবে কী তোমরা কিতাবের কিছু অংশ গ্রহণ করবে? এবং কিছু অংশ অস্বীকার করবে?”
অর্থাৎ কিছু মানা আর কিছু না মানা মানুষের প্রাচীন প্রবৃত্তি। কিন্তু এটা ঈমানদারগণ উনাদের পরিচয় নয়।
মুসলমান হিসেবে থাকতে হলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণভাবেই মানতে হবে। শুধু সংবিধানে কথিত রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ বা ‘বিসমিল্লাহ’ লিপিবদ্ধ রাখলেই চলবে না; পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতাও ঢোকানো যাবে না। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে ঈমানদারগণ! আপনারা পরিপূর্ণভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করুন।”

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে শুধু পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করার কথাই বলা হয়নি; পাশাপাশি ‘ইসলাম’ই যে পরিপূর্ণ এবং একমাত্র মনোনীত দ্বীন, তাও পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার ৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান থেকে আরম্ভ করে সর্বস্তর তথা সর্বসাধারণ পর্যন্ত একটা বিষয় খুব স্পষ্টভাবে এবং অনিবার্যভাবে অনুধাবন করতে হবে যে- ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই অন্যান্য ধর্মের মতো নয়’।
কাজেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই অন্যান্য ধর্মের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সহাবস্থানে থাকতে পারে না। পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই ধর্মনিরপেক্ষতার অধীন হতে পারে না।
উল্লেখ্য, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে অন্যান্য ধর্ম পালনের যে অধিকার দেয়া হয় তা দ্বারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের পরিবেশ নিশ্চিত হয় না। তাছাড়া পবিত্র দ্বীন ইসলাম যে অন্যান্য ধর্মের উপর প্রাধান্যপ্রাপ্ত ও শ্রেষ্ঠ এবং একমাত্র দ্বীন তা ধর্মনিরপেক্ষতা দ্বারা প্রতিফলিত হয় না।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তিনি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েত এবং সত্য দ্বীন ইসলাম দিয়ে পাঠিয়েছেন। মানবরচিত সমস্ত জীবনব্যবস্থার উপরে প্রাধান্য-শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে।”
ধর্মনিরপেক্ষতার নামে যারা সব ধর্মাবলম্বীর সমান ধর্মীয় অধিকারের কথা বলে থাকে; তাদের নিকট এদেশের ৯৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমান উনাদের জ্বলন্ত প্রশ্ন যে- তারা মুসলমানগণ উনাদেরকে তাদের পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের অধিকার স্বীকার করেন কীনা?
*সোজা ভাষায়- এদেশের ৯৮ ভাগ অধিবাসী তাদের সম্মানিত দ্বীন পালনের নিশ্চয়তা পাবেন কীনা?
*পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ পাবেন কীনা?
*মুসলমানগণ উনাদের উপর নিপীড়ন বন্ধ করা হবে কীনা?
কারণ একজন মুসলমান যদি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের নির্দেশ যথাযথ পালনের আবহ ও অবকাশ না পান, বরং পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আদেশ পালন অথবা প্রতিফলিত করতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হন; তাহলে তার ধর্মীয় অধিকার দেয়া হচ্ছে- এটা কী করে বলা যায়?
যদিও বেশ জোরেশোরে এবং খুবই দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সব ধর্মের সমান অধিকার।’ কিন্তু বাস্তবে কথিত ধর্মনিরপেক্ষতা হলো- মুসলমানগণ উনাদের জন্য পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ব্যক্তি জীবনের সামান্য কিছু অংশে সীমাবদ্ধ রেখে সমাজ ও ব্যবহারিক সব দিক থেকে মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধ থেকে তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন থেকে মুক্ত রাখা। নাঊযুবিল্লাহ!
যে কারণে আমেরিকায় ওবামা গির্জায় বাইবেল ধরে শপথ করলেও তা ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষতি করে না। ইংল্যান্ডের রাজতন্ত্রে রাজা খ্রিস্টধর্ম বাদ দিলে সে ‘রাজা’ পদ হারাবে- এ বিধান থাকলেও ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষতি হয় না। অপরদিকে ফ্রান্স বোরকা পরলে জরিমানার বিধান করলেও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের তালিকা থেকে বাদ যায় না।
কিন্তু এদেশের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করলে কথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা জাহিলের মতো হৈ চৈ করে উঠে। নাঊযুবিল্লাহ! ‘পর্দা পালন করতে বাধ্য করা যাবে না’- এ ধরনের ইসলামবিরোধী রুলিংও দেয়া হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
তাদের অজ্ঞতার জন্যই তারা প্রশ্ন করে রাষ্ট্রের আবার ধর্ম কী? তাহলে কী তারা রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলার’ এদেশে নতুন করে প্রশ্ন তুলবে- রাষ্ট্রের আবার ভাষা কী? রাষ্ট্রের যদি ধর্মই না থাকে, তবে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধানরা ধর্মীয় বিশেষ দিনে বাণী দেয় কেন?
রাষ্ট্রের যদি ধর্মেরই প্রয়োজন না হয়; তাহলে রাষ্ট্রীয় তথ্যে ধর্মের পরিচয় দিতে হয় কেন?
রাষ্ট্রের যদি ধর্মই না থাকে, তাহলে রাষ্ট্রের ধর্ম মন্ত্রণালয় রয়েছে কেন?
রাষ্ট্র তো কোনো বায়বীয় ধারণা নয়। রাষ্ট্রের একটা ভৌগোলিক অবস্থান রয়েছে। এই সীমারেখার মধ্যেই দেশপ্রেমের উন্মেষ হয়। এজন্য যদি জাতীয় পতাকা থেকে জাতীয় মসজিদ থাকতে পারে, কথিত জাতীয় সঙ্গীত মূল্যায়িত হতে পারে; তাহলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কি করে অবমূল্যায়িত হতে পারে?
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত, আচার, সংস্কৃতি যদি প্রাধান্যের সাথে প্রতিফলিত হয়; তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মও কেন প্রতিফলিত হবে না? (সঙ্কলিত)

No comments:

Post a Comment