Friday, March 25, 2016

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ॥

 
পদ্মা মেঘনা যমুনা বিধৌত ব-দ্বীপের দেশ এই সোনার বাংলাদেশ শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশ। বহু নদী বেষ্টিত এ ভূ-ভাগের এক বড় অর্জন- বাঙালি মুসলমানদের অনন্য এক ইতিহাস, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২৬ মার্চ।
পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ জনপদে আগ্নেয়গিরির মতো জ্বলে উঠেছিলো স্বাধীনতার দীপ্ত শিখা। ৪৫ বছর আগে এই দিনে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় এদেশের মানুষকে এনে দিয়েছিলো আত্মপরিচয়ের নতুন ঠিকানা। তবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মার্চের অসহযোগ আন্দোলন এবং ২৫ মার্চ ইতিহাসের এক জঘন্য গণহত্যার পর ২৬ মার্চের রক্তিম সূর্যোদয়ের সাথে পেয়েছি বহু প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা অর্থাৎ এদিন সূচিত হয়েছিলো স্বাধীনতা অর্জনের মুক্তিযুদ্ধ।

১৯৭১ সালের মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের মানুষ পাকী সরকার বিরোধী সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একাত্তরের ১ মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঘোষণার পর সর্বস্তরের স্বাধীনতাকামী বাঙালি মুসলমানরা চরম ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মার্চের পয়লা সপ্তাহ থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশের মক্তব, মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। কার্যতঃ অচল হয়ে পড়ে দেশ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো জনতার বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন: এবারের সংগ্রাম- আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম- আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। অর্থাৎ প্রকাশ্যে জনসমুদ্রের ঘোষণাতে সেদিনই মূলত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণার পর স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ এদেশের মানুষ চূড়ান্ত সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ২৬ মার্চ সারাদেশে বেজে উঠে স্বাধীনতার দামামা। শুরু হয় সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধ। টানা ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লক্ষ বীরের সাগরসম রক্ত আর প্রায় ৫ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এসেছে বিজয়। অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা।

উল্লেখ্য, এই যে বিশাল ত্যাগের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এসছে, সে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে তথা সমৃদ্ধশালী ঐতিবাহী সোনার বাংলা গড়তে হলে, গণহত্যায় পাকী বাহিনীকে প্ররোচনাদানকারী জামাতী, দেওবন্দী, কওমী, খারিজী, সালাফী ওহাবীপন্থী রাজাকার, আল-বাদর, শান্তিকমিটি, আল-শামস ঘাতকদের অবশ্যই বিচার দ্রুত শেষ করে সবার শাস্তি অতিদ্রুত কার্যকর করতে হবে। সর্বত্র ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। কেননা ৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ের মূলে মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিই ছিলো- পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না।আর ৭০-এর নির্বাচনের বিজয়ী ফলাফল অস্বীকার করাই ছিলো মুক্তিযুদ্ধের কারণ। যার ফল আমাদের এই স্বাধীন ভূমি। কাজেই মহান স্বাধীনতা দিবসে সব দেশপ্রেমিক বাঙালি মুসলমানের একমাত্র কামনা এটাই যে- সব যুদ্ধাপরাধী ধর্মব্যবসায়ীর শাস্তি দ্রুত কার্যকর করা এবং প্রশাসনের সর্বস্তরে ইসলাম জারি করা। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখা।

No comments:

Post a Comment