Thursday, July 11, 2013

রোযার শুরুতেই বদলে গেছে স্বাভাবিক দৃশ্যপট, সর্বত্র ধর্মীয় পরিবেশের ছোঁয়া ॥ আহ! এমনটি যদি সারাবছর থাকতো কতো না ভালো হতো।



১২ ছানী ১৩৮১ শামসী, ১১ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমযান। বুধবার দিবাগত রাতে তারাবীহর নামায সাহরির মাধ্যমে রোযা রাখা শুরু করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
এদিকে রোযা শুরু হওয়ার সাথে সাথে বদলে গেছে স্বাভাবিক সব দৃশ্যপট। দেশের সর্বত্রই এখন বিরাজ করছে রোযার ছোঁয়া। বুধবার মসজিদগুলোতে তারাবীহর নামাযের জন্য মুসল্লিদের ভিড় ছিলো লক্ষণীয়। দিনের অন্যান্য ওয়াক্তেও মসজিদে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সাহরীর সময় ঘুম থেকে জাগাতে সব এলাকার মসজিদগুলো থেকে মাইকে ডাকা হয়। এসময় পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত হামদ শরীফ, না শরীফ, ক্বাছীদা শরীফ পরিবেশন করেন অনেকে। বিভিন্ন এলাকায়সাহরি পার্টিনামে খ্যাত তরুণেরা দল বেঁধে লোকজনের ঘুম থেকে সজাগ করার চেষ্টা করে। তবে দুঃখজনক কথা হলো- ‘সাহরি পার্টি নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল তরুণ রমযানে চাঁদাবাজি করে। সারাদিন সারাবছর হারাম আর অশ্লীল-অশালীনতায় মত্ত থাকলেও সাহরির সময় টিভি চ্যানেলগুলোতে ধর্মব্যবসায়ী মাওলানাদের নিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ধুম পড়ে যায়। পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, হামদ-না, ইসলামী আলোচনাসহ নানা বিষয় এসব অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয়। তবে হারাম টিভিতে ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা অনুষ্ঠান করায় তাদের অজ্ঞতা-মূর্খতার কারণে সঠিক ইসলামী আলোচনা না হয়ে অধিকাংশ আলোচনায় হয় বিভ্রান্তিমূলক। রেডিও অনুষ্ঠানগুলোও ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে সূদের বিভ্রান্তির বেড়াজালে আটকা।
রোযার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সকালে ঘরের বাইরে বেরিয়েই সবাই রোযার অন্যরকম এক পরিবেশ উপলব্ধি করছেন। অন্যদিন সকালে রাস্তা-ঘাটে যে পরিমাণ লোকজনের যাতায়াত থাকে তার থেকে অনেক কম ছিলো রোযার প্রথম দিন। অফিস-আদালতের জন্য নতুন সময়সূচি দিয়েছে সরকার। তবে দুপুরের পর যানজট ভয়াবহ আকারে রূপ নেয়। অধিকাংশ হোটেল রেস্তোরা, ফাস্টফুড খাদ্যের দোকানে পর্দা টানিয়ে বেচাকেনা করছে। কিছু কিছু টিভিতে খবর পাঠিকা উপস্থাপিকারা মাথায় ঘোমটা দিয়ে স্ক্রীনে দৃশ্যমান হয় বলে অনেকে জানিয়েছে। অফিস-আদালতেও অনেক নারী মাথায় ঘোমটা দিয়ে শালীনতার সাথে থাকার চেষ্টা করছে। আর পুরুষদের মাথায় শোভা পাচ্ছিল টুপি। রাস্তার হকার ফুটপাথের দোকানদারদের বেচাকেনায় বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এসব দোকানে ইসলামী বই, টুপি, আতর, তসবীহ ইত্যাদি পসরা সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। এসব দেদারছে বেচাকেনাও হচ্ছে। ফলের দোকানসহ অন্যান্য দোকানে বিক্রি হচ্ছে ইফতার সামগ্রী। আর দুপুরের পর থেকেই হোটেল রেস্তোরায় বাহারী ইফতার সামগ্রীর পসরা বসেছে। বিশেষ করে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজার গরম হয়ে উঠে নানা প্রকার ইফতার সামগ্রী বেচা-বিক্রিতে।

No comments:

Post a Comment