Wednesday, July 3, 2013

মওদুদীবাদী জামাতের দিন ফুরিয়ে গেছে



এক সময় প্রচারণা ছিল- সারাদেশে মওদুদীবাদী জামাতের ব্যাপক প্রভাব আর দাপটের জামাত নাম শুনলে সবাই অজানা আতঙ্কে ভুগতো ভয়ে জামাতীদেরকে এড়িয়ে চলতো, কেউ-বা সমীহ করতো আর গত দুবছরে (২০১১ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের মে পর্যন্ত) দেশের বিভিন্ন স্থানে জামাত সন্ত্রাসী ঘটনার মধ্যে দিয়ে তা প্রমাণও করতে চেয়েছে কিন্তু গত দুবছরে (২০১১ সালের জুন থেকে ২০১৩ সালের মে পর্যন্ত) দেশের বিভিন্ন স্থানে জামাত যে সন্ত্রাসী সহিংসতা ঘটিয়েছে তা মাত্র গোটা কয়েক জেলায়, গোটা দেশে নয় আর তাও আবার জনগণের প্রত্যাখ্যান সরকারের সঠিক পদক্ষেপের কারণে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে; ব্যাপকতা লাভ করেনি জামাতীরা চেয়েছিল সিরিয়া, মিশর, লিবিয়ার মতো ওহাবীবাদী বিপ্লব ঘটাতে কিন্তু ওহাবীপন্থী মওদুদীবাদী জামাতীদেরকে দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করায় তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হয়েছে

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দৈত্যসম বিভীষিকা হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ওহাবীবাদী ধর্মাব্যবসায়ী দলটি মূলত নজিরবিহীন সহিংসতা ছড়িয়েই নিজেদের টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল আর কাজে পুঁজি করেছে কোমলমতি আমজনতার সরল দ্বীনি অনুভূতি কিন্তু তাদের সে আশায়  গুড়ে বালি
ধর্মীয় অনুভূতি পুঁজি করে চালানো অপপ্রচারে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেই মূলত সবসময় ফায়দা লুটতে চায় ওহাবীপন্থী মওদুদীবাদী জামাতীরা ফলে তাদের ধর্মান্ধতা ধর্মব্যবসার উন্মাদনায় কোমলমতি মানুষ যেমন মরছে, তেমনি পুড়ছে জনপদ, মসজিদ, মাদরাসা, পবিত্র কুরআন শরীফ, ইসলামী কিতাবাদি ইত্যাদি কে মুসলিম আর কে মুনাফিক তা নির্ধারণের স্বঘোষিত ঠিকাদারও হয়ে বসেছে ধর্মব্যবসায়ী জামাত ওহাবীপন্থী মওদুদীবাদে বিশ্বাসী না হলেই কাফির-মুনাফিক বলে গুমরাহীমূলক বক্তব্য দেয় তারা; যা পবিত্র দ্বীন ইসলাম সমর্থন করে না
দুর্ধর্ষ রাজাকার মাওলানা সাঈদীর বিচারের রায় ঘোষণার পর সহিংসতায় রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় ২১ জন রাজশাহী বিভাগের ছয় জেলায় ২৭ জন নিহত হয়েছে দুই বিভাগের ১১ জেলা মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ৪৮ খুলনা বিভাগের দুই জেলায় ১১ চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় ১১ জন নিহত হয়েছে এছাড়া ঢাকা বিভাগের দুটি জেলায় সিলেট বিভাগের এক জেলায় তিন জন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ওহাবীপন্থী মওদুদীবাদে জামাতের চলমান নাশকতার সিংহভাগই ঘটছে রাজশাহী রংপুর বিভাগে দেশের অন্যান্য তথা অধিকাংশ স্থানেই জামাতী প্রভাব দেখা যায়নি
জেলাওয়ারী হিসেবে সর্বাধিক ১৩ জন নিহত হয়েছে বগুড়ায় সাতক্ষীরায় নিহত হয়েছে দশ জন এছাড়া গাইবান্ধায় সাত, জয়পুরহাট রংপুরে ছয় জন করে এবং চট্টগ্রাম ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ জন করে নিহত হয়েছে সব মিলিয়ে এই সাত জেলায় নিহত হয়েছে ৫২ জন এছাড়া নোয়াখালীতে চার এবং মৌলভীবাজার, সিরাজগঞ্জ রাজশাহীতে তিন জন করে নিহত হয়েছে দুই জন করে নিহত হয়েছে দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঢাকা কক্সবাজারে এক জন করে নিহত হয়েছে নীলফামারী, নাটোর গাজীপুরে
তবে যে গুটিকয় জেলায় তারা নাশকতা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় তা কেন সম্ভব হলো? স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে কিভাবে হঠা বেপরোয়া হওয়ার সুযোগ পেলো ঘাতক-দালালরা? বাংলাদেশের স্বাধীনতার আইকন হয়ে ওঠাএকাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আর একবারশ্লোগান কেন ধ্বনিত হলো স্বাধীনতার শত্রু জামাতীদের কণ্ঠে? কিভাবে জাতীয় পতাকা পোড়ানোর মতো ধৃষ্টতা দেখাতে পারলো তারা? কিভাবে যুদ্ধাপরাধী ধর্মব্যবসায়ী লম্পট মাওলানা সাঈদীকে চাঁদের গায়ে দেখতে পাওয়ার গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুয়ের মধ্যে বিভ্রান্তিমূলক উন্মাদনা ছড়াতে সক্ষম হলো ধর্মব্যবসায়ী জামাতীরা? আর এমন পরিস্থিতিতে কি করলো গোয়েন্দারা? কেন এমন সহিংসতার আভাস আগেই পেলো না তারা? আর যদি পেয়েই থাকে তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হলো না কেন? যুদ্ধাপরাধী জামাতীরা কি এতোটাই শক্তিশালী! না, যুদ্ধাপরাধী জামাতীরা মোটেই শক্তিশালী নয় কিন্তু তারা মিথ্যাবাদী; আর দেশের মানুষ খুবই ইসলামপ্রিয় তাই ধর্মব্যবসায়ী জামাতীরা ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে কব্জা করে তবে সাধারণ মানুষ দৈনিক আল ইহসান, মাসিক আল বাইয়্যিনাত, সবুজবাংলা ব্লগ ইত্যাদি হক্বপন্থী মিডিয়ার কারণে সচেতন হওয়ায় সামান্য কিছু এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও সারা দেশে পারেনি আর তাদের প্রতি জনসমর্থনও তালানিতে রয়েছে তারা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ক্যাডার দিয়ে আচমকা কোথাও কোথাও নাশকতা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় বটে, তবে সার্বিক জনসমর্থন নেই যেমন-
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে ৩৯ আসনে অংশ নিয়ে মাত্র দুটি আসনে জয়ী হয় জামাত সব আসন মিলিয়ে সর্বমোট আট কোটি দশ লক্ষ ৮৭ হাজার ভোটের মধ্যে তারা পায় মাত্র ৩২ লক্ষ ৮৯ হাজার ৯৬৭ হাজার ভোট যা মোট ভোটের দশমিক ৭০ শতাংশ মাত্র চলতি সংসদে প্রতিনিধিত্বের হিসেবে ৩টি আসন নিয়ে তাদের উপরে আছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) আর জামাতের সমানসংখ্যক ২টি আসন আছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ২০০৮ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ কক্সবাজার আসনে জয়ী হয় জামাত এর বাইরে ঠাকুরগাঁও-, দিনাজপুর , নীলফামারী , রংপুর , গাইবান্ধা , , সিরাজগঞ্জ , ঝিনাইদহ , সাতক্ষীরা , আসনে তারা নিকটতম প্রতিদ্বন্দি¡তা গড়ে তোলে সব মিলিয়ে আট জেলায় সংখ্যা মাত্র ১৫ অর্থা জনমত পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে- জামাতীদের প্রতি জনসমর্থন তালানিতে রয়েছে
তবে পর্যন্ত যেসব স্থানে পুলিশ-জনতার উপর জামাত চড়াও হয়েছে সেসব এলাকাকে কড়া প্রশাসনিক গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা জরুরী একই সঙ্গে যেসব স্থানে এখনো সংঘর্ষ হয়নি কিন্তু ২০০৮ সালের জামাতের নিকটতম প্রতিদ্বন্দি¡তা ছিলো সেসব স্থানকেও নজরে আনা দরকার এগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালের জামাতের নিকটতম প্রতিদ্বন্দি¡তা থাকায় লালমনিরহাট , পাবনা , চুয়াডাঙ্গা , যশোর , বাগেরহাট , খুলনা , পিরোজপুর , শেরপুর সিলেট আসনকে সম্ভাব্য সংঘর্ষ আর সহিংসতার স্থান হিসেবে ধরে রাখা ভালো তাহলে তাদেরকে দমন করা যেমন সুবিধা, তেমনি হতাহতের ঘটনাও এড়ানো যাবে ইনশাআল্লাহ
এর বাইরে মানিকগঞ্জসহ আরো কিছু জেলায় অন্য দলের উপর ভর করে সহিংসতা ছড়ালেও সবাই এখন জামাতকে এড়িয়ে চলার নীতি নিয়েছে তাই স্বাধীনতাবিরোধী জামাতকে এতো ভয় পাওয়া কিছু নেই সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক জারিজুরি ফাঁস হচ্ছে জামাতীদের

No comments:

Post a Comment