কাঠের তৈরি
বিস্ময়কর যন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন মুসলিম তুর্কি প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। একটি পোতাশ্রয় (হারবার)
সাইট খননকার্যের সময় তারা ১২০০ বছরের পুরনো কাঠের যন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন, যাকে বলা যায়
বর্তমান সময়ের ট্যাবলেট কম্পিউটারের সবচাইতে প্রাচীন জেনারেশন। প্রত্নতত্ত্ববিদদের
ধারণা, তখনকার মুসলিম শাসিত দেশ ক্রিমিয়ার মুসলিম বণিকদের ব্যবহৃত জাহাজ ছিলো এগুলো।
ঈসায়ী নবম শতাব্দীর দিকে ক্রিমিয়া, তুরস্কসহ এ অঞ্চলগুলো মুসলিম শাসকদের অধীন ছিলো।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের
ইয়েনকাপ অঞ্চলে ৩৭টি জাহাজ খুঁজে পায় প্রত্নতত্ত্ববিদরা। প্রায় ১০ বছর ধরে ওই এলাকায়
কাজ করছেন তারা। এই ৩৭টি জাহাজের একটির মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয় মুসলিম বণিকদের ব্যবহৃত
এই ট্যাবলেটটি। বহু পুরনো ওই জাহাজের বিভিন্ন অংশে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা হচ্ছিল।
বন্দরটি সে সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে পরিচিত ছিল। ১ হাজার দুশো
বছরের পুরনো এই কাঠের ট্যাবলেট কম্পিউটারটি জাহাজের ক্যাপ্টেনের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাঠের তৈরি বাক্সটির উপরিভাগ সুন্দর নকশা আকা রয়েছে। আজকের যুগের ৭ ইঞ্চি ট্যাবলেটের
আকৃতির হলেও এটি বেশ মোটা। বাক্সটির মাঝে পাঁচটি চারকোণা প্যানেল রয়েছে যা মোম দ্বারা
আচ্ছাদিত। এর উপর নোটও লেখা হত বলে ধারণা করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। মোম দ্বারা আচ্ছাদিত
থাকায় এর উপরে লেখা শব্দগুলো এখনও দৃশ্যমান। প্যানেলে লুকনো অবস্থায় আদিম “অ্যাপ” পাওয়া
গেছে। একদম নীচের প্যানেলে এগুলো একটি সøাইডিং প্লেটের আড়ালে লুকনো অবস্থায় ছিল। ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের
সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক উফুক কোকাবাস বলেছে, ‘আপনি যখন স্লইডিং অংশটি
টানবেন তখন ক্ষুদ্র ওজন পরিমাপক বেরিয়ে আসবে।’ কম্পাস দেখারও ব্যবস্থা রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে
বাণিজ্যিক জাহাজ হওয়ায় মূল্যবান বস্তুর মান নির্ধারণের জন্য এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা
হতো। নোটবুকটি খুব সহজে বহন করা সম্ভব ছিল। প্রতিটি প্যানেলে চারটি করে গর্ত রয়েছে-
ধারণা করা হচ্ছে একসাথে প্যানেলগুলো বেঁধে রাখার জন্য এই গর্ত ব্যবহার করা হতো। আইপ্যাড
বিশিষ্ট জাহাজটি ঈসায়ী নবম শতাব্দীর বলে ধারণা করছে গবেষকেরা। ঈসায়ী নবম শতাব্দীতে
কোনো কারণে ওই জাহাজটি ডুবে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। ‘ব্ল্যাক সি’ (কৃষ্ণ সাগর) দিয়ে
বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মুসলিম শাসিত দেশ ক্রিমিয়া থেকে তুরস্কের কেসোনেসোসের
উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এই জাহাজটি।
No comments:
Post a Comment